“জমি বেচে দিয়েছিলেন ২ লাখ, তবুও লোভ কমেনি”-পণের দাবিতে স্ত্রীকে কুপিয়ে খুন করলো স্বামী

পণের দাবিতে স্ত্রীকে দিনের পর দিন অত্যাচার চালানোর পর অবশেষে শাবল দিয়ে কুপিয়ে খুন করার অভিযোগ উঠেছে স্বামীর বিরুদ্ধে। নদীয়ার ধানতলা থানা এলাকায় এই চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে। ঘটনার পর থেকেই অভিযুক্ত স্বামী শরিফুল মণ্ডল পলাতক। খবর পেয়ে ধানতলা থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে এবং অভিযুক্তের খোঁজে তল্লাশি শুরু করেছে।
নিহত গৃহবধূর নাম মুসলিমা (৩৫), যাঁর বাড়ি উত্তর চব্বিশ পরগনার বাগদা থানার উত্তর পাঁচপোতা গ্রামে। প্রায় ১৬ বছর আগে নদীয়ার ধানতলা থানার পানিখালি হুদা গ্রামের শরিফুল মণ্ডলের সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়। এই দম্পতির দুটি সন্তানও রয়েছে। মুসলিমার পরিবারের অভিযোগ, বিয়ের পর থেকেই শরিফুল বাবার বাড়ি থেকে টাকা আনার জন্য মুসলিমার উপর লাগাতার অত্যাচার চালাত।
জানা গেছে, জামাইয়ের চাহিদা মেটাতে বাধ্য হয়ে মুসলিমার বাবার বাড়ির লোকজন একসময় জমি বিক্রি করে ২ লক্ষ টাকা শরিফুলের হাতে তুলে দিয়েছিলেন। কিন্তু তাতেও শরিফুলের অত্যাচার থামেনি। অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে মুসলিমা বহুবার বাপের বাড়ি পালিয়ে গিয়েছিলেন। প্রতিবারই শরিফুল শ্বশুরবাড়িতে গিয়ে হাতে-পায়ে ধরে মুসলিমাকে নিজের বাড়িতে ফিরিয়ে আনত।
তবে রবিবার অতীতের সমস্ত অত্যাচারকে ছাপিয়ে যায় এক চরম নৃশংসতা। দুপুর ১টা নাগাদ শরিফুল নিজের শোবার ঘরের দরজা ভেতর থেকে বন্ধ করে শাবল দিয়ে স্ত্রীকে নির্মমভাবে কুপিয়ে খুন করে।
এরপর মুসলিমার ছেলে ওই ঘরে গিয়ে মেঝেতে মাকে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে। স্থানীয়রাই খবর দেন ধানতলা থানায়। পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে মুসলিমার মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায়। ঘটনার পর থেকেই শরিফুল পলাতক রয়েছে এবং তদন্তকারীরা তার সন্ধানে অভিযান চালাচ্ছেন।
এদিকে, মুসলিমার মৃত্যুর খবর পেয়ে তাঁর বাপের বাড়ির এলাকা থেকে বহু আত্মীয়-স্বজন শরিফুলের বাড়ির সামনে এসে ভিড় করেন। এই পাশবিক ঘটনায় স্থানীয় বাসিন্দারাও ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন। এই ঘটনা আবারও পণের লোভে নারী নির্যাতনের এক ভয়াবহ চিত্র তুলে ধরল।