“আক্রান্ত হলে পাল্টা হামলা চালাবে ইরান”-যুদ্ধ নিয়ে ফের বড় হুঁশিয়ারি খামেনির

ইসরায়েলের সঙ্গে ১২ দিনের ভয়াবহ যুদ্ধের পর প্রথমবারের মতো বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) টেলিভিশনে জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিলেন ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি। তাঁর ভাষণে স্পষ্ট হুঁশিয়ারি উঠে এসেছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি: ভবিষ্যতে ইরানে আর একবার হামলা চালানো হলে মধ্যপ্রাচ্যে অবস্থিত মার্কিন সামরিক ঘাঁটিতে পাল্টা আঘাত হানা হবে। খামেনির এই কড়া বার্তা পারমাণবিক উত্তেজনা এবং আঞ্চলিক সংঘাতকে নতুন মাত্রা দিল।

৮৬ বছর বয়সী খামেনি দৃঢ় কণ্ঠে বলেন, “ইরানের উপর হামলার মূল্য হবে চড়া।” তিনি উল্লেখ করেন, ইসরায়েল ও ইরানের চলমান সংঘাতে যুক্তরাষ্ট্র যোগ দেওয়ার পর ইতিমধ্যেই কাতারস্থ মার্কিন ঘাঁটিতে হামলা চালানো হয়েছে। এই ঘাঁটি মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম বৃহৎ সামরিক অবকাঠামো।

“যুক্তরাষ্ট্রের মুখে থাপ্পড় মেরেছে ইরান”:

খামেনি আরও বলেন, “ইরান যুক্তরাষ্ট্রের মুখে থাপ্পড় মেরেছে। ইরান মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ঘাঁটিতে হামলা চালিয়েছে।” এই মন্তব্য মধ্যপ্রাচ্যে ইরানের সামরিক সক্ষমতা এবং যুক্তরাষ্ট্রের উপর পাল্টা আঘাত হানার ইচ্ছাকে তুলে ধরেছে।

তিনি সরাসরি হুমকি দিয়ে বলেন, “যদি ভবিষ্যতে কোনো হামলা হয় তাহলে এই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হবে।” খামেনি যোগ করেন, “বিষয় হলো, এই অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ঘাঁটিতে ইরানের অ্যাক্সেস রয়েছে। যখন প্রয়োজন হবে ইরান তখনই এগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারবে। এটি ছোট কোনো ঘটনা নয়। এটি বড় ঘটনা।” তাঁর এই বক্তব্য থেকে স্পষ্ট, ইরান তাদের আঞ্চলিক উপস্থিতি এবং সামরিক শক্তিকে যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে একটি শক্তিশালী প্রতিরোধক হিসাবে ব্যবহার করতে চাইছে।

ট্রাম্পের ‘অবশ্যই’ এবং পাল্টা হুমকির চক্র:

উল্লেখ্য, গত সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্র ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালিয়ে দাবি করে যে এর মাধ্যমে ইরানের পারমাণবিক কার্যক্রম ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে। এ প্রসঙ্গে গতকাল এক সাংবাদিক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে প্রশ্ন করেন, ইরান যদি আবারও পারমাণবিক কার্যক্রম শুরু করে, তাহলে যুক্তরাষ্ট্র পুনরায় হামলা চালাবে কিনা। জবাবে ট্রাম্পের এক শব্দে উত্তর ছিল, ‘অবশ্যই’। ট্রাম্পের এই মন্তব্যের পরই খামেনির এই বিস্ফোরক হুঁশিয়ারি আসায়, দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা আরও কয়েকগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে।

ইরান এবং যুক্তরাষ্ট্রের এই পাল্টাপাল্টি হুমকি মধ্যপ্রাচ্যের পরিস্থিতিকে অত্যন্ত অস্থিতিশীল করে তুলেছে। রয়টার্সের প্রতিবেদন অনুযায়ী, এই সংঘাতের গভীরতা এবং আন্তর্জাতিক প্রভাব নিয়ে বিশ্বজুড়ে উদ্বেগ বাড়ছে।