“পহেলগাঁওয়ের ঘটনা সরকারের ষড়যন্ত্র”- দেশবিরোধী মন্তব্য করে গ্রেপ্তার হলেন বিধায়ক

জম্মু ও কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলাকে ‘সরকারের ষড়যন্ত্র’ বলে মন্তব্য করার অভিযোগে অসমের অল ইন্ডিয়া ইউনাইটেড ডেমোক্র্যাটিক ফ্রন্টের (এআইইউডিএফ) বিধায়ক আমিনুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করেছে অসম পুলিশ। এই ‘দেশবিরোধী’ মন্তব্যের জন্য তাঁর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগ আনা হয়েছে।
মঙ্গলবার পহেলগাঁওয়ে পর্যটকদের উপর জঙ্গি হামলায় অন্তত ২৬ জনের মৃত্যু হয়। বুধবার এই হামলার পর ধিং-এর বিধায়ক আমিনুল ইসলাম মন্তব্য করেন যে, ২০১৯ সালের পুলওয়ামার হামলার মতোই পহেলগামের হামলার পিছনেও ‘সরকারের ষড়যন্ত্র’ রয়েছে। তাঁর এই মন্তব্য সম্বলিত একটি ভিডিয়ো সোশ্যাল মিডিয়ায় দ্রুত ভাইরাল হয়। এর পরেই অসম পুলিশ পদক্ষেপ গ্রহণ করে।
বৃহস্পতিবার অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা জানিয়েছেন যে, ওই বিধায়কের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগ আনা হয়েছে। তিনি বলেন, পহেলগামে জঙ্গি হামলার পর যারা প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে পাকিস্তানকে রক্ষা করার চেষ্টা করছে, তাদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। যারা এই ধরনের কাজ করবেন তাদের রেয়াত করা হবে না। মুখ্যমন্ত্রী আরও জানান, সোশ্যাল মিডিয়ায় বিধায়ক আমিনুল ইসলামের যে বক্তব্য এবং ভিডিয়ো পাওয়া গিয়েছে, তাতে তাঁকে পাকিস্তানের সমর্থক হিসেবে দেখা গেছে। এই কারণেই তাঁর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
অসম পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, প্রকাশ্য স্থানে বিধায়ক শেখ আমিনুল ইসলামের দেওয়া ওই বিভ্রান্তিকর এবং উস্কানিমূলক বক্তব্য রাজ্য বা দেশে একটি প্রতিকূল পরিস্থিতি তৈরি করার ক্ষমতা রাখে। এই কারণেই তাঁর বিরুদ্ধে নগাঁও থানায় ভারতীয় দণ্ডবিধির নির্দিষ্ট ধারায় সুয়ো মোটো মামলা দায়ের করা হয়। সেই মামলার ভিত্তিতেই বৃহস্পতিবার তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
এদিকে, এআইইউডিএফ দলের প্রধান বদরুদ্দিন আজমল এই ঘটনা প্রসঙ্গে দাবি করেছেন, ওই বিধায়ক যা বলেছেন, দল তাকে সমর্থন করে না। আমিনুল ইসলাম যে কথা বলেছেন তা তাদের দলের আনুষ্ঠানিক বক্তব্য নয় বলেও স্পষ্ট জানিয়েছেন আজমল।
প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে পুলওয়ামায় সিআরপিএফ কনভয়ে এক ভয়াবহ হামলায় অন্তত ৪০ জন জওয়ান শহিদ হয়েছিলেন। পহেলগামের ঘটনাটিকে সেই হামলার সঙ্গে তুলনা করে সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ তোলায় বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে এবং তারই জেরে অসমের বিধায়ককে গ্রেপ্তার করা হলো।