১৭ বছর তপস্যা! কাশ্মীরের বুকে নজির গড়ে তৈরি করেছেন চেনাব ব্রিজ, কীভাবে রেলসেতু গড়লেন মাধবী লতা?

গত শুক্রবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী জম্মু ও কাশ্মীরে ভারতের উচ্চতম রেলসেতু, চেনাব ব্রিজ, উদ্বোধন করেছেন। এই নজিরবিহীন স্থাপত্যের পেছনের অন্যতম প্রধান কারিগর হলেন ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ সায়েন্সের অধ্যাপক জি মাধবী লতা। শুধু চেনাব সেতুই নয়, ২৭১ কিলোমিটার দীর্ঘ উধমপুর-শ্রীনগর-বারামুল্লা রেলওয়ে লিঙ্কেরও তিনি অন্যতম স্থপতি। এই বিশাল প্রকল্পের জন্য নিজের জীবনের ১৭টি বছর উৎসর্গ করেছেন মাধবী লতা, যা তার কর্মজীবনের এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।

অধ্যাপনার পাশাপাশি মাধবী লতা চেনাব প্রকল্পের ভূ-প্রযুক্তিগত পরামর্শদাতা হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। এই দুর্গম উপত্যকার মধ্য দিয়ে কীভাবে সেতুটি যাবে, তার বিস্তারিত পরিকল্পনা এবং নীল নকশা তৈরি করেছিলেন তিনি। তার তৈরি এই নকশার ওপর ভিত্তি করেই জম্মু ও কাশ্মীরের রেল যোগাযোগ ব্যবস্থায় এক নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হয়েছে।

১৯৯২ সালে জওহরলাল নেহরু টেকনোলজিক্যাল ইউনিভার্সিটি থেকে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে বি-টেক সম্পন্ন করেন মাধবী লতা, যেখানে তিনি প্রথম শ্রেণিতে উত্তীর্ণ হন। এরপর এনআইটি থেকে স্নাতকোত্তর এবং আইআইটি-মাদ্রাজ থেকে গবেষণা সম্পন্ন করেন। তার এই দীর্ঘ শিক্ষাজীবন এবং কঠোর পরিশ্রমই তাকে চেনাব সেতুর মতো একটি বৃহৎ প্রকল্পের অন্যতম কান্ডারী হতে সাহায্য করেছে।

দীর্ঘ দুই দশক ধরে এই রেলসেতুর নির্মাণ কাজ চলেছে। চেনাব নদীর ওপর নির্মিত ৩৫৯ মিটার উচ্চতার এই সেতুটি আইফেল টাওয়ারের থেকেও উঁচু, যা এটিকে বিশ্বের সর্বোচ্চ রেলসেতুর মর্যাদা দিয়েছে। এই সেতু উধমপুর, শ্রীনগর এবং বারামুল্লাকে সংযুক্ত করে উপত্যকার যোগাযোগ ব্যবস্থায় এক বিপ্লব নিয়ে এসেছে। জি মাধবী লতার মতো নিবেদিতপ্রাণ বিশেষজ্ঞদের অক্লান্ত পরিশ্রমই এই ঐতিহাসিক সাফল্যের নেপথ্যে রয়েছে।