বাংলা দখল নিয়ে জোরদার চলছে রাজনৈতিক লড়াই! BJP-TMC তরজা তুঙ্গে

আগামী ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ তামিলনাড়ু ও বাংলা দখলের জোরালো হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। ইতিমধ্যে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং অমিত শাহ স্বয়ং বাংলায় এসে কার্যত নির্বাচনী প্রচারের সুর বেঁধে দিয়ে গেছেন। গত কয়েক মাস ধরে বিজেপি শিবির দুর্নীতি, সামাজিক মেরুকরণসহ নানা ইস্যুতে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসকে লাগাতার আক্রমণ শানিয়ে চলেছে।

বিশেষ করে মুর্শিদাবাদের সাম্প্রতিক ঘটনাকে সামনে রেখে রাজনৈতিক লড়াই আরও তীব্র হয়েছে। অন্যদিকে, শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসও বঞ্চনা ইস্যুতে বিজেপির বিরুদ্ধে লাগাতার আক্রমণ শানাচ্ছে। এরই মধ্যে দেশজুড়ে ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর মাধ্যমে প্রবল জাতীয়তাবাদের হাওয়া তুলেছে বিজেপি, যা অমিত শাহের এই চ্যালেঞ্জকে বাংলায় বিজেপি নেতা-কর্মীদের মনোবল বাড়াতে সাহায্য করেছে। মাদুরাইয়ে দলীয় কর্মী সম্মেলনে অংশ নিয়ে অমিত শাহ বলেন, “তামিলনাড়ুর মানুষ দুর্নীতিগ্রস্ত ডিএমকে সরকারকে উৎখাত করার জন্য অপেক্ষা করছে। ২০২৬ সালে তামিলনাড়ু এবং বাংলায় বিজেপির শাসন নিশ্চিত।” উল্লেখ্য, এর আগেও বঙ্গ সফরে আলিপুরদুয়ারের সভা থেকে মোদিও তৃণমূল সরকারকে উৎখাতের ডাক দিয়েছিলেন।

তৃণমূলের পাল্টা আক্রমণ: ‘অমিত শাহ দিবাস্বপ্ন দেখেন’
অমিত শাহের এই মন্তব্যকে ‘দিবাস্বপ্ন’ বলে উল্লেখ করে তীব্র পাল্টা আক্রমণ শানিয়েছে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস। তৃণমূল সাংসদ ডাঃ কাকলি ঘোষ দস্তিদার বলেন, “অমিত শাহ দিবাস্বপ্ন দেখার অভ্যাসে ভোগেন। এর আগেও তিনি এমন অনেক দাবি করেছেন, বিশেষ করে বাংলা নিয়ে, কিন্তু সবই ফাঁকা প্রমাণিত হয়েছে। ২০২১ সালের নির্বাচনে পরাজয়ের পর, প্রতিহিংসা চরিতার্থ করতে বিজেপি-নেতৃত্বাধীন কেন্দ্র সরকার প্রায় ১.৭৫ লক্ষ কোটি টাকা বাংলার প্রাপ্য অধিকার থেকে বঞ্চিত করেছে — বিশেষ করে বাংলার মা-বোনদের থেকে। এই মা-বোনরাই ২০২৬ সালের বাংলার নির্বাচনে অমিত শাহ এবং তাঁর দলকে আবার শিক্ষা দেবে।”

অন্যদিকে, তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ কটাক্ষ করে বলেন, “এগুলো দিবাস্বপ্ন। এই কথাগুলো উনি ২০২১ সাল থেকে বলে যাচ্ছেন। উনি একবার করে বিজেপি কর্মীদের এরকম প্রতিশ্রুতি দিয়ে যান। তারপরে গোহারা হারেন। তামিলনাড়ুতে শুধু এটুকু বললেন কেন? জিতবেন বলে দাবি করেও ২০২১ সালে পশ্চিমবঙ্গে গোহারা হেরেছিলেন, সে কথাও তো বলা উচিত ছিল। ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনেও যে এখানে গোহারা হেরেছেন, সে কথাও ওখানে গিয়ে বলা উচিত ছিল।”

বিজেপি শিবির অবশ্য দাবি করছে, তারা মানুষের কাছে নির্দিষ্ট ইস্যু নিয়েই প্রচারে যাচ্ছে এবং বাংলা ও তামিলনাড়ুতে পরিবর্তন আসবেই।