কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে ভয়াবহ জঙ্গি হামলা, ২৬ জনের মৃত্যু! অবশেষে মুখ খুলল পাকিস্তান, কী বলল?

জম্মু ও কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ের কাছে বৈসরন উপত্যকায় গত মঙ্গলবার বিকেলে এক ভয়াবহ জঙ্গি হামলায় অন্তত ২৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। নিহতদের বেশিরভাগই ছিলেন দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে কাশ্মীরে ঘুরতে আসা পর্যটক। ২০১৯ সালের পুলওয়ামা হামলার পর উপত্যকায় এটিই সবচেয়ে বড় জঙ্গি আক্রমণ। অমরনাথ যাত্রা শুরুর মাত্র কিছুদিন আগেই এই হামলার ঘটনা নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে নতুন করে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে।

সূত্রের খবর অনুযায়ী, প্রায় ৮ থেকে ১০ জন জঙ্গির একটি দল পর্যটকদের ঘিরে ফেলে তাদের ধর্মীয় পরিচয় জানতে চায় এবং বেছে বেছে গুলি চালাতে শুরু করে। অনেককে একে-৪৭ এর গুলিতে ঝাঁঝরা করে দেওয়া হয়েছে, আবার অনেককে একেবারে পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জ থেকে গুলি করা হয়েছে।

জানা গেছে, এই হামলায় জড়িত জঙ্গিদের মধ্যে ৫ থেকে ৭ জন পাকিস্তান থেকে এসেছিল বলে মনে করা হচ্ছে। এদের সঙ্গে স্থানীয় কিছু ব্যক্তিও যোগ দিয়েছিল, যারা নিয়ন্ত্রণরেখা পেরিয়ে পাকিস্তানে প্রশিক্ষণ নিয়ে এসেছিল বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। এই স্থানীয়দের সাহায্যেই হত্যালীলা চালানোর পর জঙ্গিরা নিকটবর্তী পাহাড়ের জঙ্গলে পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়। হামলার পর একজন সম্ভাব্য জঙ্গির একে-৪৭ হাতে বৈসরন উপত্যকায় ঘুরে বেড়ানোর ছবিও সামনে এসেছে।

এই ভয়াবহ হামলার পর এই প্রথম আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে পাকিস্তান। পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খ্বজা আসিফ পহেলগাঁওয়ের এই জঙ্গি হামলার সঙ্গে তাঁদের দেশের কোনও যোগ থাকার কথা তীব্রভাবে অস্বীকার করেছেন। তিনি দাবি করেন, পাকিস্তান কোনো ধরনের সন্ত্রাসবাদকে সমর্থন করে না।

তবে, আসিফ ঘটনার জন্য ভারতের অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতিকেই দায়ী করেছেন। তাঁর বিবৃতিতে তিনি বলেছেন, ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে, যেমন নাগাল্যান্ড, মণিপুর, কাশ্মীর এবং ছত্তিশগড়ে ভারত সরকারের বিরুদ্ধে লাগাতার বিক্ষোভ চলছে এবং এই “ভেতরের লোকেরাই” এই কাজ করেছে। তিনি আরও বলেন, স্থানীয় কোনো সংগঠন যদি ভারত সরকারকে টার্গেট করে, তাহলে পাকিস্তানের দিকে আঙুল তোলাটা ভারতের জন্য সহজ হয়ে যায়।

নিহত ২৬ জনের মধ্যে দুজন বিদেশি পর্যটক ছিলেন – একজন সংযুক্ত আরব আমিরাতের এবং একজন নেপালের নাগরিক। বাকি দুজন ছিলেন স্থানীয় বাসিন্দা।

এই হামলার দায় স্বীকার করেছে পাকিস্তান-ভিত্তিক জঙ্গিগোষ্ঠী লশকর-ই-তইবার একটি শাখা সংগঠন ‘দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট’ (টিআরএফ)। মঙ্গলবার রাতে তারা এই হামলার দায় স্বীকার করে বিবৃতি দেয়। এই ঘটনার জেরে উপত্যকাজুড়ে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে এবং জঙ্গিদের খোঁজে তল্লাশি অভিযান শুরু হয়েছে।