এক রাতেই ৫০০ ড্রোন-মিসাইল হামলা রাশিয়ার, মুহূর্তেই তছনছ হয়েগেলো ইউক্রেন

গত তিন বছর ধরে চলা রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাত রবিবার রাতে এক নতুন ও ভয়াবহ মোড় নিল। এক রাতের মধ্যে ইউক্রেনের ওপর নেমে এল প্রায় ৫০০ ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্রের এক নজিরবিহীন আক্রমণ। ইউক্রেনীয় বিমান বাহিনীর তথ্য অনুযায়ী, এটিই ছিল যুদ্ধের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় বিমান হামলা। ৪৭৯টি ড্রোন এবং ২০টি ক্ষেপণাস্ত্রের এই সম্মিলিত আঘাত ইউক্রেনের মধ্য ও পশ্চিমাঞ্চলকে লন্ডভন্ড করে দিয়েছে।

এই হামলার পেছনের কারণ হিসেবে ধরা হচ্ছে, কয়েক দিন আগে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির দেশের রুশ বিমান ঘাঁটিতে চালানো হামলা। তারই জবাবে রাশিয়া এই মারাত্মক পাল্টা আক্রমণ চালিয়েছে বলে মনে করছেন আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞরা।

প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি জানিয়েছেন, এই হামলার ফলে পূর্বাঞ্চল এবং উত্তর-পূর্ব ফ্রন্টের পরিস্থিতি অত্যন্ত খারাপ হয়ে পড়েছে। যদিও ক্ষতির বিস্তারিত তথ্য তিনি দেননি, তবে হামলার ব্যাপকতা থেকে ক্ষতির পরিমাণ অনুমান করা কঠিন নয়। এই ভয়াবহ পরিস্থিতিতে ইউক্রেনকে ঘুরে দাঁড়ানোর জন্য পশ্চিমা দেশগুলোর সাহায্য অপরিহার্য বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। বিশেষ করে, তাদের বিমান বাহিনীকে আরও উন্নত করা জরুরি। অনেকে মনে করছেন, মার্কিন নীতির অনিশ্চয়তা ইউক্রেনকে আরও কোণঠাসা করে তুলেছে।

অন্যদিকে, রাশিয়ার দাবি, তাদের ভূখণ্ডের সাতটি জায়গায় ৪৯টি ইউক্রেনীয় ড্রোনকে ধ্বংস করা হয়েছে। এর মধ্যে ভোরোনেজ অঞ্চলে ২৫টি ড্রোন ধ্বংস করা হয়েছে, যার ফলে একটি পাইপলাইন ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে আগুন ধরে যায়। ইউক্রেনের জেনারেল স্টাফ অবশ্য দাবি করেছেন, তাদের বিশেষ বাহিনী রাশিয়ার নভগোরোদ অঞ্চলের সাভাসলেকা বিমানবন্দরে দুটি রুশ যুদ্ধবিমানকে লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে। তবে কীভাবে সেই হামলা চালানো হয়েছিল, তা এখনো স্পষ্ট নয়।

উল্লেখ্য, ইউক্রেনের রুশ বিমান ঘাঁটিতে হামলার পরই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেছিলেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। এই ফোনালাপের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ইউক্রেনে এই বিশাল ড্রোন হামলা চালানো হয়। এই হামলায় পাঁচ জন সাধারণ নাগরিকের প্রাণহানি হয়েছে, যা যুদ্ধের নিষ্ঠুর বাস্তবতাকে আরও একবার তুলে ধরেছে।

এই নজিরবিহীন হামলা যুদ্ধের তীব্রতাকে এক নতুন উচ্চতায় নিয়ে গেছে। যখন কূটনৈতিক সমাধানের পথ রুদ্ধ, তখন এমন ভয়াবহ আক্রমণ পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলছে। বিশ্ব এখন ইউক্রেনের এই ভয়াবহ পরিস্থিতি এবং এর পরবর্তী পরিণতির দিকে উদ্বেগের সাথে তাকিয়ে আছে।