তাপপ্রবাহের পর স্বস্তি! বিকেলের পরই ৫০ কিমি বেগে ঝোড়ো হাওয়া, আজ কোন কোন জেলায় দুর্যোগের সতর্কতা?

টানা গরমের পর অবশেষে কিছুটা স্বস্তি পেল রাজ্যবাসী। আলিপুর আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস মতোই সোমবার রাতে রাজ্যের প্রায় প্রতিটি জেলায় তুমুল ঝড়-বৃষ্টি হয়, যার জেরে তাপমাত্রা উল্লেখযোগ্যভাবে কমে আসে। এই মরশুমের প্রথম বড় ঝড় বৃষ্টির দাপটে দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা কিছুটা বেশি থাকলেও, রাতের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা উল্লেখযোগ্যভাবে নেমে আসে ১৯ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেডে। এর ফলে গত কয়েকদিনের টানা অস্বস্তিকর গরম থেকে অবশেষে কিছুটা হলেও রেহাই মিলেছে।
আলিপুর আবহাওয়া দফতরের তরফে জানানো হয়েছে, আজ মঙ্গলবার দক্ষিণবঙ্গের সব জেলাতেই বিক্ষিপ্তভাবে বজ্রবিদ্যুৎ সহ ঝড়-বৃষ্টির আশঙ্কা রয়েছে। গতকালের ঝড়ের দাপট কিছুটা কম থাকতে পারে আজ। বজ্রবিদ্যুৎ সহ বৃষ্টির সঙ্গে ঘণ্টায় ৪০ থেকে ৫০ কিলোমিটার গতিবেগে দমকা ঝোড়ো বাতাস বইতে পারে। কলকাতা থেকে নদীয়া পর্যন্ত দক্ষিণবঙ্গের প্রায় সব জেলাতেই আজ ঝড় বৃষ্টির পূর্বাভাস জারি করা হয়েছে। বুধবার ও শুক্রবার দক্ষিণবঙ্গে বজ্রবিদ্যুৎ সহ দমকা ঝোড়ো হাওয়ার সম্ভাবনা আরও বাড়বে। ঐ সময় বিক্ষিপ্তভাবে কালবৈশাখীর মতো পরিস্থিতি, শিলাবৃষ্টি এবং বজ্রপাতের আশঙ্কা থাকবে। আগামী কয়েক দিন দক্ষিণবঙ্গের সমস্ত জেলাতে বজ্রবিদ্যুৎ সহ হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। পশ্চিমের জেলা ও পূর্বের জেলা সহ কলকাতার সব জেলাতেই এই পরিস্থিতি দেখা যেতে পারে। এই সময়ে বজ্রবিদ্যুৎ সহ বৃষ্টির সাথে ৩০ থেকে ৫০ কিলোমিটার গতিবেগে বিক্ষিপ্তভাবে কয়েক জায়গায় দমকা ঝোড়ো বাতাস বইতে পারে।
আবহাওয়া অফিসের পক্ষ থেকে বাংলা উপকূলে সমুদ্র উত্তাল থাকার পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে এবং জলোচ্ছ্বাসের আশঙ্কাও রয়েছে। একারণে মৎস্যজীবীদের আগামী কয়েকদিন সমুদ্রে যেতে নিষেধ করা হয়েছে।
অন্যদিকে, উত্তরবঙ্গের সব জেলাতেই আজ ঝড়বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। তবে আগামীকাল, বুধবার, উত্তরবঙ্গে ঝড়বৃষ্টির সম্ভাবনা কিছুটা কমবে। ঐ সময় ৩০ থেকে ৪০ কিলোমিটার গতিবেগে দমকা ঝোড়ো হাওয়ার সঙ্গে বজ্রবিদ্যুৎ সহ হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি হতে পারে। তবে শুক্রবার ফের উত্তরবঙ্গে ঝড়বৃষ্টির সম্ভাবনা বাড়বে। সেদিন দার্জিলিং থেকে মালদা পর্যন্ত সব জেলাতেই বজ্রবিদ্যুৎ সহ ঝড় বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। বজ্রবিদ্যুৎ সহ হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টির সাথে ঝড়ের গতিবেগ থাকতে পারে ৪০ থেকে ৫০ কিলোমিটার প্রতি ঘন্টায়। শুক্রবার পর্যন্ত উত্তরবঙ্গের জেলাগুলিতে বিকেল বা রাতের দিকে ঝড়-বৃষ্টির সম্ভাবনা থাকবে।
মৌসম ভবনের তরফে জানানো হয়েছে, বর্তমানে দক্ষিণ-পশ্চিম রাজস্থান এবং উত্তরপূর্ব আসামের উপর ঘূর্ণাবর্ত অবস্থান করছে। এছাড়াও উত্তর-পূর্ব বাংলাদেশ ও সংলগ্ন এলাকায় এবং কোমোরিন এলাকাতেও ঘূর্ণাবর্ত রয়েছে। এই সিস্টেমগুলির প্রভাবে রাজ্যে বজ্রগর্ভ মেঘ তৈরি হচ্ছে। আগামী ২রা মে শুক্রবার নতুন করে একটি পশ্চিমী ঝঞ্ঝা উত্তর-পশ্চিম ভারতের পার্বত্য এলাকায় প্রবেশ করবে, যা আগামী কয়েকদিনের আবহাওয়ার উপর প্রভাব ফেলবে। সব মিলিয়ে, আগামী কয়েক দিন রাজ্যজুড়ে বজ্রবিদ্যুৎ সহ বৃষ্টি ও ঝোড়ো হাওয়ার সম্ভাবনা থাকছে।