BigNews: ভূমিকম্পে দুলে উঠল দিল্লি সহ উত্তর ভারত, উৎস আফগানিস্তানের হিন্দুকুশ

আজ ভোরে কেঁপে উঠল দিল্লি এবং তার পার্শ্ববর্তী অঞ্চল (দিল্লি-এনসিআর)। জাতীয় ভূকম্পন কেন্দ্র (National Center for Seismology – NCS) জানিয়েছে, বুধবার সকালে আফগানিস্তানের হিন্দুকুশ অঞ্চলে ৫.৯ মাত্রার একটি শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে, যার কম্পন দিল্লি-এনসিআর অঞ্চল সহ ভারতের উত্তরাংশের বিভিন্ন স্থানে অনুভূত হয়েছে।

এনসিএস-এর তথ্য অনুযায়ী, ভূমিকম্পটি স্থানীয় সময় ভোর ৪:৪৩ মিনিটে আঘাত হানে এবং এর গভীরতা ছিল ৭৫ কিলোমিটার। রিখটার স্কেলে ৫.৯ মাত্রার ভূমিকম্প যথেষ্ট শক্তিশালী বলে মনে করা হয় এবং এর কেন্দ্রস্থলের কাছাকাছি এলাকায় গুরুতর ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তবে, তাৎক্ষণিকভাবে দিল্লি-এনসিআর বা ভারতের অন্য কোনও অংশে হতাহত বা বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি।

ভূমিকম্প অনুভূত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই সোশ্যাল মিডিয়ায় মানুষজন তাদের অভিজ্ঞতা শেয়ার করতে শুরু করেন। দিল্লি ও আশেপাশের এলাকার বহু বাসিন্দা কম্পন অনুভব করার কথা জানিয়েছেন।

জানা গেছে, এই ভূমিকম্পের কম্পন শুধুমাত্র দিল্লি-এনসিআর নয়, প্রতিবেশী দেশগুলির মধ্যেও অনুভূত হয়েছে। তিব্বত, বাংলাদেশ এবং ভারতের জম্মু ও কাশ্মীর সহ বিভিন্ন স্থানে কম্পন অনুভূত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

আফগানিস্তানে ঘন ঘন প্রাকৃতিক দুর্যোগের ঝুঁকি

রাষ্ট্রসংঘের জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক অফিসের (UNOCHA) তথ্য অনুযায়ী, আফগানিস্তান বন্যা, ভূমিধস এবং ভূমিকম্পের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগের জন্য অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ একটি দেশ। UNOCHA জানিয়েছে, ঘন ঘন ভূমিকম্প আফগানিস্তানের দুর্বল সম্প্রদায়গুলিকে আরও বিপন্ন করে তোলে, যারা ইতিমধ্যেই দীর্ঘ দশক ধরে সংঘাতের শিকার এবং একাধিক দুর্যোগ মোকাবিলার ক্ষমতা তাদের সীমিত।

রেড ক্রসের মতে, আফগানিস্তানে শক্তিশালী ভূমিকম্পের ইতিহাস রয়েছে। হিন্দুকুশ পর্বতমালা ভূতাত্ত্বিকভাবে একটি সক্রিয় অঞ্চল, যেখানে প্রতি বছর ভূমিকম্প অনুভূত হয়। আফগানিস্তান ভারতীয় এবং ইউরেশিয়ান টেকটোনিক প্লেটের সংযোগস্থলে অবস্থিত, যার ফলে এই অঞ্চলে প্রায়শই ভূকম্পন হয়ে থাকে।

৫.৯ মাত্রার ভূমিকম্প কতটা বিপজ্জনক?

আফগানিস্তানে অনুভূত হওয়া ৫.৯ মাত্রার ভূমিকম্প মাঝারি থেকে উচ্চ তীব্রতার মধ্যে পড়ে। ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় এই মাত্রার ভূমিকম্প ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি ঘটাতে সক্ষম। যদিও আজকের ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল জনবিরল এলাকায় হওয়ায় বড় ধরনের ক্ষতির সম্ভাবনা কম, তবে এর কম্পন বিস্তীর্ণ অঞ্চলে অনুভূত হয়েছে, যা উদ্বেগের কারণ। বর্তমানে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ নজর রাখছে।