“ওয়াকফে একজনও অমুসলিম থাকবে না”-স্পষ্ট বার্তায় জানালেন অমিত শাহ

লোকসভায় ওয়াকফ সংশোধনী বিল নিয়ে আলোচনার সময় বিরোধীদের তীব্র সমালোচনা করলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। তিনি স্পষ্ট ভাষায় বলেন, বিরোধীরা কেবল ভোটব্যাঙ্কের রাজনীতির জন্য এই বিলের বিরোধিতা করছে। একইসঙ্গে তিনি জোর দিয়ে জানান, ওয়াকফ বোর্ডে কোনও অমুসলিম সদস্য থাকবেন না। তাঁর অভিযোগ, ‘এই দেশ ভাঙতে চায় বিরোধীরা’।

বুধবার লোকসভায় অমিত শাহ বলেন, “ওয়াকফ আইন এবং ওয়াকফ বোর্ড ১৯৯৫ সালে কার্যকর হয়েছিল। অমুসলিমদের সম্পর্কে যে দাবি করা হচ্ছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা। আমি দেশের মুসলিমদের বলতে চাই যে একজনও অমুসলিম ওয়াকফে থাকবে না। এই আইনে এমন কোনও বিধান নেই। তবে ওয়াকফ বোর্ড এবং ওয়াকফ কাউন্সিল এখন ওয়াকফ সম্পত্তি বিক্রিকারীদের ধরবে। যারা ওয়াকফের নামে ১০০ বছরের জন্য সম্পত্তি লিজ দেবে তাদেরও ধরা হবে। ওয়াকফের আয় কমছে। ওই আয় থেকে সংখ্যালঘুদের উন্নয়ন করতে হবে। তাদের এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। সেই টাকা চুরি করা হচ্ছে। ওয়াকফ বোর্ড এবং কাউন্সিল সেটা ধরবে।”

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, “কিছু লোক গুজব ছড়াচ্ছে যে এই আইন মুসলিম সম্প্রদায়ের ধর্মীয় অধিকার এবং সম্পত্তিতে হস্তক্ষেপ করবে। এটি সম্পূর্ণ ভুল এবং সংখ্যালঘুদের ভয় দেখানোর একটি ষড়যন্ত্র, যাতে তাঁদের ভোট ব্যাঙ্ক হিসেবে ব্যবহার করা যায়।”

ওয়াকফ সম্পত্তি প্রসঙ্গে অমিত শাহ বলেন, “আগে ওয়াকফ সম্পর্কিত প্রতিষ্ঠানগুলিতে কোনও অমুসলিম ব্যক্তিকে অন্তর্ভুক্ত করার কোনও বিধান ছিল না। এনডিএ সরকারও এই নীতিতে কোনও পরিবর্তন আনবে না। ওয়াকফ বোর্ড এবং ওয়াকফ কাউন্সিলের কাজ হল – যারা অবৈধভাবে ওয়াকফ সম্পত্তি বিক্রি করছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া।”

অমিত শাহ তাঁর বক্তব্যে পূর্বতন ইউপিএ সরকারের প্রসঙ্গও টেনে আনেন। তিনি জানান, “ইউপিএ সরকারের সময় ২০১৩ সালে যখন ওয়াকফ বিল পরিবর্তন করা হয়, সেই ভুল সংশোধনের জন্যই ওয়াকফ সংশোধনী বিল ২০২৪-এ আনা হয়েছে। ২০১৩ সালে তৎকালীন ইউপিএ সরকার ওয়াকফ বিল সংশোধনের আইন প্রণয়নের পর অতিরিক্ত ২১ লক্ষ হেক্টর জমির উপর দাবি করা হয়েছিল। মোট যে জমির উপর দাবি করা হয়েছে তা ৩০ লক্ষ হেক্টরেরও বেশি।”

তিনি দৃঢ় কণ্ঠে বলেন, “সারা দেশে একজনও মুসলিমের অধিকার কেড়ে নেওয়া হবে না। বিলটি পাস হওয়ার পর, যে কেউ ওয়াকফের প্রশাসনিক কাজে জড়িত হতে পারবেন তবে কেবল মুসলমানরাই ধর্মীয় কাজ করতে পারবেন।”

অমিত শাহের এই মন্তব্য ওয়াকফ বিল নিয়ে চলমান বিতর্ককে আরও তীব্র করে তুলেছে এবং সংসদে এই বিষয়ে আরও উত্তপ্ত আলোচনা হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।