বিশেষ: রথযাত্রায় হবে ৫ রাশির ভাগ্য বদল, জাতকদের বাড়বে সম্পত্তি, জীবনে আসবে সাফল্য

আর কিছুদিনের মধ্যেই অনুষ্ঠিত হতে চলেছে বাঙালি হিন্দুদের অন্যতম শ্রেষ্ঠ উৎসব – রথযাত্রা। পুরীর জগন্নাথদেবের এই মহাযাত্রা কেবল এক ধর্মীয় আবেগ নয়, জ্যোতিষশাস্ত্রেও এই দিনটির বিশেষ তাৎপর্য রয়েছে। আসন্ন ১৪৩২ বঙ্গাব্দে (২০২৫ খ্রিস্টাব্দে) যে রথযাত্রা অনুষ্ঠিত হতে চলেছে, তা বিশেষ কিছু গ্রহের শুভ অবস্থানের কারণে কয়েকটি রাশির জন্য অত্যন্ত ফলদায়ক হতে পারে বলে মনে করছেন জ্যোতিষীরা। অশ্বিনী নক্ষত্র ও শুক্লপক্ষের দ্বিতীয়া তিথিতে অনুষ্ঠিত হতে চলা এবারের রথযাত্রায় শনি ও বৃহস্পতির মতো গুরুত্বপূর্ণ গ্রহের প্রভাব কিছু নির্দিষ্ট রাশির জীবনে সৌভাগ্য, ধন প্রাপ্তি এবং সম্পত্তি বৃদ্ধির জোরালো যোগ তৈরি করতে পারে।

জ্যোতিষ গণনা অনুযায়ী, আসন্ন রথযাত্রার সময় গ্রহ নক্ষত্রের চাল পাঁচটি রাশির জন্য বিশেষ শুভ ইঙ্গিত দিচ্ছে। এই সময়ে ভাগ্য সহায় থাকবে এবং বিভিন্ন ক্ষেত্রে উন্নতির দুয়ার খুলে যেতে পারে। জেনে নেওয়া যাক কোন কোন রাশির জাতকদের জীবনে এই সময় সুসময়ের হাতছানি।

১. বৃষ রাশি (Taurus): এই রথযাত্রার সময় বৃষ রাশির জাতক-জাতিকাদের জন্য এক দারুণ সুযোগ আসতে চলেছে। রথযাত্রার দিনে চন্দ্র এবং বৃহস্পতির শক্তিশালী যোগ তৈরি হওয়ায় জমি বা সম্পত্তি সংক্রান্ত পুরনো মামলা মোকদ্দমা থেকে মুক্তি মিলতে পারে এবং আপনার পক্ষে রায় যাওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। নতুন সম্পত্তি কেনা বা পুরোনো সম্পত্তি থেকে লাভ পাওয়ার যোগ প্রবল। এই শুভ যোগ আপনার ব্যাঙ্ক ব্যালেন্স বাড়াতে সহায়ক হবে এবং ব্যবসার ক্ষেত্রেও আশাতীত লাভের মুখ দেখতে পাবেন।

২. কর্কট রাশি (Cancer): কর্কট রাশির জাতকদের জন্য শনি ও মঙ্গল গ্রহের চতুর্থ দৃষ্টি বহুদিনের আটকে থাকা কাজ সম্পন্ন করতে সহায়ক হবে। যে কাজগুলি নিয়ে আপনি দীর্ঘদিন ধরে চিন্তিত ছিলেন বা যা কিছুতেই শেষ হচ্ছিল না, এবার সেগুলি সফলভাবে সম্পন্ন হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। ব্যক্তিগত জীবনে সুখ শান্তি বজায় থাকবে এবং এই শুভ যোগ নতুন গাড়ি বা বাড়ি কেনার ক্ষেত্রে অত্যন্ত অনুকূল পরিস্থিতি তৈরি করবে। তাই এই সময়টিকে কাজে লাগিয়ে জীবনের বড় পরিকল্পনাগুলি বাস্তবায়িত করতে পারেন।

৩. কন্যা রাশি (Virgo): কন্যা রাশির জাতক-জাতিকারা এই রথযাত্রার সময় আকস্মিক লাভের মুখ দেখতে পারেন। রবি ও শুক্রের সান্নিধ্য অপ্রত্যাশিত অর্থ প্রাপ্তি বা উত্তরাধিকার সূত্রে সম্পত্তি লাভের জোরালো যোগ তৈরি করছে। কর্মক্ষেত্রে আপনার প্রভাব বাড়বে, চাকরিজীবীদের জন্য কর্মক্ষেত্রে শুভ সংবাদ বা পদোন্নতির যোগ আসতে পারে এবং উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রেও ভালো ফলাফল বা সুযোগ লাভের সম্ভাবনা প্রবল। আর্থিক দিক থেকে এটি অত্যন্ত শুভ সময়।

৪. ধনু রাশি (Sagittarius): ধনু রাশির জাতকদের জন্য বৃহস্পতির তৃতীয় স্থানে অবস্থান বিদেশ যাত্রার পথ খুলে দিতে পারে। যারা বিদেশে পড়াশোনা বা কাজের সুযোগ খুঁজছেন, তাদের জন্য এটি দারুণ সময়। পেশাগত জীবনেও সাফল্য লাভের যোগ প্রবল। যাঁরা নতুন ব্যবসা শুরু করার কথা ভাবছেন বা বর্তমান ব্যবসায় নতুন করে লগ্নি করতে চাইছেন, তাঁদের জন্য এই সময়টি অত্যন্ত লাভজনক প্রমাণিত হবে। ভ্রমণের মাধ্যমেও কাজের সুযোগ বা আর্থিক লাভ আসতে পারে।

৫. মীন রাশি (Pisces): মীন রাশির জাতক-জাতিকাদের জন্য রথযাত্রার দিনটি অত্যন্ত শুভ ইঙ্গিত বহন করছে। চন্দ্র গ্রহের অতি শুভ স্থানে প্রবেশ পারিবারিক সমস্যার সমাধানে সাহায্য করবে এবং মানসিক শান্তি ফিরিয়ে আনবে। যারা নতুন ঘর বা জমি কেনার পরিকল্পনা করছেন, তাদের সেই চুক্তি এই সময়ে সম্পাদিত হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। সামগ্রিকভাবে পরিবারে সুখ শান্তি বজায় থাকবে এবং আর্থিক দিক থেকেও উন্নতির যোগ প্রবল।

বাকি রাশিগুলির জন্য সাধারণ ফলাফল:

মেষ, মিথুন, সিংহ, তুলা, বৃশ্চিক, মকর ও কুম্ভ রাশির জাতক-জাতিকাদের জন্য এবারের রথযাত্রার ফলাফল মিশ্র প্রকৃতির হতে পারে। এই সময়ে আধ্যাত্মিক চর্চা বৃদ্ধি পাবে এবং মানসিক শান্তির সন্ধান মিলবে। তবে সম্পত্তি সংক্রান্ত কোনো বড় সিদ্ধান্ত গ্রহণ বা ঝুঁকিপূর্ণ বিনিয়োগ এই সময়কালে এড়িয়ে চলাই শ্রেয় বলে জ্যোতিষীরা পরামর্শ দিচ্ছেন। সামগ্রিকভাবে এই রাশিগুলির জাতকদের ধৈর্য ধরে পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হবে।

বিশেষ টোটকা:

রথযাত্রার শুভ দিনে ভগবান জগন্নাথদেবের বিশেষ কৃপা লাভের জন্য কিছু টোটকা পালন করা অত্যন্ত শুভ বলে মনে করা হয়। এই দিন সকালে স্নান সেরে শুদ্ধ বস্ত্র (বিশেষত হলুদ রঙের) পরিধান করুন। এরপর শুদ্ধ মনে ভগবানের সামনে বসে “জগন্নাথ অষ্টোত্তর শতনাম” পাঠ করুন। ভগবান জগন্নাথকে চন্দন ও তুলসী পাতা অর্পণ করে নিষ্ঠা ভরে পূজা দিন। মনে বিশ্বাস রাখা হয় যে এতে জীবনের সমস্ত বাধা বিপত্তি কেটে যায় এবং বিশেষ করে সম্পত্তি সংক্রান্ত বিষয়ে উন্নতি লাভ হয়।

(বিশেষ দ্রষ্টব্য: এই প্রতিবেদনটি সম্পূর্ণ জ্যোতিষশাস্ত্রীয় গণনা ও লোকবিশ্বাসের উপর ভিত্তি করে লেখা। ব্যক্তিগত জীবনের সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে আমরা কোনো ধরনের সম্পাদকীয় বিশ্লেষণ বা সুপারিশ প্রদান করি না। পাঠক নিজ দায়িত্বে তথ্যের সত্যতা যাচাই ও ব্যবহার করবেন।)