“প্যাকেট করে পাকিস্তানে পাঠিয়ে দেওয়া উচিত”-মুখ্যমন্ত্রী মমতা কে নিশানা শুভেন্দুর

পহেলগাঁও জঙ্গি হামলার প্রত্যাঘাত অভিযানকে কেন্দ্র করে পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় এক তীব্র রাজনৈতিক বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভারতীয় সেনাবাহিনীকে ধন্যবাদ জানিয়ে প্রস্তাব আনলেও, ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর নাম উল্লেখ না করে ‘অপারেশন সন্ত্রাসবাদ’ বলে অভিহিত করায় বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী তাকে তীব্র নিশানা করেছেন। শুভেন্দুর দাবি, মুখ্যমন্ত্রী যেভাবে পাকিস্তানের প্রশংসা করেছেন, শাহবাজ শরিফও নিজ দেশের এত প্রশংসা করেন না।

এদিন বিধানসভার বাদল অধিবেশনে প্রস্তাব পেশ করেন মুখ্যমন্ত্রী। ভারতীয় সেনাদের বীরত্বের প্রশংসা করলেও তিনি ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর নাম উল্লেখ করেননি, যা বিতর্কের জন্ম দেয়। মুখ্যমন্ত্রী পাকিস্তানকে প্রশংসায় ভরিয়ে দিয়ে বলেন, “ভারতীয় নাগরিক হিসেবে পাকিস্তানকে প্রশংসায় ভরিয়ে দিয়েছেন। বলেছেন রাশিয়াও ভাইস চেয়ারম্যান, পাকিস্তানও ভাইস চেয়ারম্যান। আইএমএফ ও এডিবির ঋণ নিয়ে যা প্রশংসা করেছেন, এত প্রশংসা শাহবাজ শরিফকে তাঁর দেশের লোকও করেছে বলে জানা নেই।”

একইসঙ্গে, পহেলগাঁও কাণ্ড নিয়ে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে প্রশ্ন তোলেন মমতা। বিএসএফের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন এবং কেন জঙ্গিদের এখনও ধরা গেল না, তা নিয়েও মন্তব্য করেন।

মমতার ‘অপারেশন সিঁদুর’ নাম না নেওয়া প্রসঙ্গে শুভেন্দু অধিকারী তীব্র প্রতিক্রিয়া জানান। তিনি বলেন, “স্পিকারের এ চোখ বন্ধ। এত অসংসদীয় কথা বলেছেন স্পিকার বাদ দিতে বাধ্য হয়েছেন। এই স্পিকারের ৮ মাস পর চাকরি থাকবে কিনা দেখে নিন।”

শুভেন্দু আরও আক্রমণাত্মক হয়ে বলেন, “আমার দুটো পয়েন্টে ওরা স্বীকার করেছে, টার্গেট কিলিংকে ওরা লিখেছে এলোপাথাড়ি গুলি, ওদের স্বীকার করতে হয়েছে ধর্ম দেখে গুলি… মোদীজি, অমিত শাহকে ছোট করবেন? ওনাকে প্যাকেট করে পাকিস্তানে পাঠিয়ে দেওয়া উচিত।”

শুভেন্দু প্রশ্ন তোলেন, “আপনার প্রস্তাবে সিঁদুর নামে আপত্তি কেন? কেন নাম নেই?” তৃণমূল বিধায়ক শিউলি সাহা এর উত্তরে বলেন, “সিঁদুর কি সবাই পরে?” জবাবে শুভেন্দু বলেন, “হ্যাঁ, সিঁদুর পরে না মাকুরা। ওরা চিনকে সমর্থন করে। যারা ধর্ম মানে না, তারা পরে না।” পাশাপাশি শুভেন্দু হুঁশিয়ারি দেন, “যারা এখানে থেকে পাকিস্তানের কথা বলে, লড়াই তাদের বিরুদ্ধে। যারা এখানে জঙ্গি সংগঠন আনাসুরুল্লা বাংলাকে সমর্থন করে, লড়াইটা তাদের বিরুদ্ধে।”

বিধানসভায় এই তীব্র বাগযুদ্ধ পহেলগাঁও হামলার মতো একটি সংবেদনশীল ইস্যুতে রাজনৈতিক মেরুকরণকে আরও স্পষ্ট করে তুলেছে। মুখ্যমন্ত্রী এবং বিরোধী দলনেতার এই মন্তব্য আগামী দিনে রাজ্য রাজনীতিতে কী প্রভাব ফেলে, সেটাই এখন দেখার বিষয়।