OMG! ২৫ বছরের বিবাহবার্ষিকী, আনন্দে স্ত্রীর সঙ্গে নাচতে নাচতে মৃত্যু স্বামীর

উত্তরপ্রদেশের বরেলিতে এক বিবাহ বার্ষিকীর অনুষ্ঠানে নেমে এল শোকের ছায়া। ২৫ বছর দাম্পত্য জীবন একসঙ্গে কাটানোর আনন্দ উদযাপনের মুহূর্তে স্ত্রীর সঙ্গে নাচতে নাচতে হঠাৎ মাটিতে লুটিয়ে পড়লেন স্বামী। দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলেও শেষ পর্যন্ত তাঁকে বাঁচানো যায়নি। হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান ওই ব্যক্তি।
মর্মান্তিক এই ঘটনাটি ঘটেছে বরেলির একটি বিয়ে বাড়ির হলে। মৃত ওয়াসিম সারওয়াত (৫০) পেশায় ছিলেন একজন জুতো ব্যবসায়ী। স্ত্রী ফারাহর সঙ্গে তাঁদের বিবাহিত জীবনের রজতজয়ন্তী পালন করার জন্য একটি আনন্দ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিলেন তিনি। সেই অনুষ্ঠানেই, সকলের হাসিমুখের মাঝে স্ত্রীর হাত ধরে নাচতে শুরু করেন ওয়াসিম। নাচের মাঝেই ঘটে এই অপ্রত্যাশিত দুর্ঘটনা।
এই হৃদয়বিদারক ঘটনার একটি ভিডিও ইতিমধ্যেই সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে। ভিডিওটিতে দেখা যাচ্ছে, ওয়াসিম এবং ফারাহ হাসিমুখে মঞ্চে একে অপরের সঙ্গে নাচছেন। হঠাৎ করেই ওয়াসিম দুর্বল হয়ে পড়েন এবং মুহূর্তের মধ্যেই মাটিতে পড়ে যান। আশেপাশে থাকা অতিথিরা দ্রুত ছুটে এসে তাঁকে তোলার চেষ্টা করেন, কিন্তু ততক্ষণে তিনি অচেতন হয়ে পড়েছিলেন।
পরিবারের সদস্যরা সঙ্গে সঙ্গে ওয়াসিমকে স্থানীয় একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যান। তবে, সেখানে পৌঁছানোর পর চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। ওয়াসিমের পরিবারের এক সদস্য জানান, “হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরই চিকিৎসকরা ওয়াসিমের মৃত্যুর খবর দেন। পরে তাঁকে সমাধিস্থ করা হয়েছে।”
মৃত ওয়াসিমের স্ত্রী ফারাহ পেশায় একজন স্কুলশিক্ষিকা। তাঁদের দুই পুত্রসন্তান রয়েছে।
এই ঘটনার প্রসঙ্গে এক অভিজ্ঞ কার্ডিওলজিস্টের মন্তব্য, “এ ধরনের আকস্মিক মৃত্যু অনেক সময় হৃদযন্ত্রের কোনও সুপ্ত সমস্যার কারণে ঘটে থাকে। যদি রক্ত চলাচল বা হৃদস্পন্দনের কোনো সমস্যা আগে থেকেই বিদ্যমান থাকে, সেক্ষেত্রে হঠাৎ কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। বুকে অস্বস্তি, দমবন্ধ লাগা বা অনিয়মিত হৃদস্পন্দনের মতো উপসর্গ দেখা দিলে অবিলম্বে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।”
জানা গিয়েছে, ওয়াসিম ও ফারাহ বিবাহ বার্ষিকীর অনুষ্ঠানে একসঙ্গে একটি কেক কাটারও পরিকল্পনা করেছিলেন। কিন্তু সেই আনন্দঘন মুহূর্ত আর বাস্তবায়িত হল না। স্ত্রীর চোখের সামনেই, ভরা অনুষ্ঠানে মঞ্চের উপরই চিরতরে স্তব্ধ হয়ে গেল তাঁদের ২৫ বছরের ভালোবাসার ইতিহাস। এই ঘটনায় পরিবার ও আত্মীয়-স্বজনের মধ্যে গভীর শোকের ছায়া নেমে এসেছে।