উৎসবের আনন্দ এক লহমায় ঢেকে গেল মৃত্যুশোকে! ‘সকলের নিরাপত্তা ও সুস্থতা আমাদের কাছে সবার আগে’ শোকপ্রকাশ অনুষ্কার

রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু (RCB)-এর ঐতিহাসিক বিজয়োৎসব গতকাল, ৪ জুন বেঙ্গালুরুর চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামের বাইরে এক ভয়াবহ পদপিষ্টের ঘটনায় পরিণত হলো গভীর বিষাদে। উৎসবের আনন্দ এক লহমায় ঢেকে গেল মৃত্যু আর হাহাকারে। এই মর্মান্তিক ঘটনায় অন্তত ১১ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং বহু মানুষ আহত হয়েছেন।
ইতিমধ্যেই এই ঘটনায় শোকপ্রকাশ করেছেন আরসিবি’র তারকা ক্রিকেটার বিরাট কোহলি। এবার তাঁর স্ত্রী, অভিনেত্রী অনুষ্কা শর্মাও সামাজিক মাধ্যমে নিজের ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে এই ঘটনা নিয়ে মুখ খুলেছেন। অনুষ্কা লিখেছেন, “বুধবার বিকেলে চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামে প্রচুর দর্শকের জমায়েতের মধ্যে ঘটে যাওয়া ঘটনায় আমি গভীরভাবে শোকাহত। এই ঘটনা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। সকলের নিরাপত্তা ও সুস্থতা আমাদের কাছে সবার আগে গুরুত্বপূর্ণ।”
আরসিবি ও ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের পদক্ষেপ
এই ঘটনার প্রায় ৬ ঘণ্টা পর রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু কর্তৃপক্ষ একটি বিবৃতি প্রকাশ করেছে। কর্ণাটক ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনও নিহত ও আহতদের জন্য ক্ষতিপূরণ ঘোষণা করেছে।
জানা গেছে, ঘটনার দিন বিকেলে বিরাট কোহলিরা প্রথমে বিধানসভায় যান। সেখান থেকে হুডখোলা বাসে চেপে চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামে যাওয়ার কথা ছিল দলের। কিন্তু বেঙ্গালুরু পুলিশ যানজটের আশঙ্কায় দুপুরেই প্যারেডের অনুমতি বাতিল করে দেয়।
মুখ্যমন্ত্রীর বিতর্কিত মন্তব্য: “এই ধরনের ঘটনা নতুন নয়”
অন্যদিকে, এই গোটা ঘটনার দায় ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের ঘাড়ে চাপিয়ে কর্ণাটকের মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়া এক বিতর্কিত মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেন, “এই ধরনের ঘটনা নতুন নয়। দেশে এই ধরনের একাধিক ঘটনা ঘটেছে। এমনকি এর থেকে ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। যদিও সে সব উদাহরণ টেনে সাফাই দিচ্ছি না। যা হওয়ার হয়ে গিয়েছে। মহাকুম্ভে পদপিষ্ট হয়ে প্রায় ৫০-৬০ জনের মৃত্যু হয়েছে।” মুখ্যমন্ত্রীর এই মন্তব্য জনমনে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে এবং অনেকেই এটিকে দায় এড়ানোর কৌশল হিসেবে দেখছেন।
চিন্নাস্বামীর এই ঘটনা কেবল একটি দুর্ঘটনার চেয়েও বেশি কিছু। এটি জনসমাগম নিয়ন্ত্রণ, নিরাপত্তা ব্যবস্থাপনা এবং দুর্যোগের সময় কর্তৃপক্ষের দ্রুত প্রতিক্রিয়ার ক্ষমতা নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন তুলেছে। উৎসবের আড়ালে লুকিয়ে থাকা এই মর্মান্তিক ট্র্যাজেডি বেঙ্গালুরুর ইতিহাসে এক কালো অধ্যায় হিসেবে চিহ্নিত হবে।