গ্রামের মহিলা প্রধানকে গণধর্ষণে হুমকি TMC কর্মীদের! ঘটনায় তোলপাড় বীরভূম

নিজ দলেরই কর্মীদের বিরুদ্ধে গণধর্ষণ, নগ্ন করে ঘোরানো এবং মুখে অ্যাসিড হামলার মতো গুরুতর হুমকির অভিযোগ তুলেছেন বীরভূমের পাইকর থানার অন্তর্গত এক তৃণমূল মহিলা পঞ্চায়েত প্রধান। ঠিকাদারির কাজ না দেওয়ার জেরেই তাকে এই ধরনের হুমকি দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ তার। শুক্রবার এই ঘটনায় অভিযুক্ত কর্মীদের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন ওই প্রধান।

মহিলা প্রধানের অভিযোগ, গত ২১ মে তিনি মুরারই-২ ব্লক অফিসে গিয়েছিলেন। সেখান থেকে পাইকর-২ গ্রাম পঞ্চায়েতে ফেরার সময় কয়েকজন তাকে গণধর্ষণের হুমকি দেয়। তিনি দাবি করেছেন, অভিযুক্তরা প্রত্যেকেই তৃণমূল কর্মী-সমর্থক এবং পেশায় ঠিকাদার। গ্রামে রাস্তা নির্মাণ, পানীয় জল সরবরাহসহ বিভিন্ন উন্নয়নমূলক প্রকল্পের কাজ এতদিন তারাই করতেন। কিন্তু সম্প্রতি ওইসব কাজে নানা অনিয়ম ধরা পড়ায় তিনি ঠিকাদারদের কাজ দেওয়া বন্ধ করে দেন।

প্রধানের দাবি, ঠিকাদারির কাজ আটকে দেওয়ার কারণেই অভিযুক্তরা ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। গণধর্ষণের হুমকির পাশাপাশি তাকে এলাকায় নগ্ন করে ঘোরানো, এমনকি অপহরণ এবং মুখে অ্যাসিড মারার হুঁশিয়ারিও দেওয়া হয়েছে বলে তিনি অভিযোগ করেছেন। এই ঘটনায় তিনি পাইকর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।

যদিও অভিযুক্ত ঠিকাদাররা প্রধানের সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তাদের পাল্টা দাবি, “প্রধান সম্পূর্ণ মিথ্যা কথা বলছেন। তিনি খেয়ালখুশি মতো টেন্ডার ডাকেন এবং কোনো নিয়মকানুন মানেন না। তাই আমরা কলকাতা হাইকোর্টে তার বিরুদ্ধে মামলা করেছিলাম এবং আদালত আমাদের পক্ষে রায় দিয়েছে। এটাই ওঁর রাগ। প্রধান হাইকোর্টের নির্দেশও মানছেন না। এখন আমাদের হেনস্থা করার জন্য মিথ্যা অভিযোগ দায়ের করেছেন।”

ঘটনার বিষয়ে বীরভূমের পুলিশ সুপার আমনদীপ বলেন, “অভিযোগ দায়ের হয়েছে। আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” এই ঘটনায় এখনো পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি। জেলা তৃণমূলের চেয়ারম্যান আশিস বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, “অভিযোগ সত্য প্রমাণিত হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে বীরভূমের রাজনৈতিক মহলে ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে।