বিশেষ: যে কারণে বাগদানের পরও যে কারণে হয়নি অভিষেক-কারিশমার বিয়ে, জানুন সেই ঘটনা

বলিউড তারকাদের ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে আগ্রহ চিরকালই তুঙ্গে থাকে। এরকমই এক হাই-প্রোফাইল সম্পর্ক ছিল অভিনেতা অভিষেক বচ্চন এবং অভিনেত্রী কারিশমা কাপুরের। একসময় তাদের প্রেম এবং বাগদান ছিল টিনসেল টাউনের প্রধান আলোচ্য বিষয়। তবে দীর্ঘ প্রেমের পরও তাদের সম্পর্ক বিয়ের পিঁড়ি পর্যন্ত গড়ায়নি, যা বলিউড মহলে বড়সড় বিস্ময় তৈরি করেছিল। দুই পরিবারের মধ্যে মতানৈক্যই এই সম্পর্ক ভেঙে যাওয়ার প্রধান কারণ ছিল বলে পরবর্তীতে বিভিন্ন রিপোর্টে প্রকাশ্যে এসেছে।

২০০০ সালের দিকে যখন অভিষেক বচ্চন এবং কারিশমা কাপুর একের পর এক হিট সিনেমা উপহার দিয়ে বলিউডে নিজেদের অবস্থান শক্ত করছিলেন, তখন তাদের প্রেম কাহিনিও ছিল আলোচনার কেন্দ্রে। দীর্ঘ পাঁচ বছর ধরে তারা গোপনে প্রেম করেন। এরপর অভিষেক ও কারিশমাকে একসঙ্গে প্রথম দেখা যায় অভিষেক বচ্চনের বোন শ্বেতা বচ্চনের বিয়েতে।

তাদের সম্পর্ক আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ্যে আসে ২০০২ সালে অমিতাভ বচ্চনের ৬০তম জন্মদিনের জমকালো অনুষ্ঠানে। সেই অনুষ্ঠানে জয়া বচ্চন আনুষ্ঠানিকভাবে অভিষেক-কারিশমার বাগদানের ঘোষণা দেন। জয়া বচ্চনের এমন ঘোষণার পর পুরো বলিউড পাড়ায় তখন উৎসবের আমেজ বইছিল এবং সকলেই এই জুটির ভবিষ্যৎ নিয়ে আশাবাদী ছিলেন।

তবে সেই উৎসবের রেশ খুব বেশি দিন স্থায়ী হয়নি। অপ্রত্যাশিতভাবে ২০০৩ সালে ভেঙে যায় অভিষেক-কারিশমার বাগদান, যা সকলকে অবাক করে দেয়। সে সময় এই সম্পর্ক ভেঙে যাওয়ার পেছনে সঠিক কারণ কী ছিল তা নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠলেও, বচ্চন এবং কাপুর – এই দুই পরিবারের কঠোর গোপনীয়তার কারণে বিস্তারিত কিছু জানা যায়নি।

তবে পরবর্তীতে বিভিন্ন ভারতীয় গণমাধ্যমের খবরে এই সম্পর্ক ভেঙে যাওয়ার পেছনের আসল কারণ সামনে আসে। এক্সপ্রেস ট্রিবিউনের এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, জয়া বচ্চন নাকি কারিশমাকে বিয়ের পর অভিনয় ছেড়ে দেওয়ার একটি শর্ত দিয়েছিলেন। এই শর্তে কারিশমার মা, ববিতা কাপুর কোনোভাবেই রাজি হননি। কারণ, ববিতা তার মেয়ের ক্যারিয়ার নিয়ে অত্যন্ত উদ্বিগ্ন ছিলেন।

একই সঙ্গে, ববিতা নাকি তখন অমিতাভ বচ্চনের কাছে অনুরোধ করেছিলেন যে কারিশমার ভবিষ্যৎ সুরক্ষিত করার জন্য অভিষেকের কাছে বচ্চন পরিবারের কিছু সম্পদ হস্তান্তর করা হোক। ববিতার এই প্রস্তাব বচ্চন পরিবারের জন্য অস্বস্তিকর ছিল এবং দুই পরিবারের মধ্যে উত্তেজনা তৈরি হয়। কারণ, সেই সময়ে বচ্চন পরিবার আর্থিক সমস্যার সম্মুখীন হয়েছিল এবং বেশ কিছু ঋণ ছিল। যার ফলে কারিশমার মায়ের এই প্রস্তাবে রাজি হওয়া তাদের জন্য কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছিল। ববিতা কাপুরও বচ্চন পরিবারের আর্থিক প্রতিবন্ধকতার মাঝে মেয়েকে পাঠাতে রাজি ছিলেন না। এই বিষয়গুলিই ধীরে ধীরে অভিষেক-কারিশমার ভালোবাসা সম্পর্কের মাঝে দেয়াল হয়ে দাঁড়িয়েছিল বলে মনে করা হয়।

সেই ধাক্কা সামলে ব্যক্তিগত জীবনে এগিয়ে যান তারা। ২০০৩ সালে কারিশমা ব্যবসায়ী সঞ্জয় কাপুরকে বিয়ে করেন, যদিও পরে ২০১৪ সালে তাদের বিবাহবিচ্ছেদ হয়। অন্যদিকে অভিষেক বচ্চন ২০০৭ সালে অভিনেত্রী ঐশ্বরিয়া রাই বচ্চনকে বিয়ে করেন।

বলিউডের ইতিহাসে অভিষেক-কারিশমার ভেঙে যাওয়া বাগদান আজও এক আলোচিত অধ্যায় হিসেবে রয়ে গেছে, যেখানে পারিবারিক প্রত্যাশা, শর্ত এবং আর্থিক পরিস্থিতি কীভাবে দুটি নামী পরিবারের মধ্যে একটি সম্পর্কের উপর প্রভাব ফেলতে পারে তার উদাহরণ দেখা যায়।