অবশেষে ১৬ কোটি টাকার সেই ইঞ্জেকশন পাচ্ছে অস্মিকা, প্রথম কিস্তিতে জমা হবে ৯ কোটি

সোশ্যাল মিডিয়ার দৌলতে নদিয়ার রানাঘাটের বিরল রোগে আক্রান্ত এক বছরের শিশুকন্যা অস্মিকা দাসের কথা এখন অনেকেরই জানা। স্পাইনাল মাস্কুলার অ্যাট্রফি টাইপ-১ (SMA Type-1) নামক এই মারণ রোগে আক্রান্ত অস্মিকাকে বাঁচাতে আমজনতা থেকে সেলিব্রিটি, অনেকেই এগিয়ে এসেছিলেন। অবশেষে সেই কাঙ্ক্ষিত ১৬ কোটি টাকা দামের ইঞ্জেকশন পেতে চলেছে ছোট্ট অস্মিকা।

অস্মিকার শরীরে বাসা বেঁধেছে ভয়ঙ্কর বিরল রোগ স্পাইনাল মাস্কুলার অ্যাট্রফি টাইপ-১। এই রোগে আক্রান্ত শিশুদের মাংসপেশীগুলো ধীরে ধীরে নষ্ট হয়ে যায়। দুই বছর বয়স হওয়ার আগেই একটি নির্দিষ্ট ইঞ্জেকশন দিতে হয়, যার দাম প্রায় ১৬ কোটি টাকা। এমন বিপুল অর্থ জোগাড় করা সাধারণ নিম্ন-মধ্যবিত্ত পরিবারের পক্ষে অসম্ভব হয়ে ওঠে। তাই ক্রাউড ফান্ডিংই ছিল তাদের একমাত্র ভরসা।

অস্মিকার বাবা শুভঙ্কর দাস একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কাজ করতেন, কিন্তু মেয়ের অসুস্থতার কারণে ছোটাছুটি করতে গিয়ে সেই চাকরিও হারান। ফেসবুক এবং হোয়াটসঅ্যাপে অস্মিকার অসুস্থতার খবর ছড়িয়ে পড়তেই বহু সমাজসেবী এবং শিল্পী এই পরিবারের পাশে দাঁড়ান। অস্মিকার চিকিৎসার জন্য মোট প্রায় ১৭ কোটি টাকা প্রয়োজন।

জানা গেছে, এই বিরল ইঞ্জেকশনটি পেতে হলে প্রথম কিস্তিতে ৯ কোটি টাকা জমা দিতে হবে। দীর্ঘদিন ধরে সেই টাকা জমানোর কাজ চলছিল। সোমবার ঠাকুরনগর ঠাকুরবাড়িতে ‘মাতৃ সেনা চ্যারিটেবল ট্রাস্ট’-এর পক্ষ থেকে অস্মিকার পরিবারের হাতে ৬০ লক্ষ টাকার একটি চেক তুলে দেওয়া হয়। এই চেক তুলে দেন মাতৃ সেনার সভানেত্রী সোমা ঠাকুর এবং অল ইন্ডিয়া মতুয়া মহাসংঘের সংঘাধিপতি তথা কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী শান্তনু ঠাকুর।

অস্মিকার বাবা শুভঙ্কর দাস জানিয়েছেন, এই ৬০ লক্ষ টাকা হাতে আসায় তাঁদের প্রথম কিস্তির ৯ কোটি টাকা সম্পূর্ণ হল। তাঁর আশা, সমস্ত কাগজপত্র জমা দেওয়ার কাজ শেষ করে আগামী ১৫ দিনের মধ্যে তাঁর মেয়ে ইঞ্জেকশন পেয়ে যাবে। যারা যারা অস্মিকার জন্য সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন, তাদের সকলকে তিনি ধন্যবাদ জানিয়েছেন।

উল্লেখ্য, বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী থেকে শুরু করে সঙ্গীতশিল্পী কৈলাশ খের, ইমন চক্রবর্তী, শ্রাবন্তী চট্টোপাধ্যায়, সায়ক চক্রবর্তী সহ আরও অনেকে অস্মিকার জন্য সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলেন। অসংখ্য মানুষের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় আজ রানাঘাটের এই ছোট্ট শিশুর জীবনে নতুন আশার আলো দেখা দিয়েছে।