“হাফিজ সইদকে দিয়ে দিন, সব অশান্তি মিটে যাবে”-পাকিস্তানকে প্রস্তাব ভারতীয় কূটনীতিকের

২৬/১১ মুম্বাই হামলার মূলচক্রী হাফিজ সইদ, সাজিদ মীর এবং জাকিউর রহমানকে ভারতের হাতে তুলে দেওয়ার জন্য পাকিস্তানের উপর কূটনৈতিক চাপ বাড়িয়েছে ভারত। ইজরায়েলে নিযুক্ত ভারতীয় রাষ্ট্রদূত জেপি সিং এই কড়া বার্তা দিয়েছেন। তিনি ইঙ্গিত দিয়েছেন যে, এই পদক্ষেপ নেওয়া হলে দুই দেশের মধ্যে অমীমাংসিত বিষয়গুলির সমাধান হতে পারে।
সোমবার ইজরায়েলি টিভি চ্যানেল i24-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে রাষ্ট্রদূত সিং ২৬/১১ মুম্বাই হামলার পরিকল্পনাকারী তাহাউর হুসেন রানাকে আমেরিকা যেভাবে ভারতের কাছে প্রত্যর্পণ করেছে, তার সঙ্গে হাফিজ সইদের প্রত্যর্পণের বিষয়টিকে তুলনা করেন। সিং বলেন, “জঙ্গিরা ধর্মের ভিত্তিতে মানুষ খুন করেছে। মারার আগে তাদের ধর্মীয় পরিচয় জানতে চেয়েছিল। ২৬টি নিরীহ প্রাণ চলে গেছে।”
তিনি আরও বলেন, সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ভারতের অবিচল অঙ্গীকার রয়েছে। “ভারত জঙ্গি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়েছে। জঙ্গিদের বিরুদ্ধে লড়াই চলবে… অপারেশন সিঁদুর এখনও শেষ হয়নি; এটি কেবল স্থগিত রয়েছে।” রাষ্ট্রদূত পুনর্ব্যক্ত করেন যে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সন্ত্রাসবাদের প্রতি “জিরো টলারেন্স” নীতি রয়েছে।
এই নতুন কূটনৈতিক চাপ এমন এক সময়ে এলো, যখন সম্প্রতি সীমান্ত পেরিয়ে উত্তেজনা বেড়েছে। গত ২২ এপ্রিল কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ের বৈসরন উপত্যকায় জঙ্গি হামলায় ২৫ জন পর্যটক এবং একজন কাশ্মীরির মৃত্যু হয়, যা সারা দেশে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি করে। এই ঘটনার পর ভারত পাকিস্তানের বিরুদ্ধে একাধিক কূটনৈতিক পদক্ষেপ নেয় এবং দেশজুড়ে প্রতিশোধের দাবি ওঠে।
গত ৭ মে, ভারত ‘অপারেশন সিঁদুর’ নামে পরিচিত একটি অভিযানে পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীর এবং পাকিস্তানের ৯টি জায়গায় জঙ্গি শিবির গুঁড়িয়ে দেয়। মনে করা হচ্ছে, এই অভিযানে পাকিস্তানের জঙ্গি পরিকাঠামো মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
এই সব ঘটনার পর জাতির উদ্দেশে ভাষণে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী দ্ব্যর্থহীনভাবে জানান যে, ভারত পাকিস্তানের কার্যকলাপের উপর সর্বদা নজর রাখবে এবং ‘পারমাণবিক ব্ল্যাকমেল’ ভারত সহ্য করবে না। তিনি এও স্পষ্ট করে দেন যে, পাকিস্তানের সঙ্গে ভবিষ্যতের যেকোনো আলোচনায় পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীর এবং সন্ত্রাসবাদ নিয়েই কথা বলতে হবে।
ভারতের এই সর্বশেষ পদক্ষেপের মাধ্যমে মুম্বাই হামলায় জড়িত অপরাধীদের বিচারের আওতায় আনার এবং এই অঞ্চলে দীর্ঘস্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠার সংকল্পের বিষয়টিই স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।