সাধারণ মানুষ বিপর্যয়ে, আর মুখ্যমন্ত্রী লন্ডনে গিয়ে আনন্দ করছেন! সিপিএম নেতার তীব্র সমালোচনা

বেলগাছিয়া ভাগাড় সংলগ্ন এলাকায় ঘটে যাওয়া ভূমিধসের ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। বৃহস্পতিবার, ঘটনাস্থল পরিদর্শনে গিয়ে রাজ্যসভার সাংসদ এবং সিপিএম নেতা বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য রাজ্য সরকার এবং প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে তীব্র সমালোচনা করেন। তিনি অভিযোগ করেন যে, এই ভূমিধস একটি প্রাকৃতিক দুর্যোগ নয়, বরং প্রশাসনিক ব্যর্থতার ফলস্বরূপ হয়েছে এবং এর কারণে সাধারণ মানুষ চরম দুর্ভোগের মুখে পড়েছে।

প্রশাসনিক ব্যর্থতা ও অব্যবস্থার অভিযোগ

ভবিষ্যতের বিপর্যয়ের ইঙ্গিত ছিল জানিয়ে বিকাশ ভট্টাচার্য বলেন, “দীর্ঘদিন ধরে ভাগাড়ের জমি ক্রমাগত বসে যাচ্ছে, অথচ সরকারের কোনো হেলদোল নেই। আজ এই ধসই তার পরিণতি।” তিনি আরও বলেন, “এটা কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ নয়, বরং প্রশাসনিক অব্যবস্থার ফল। এখানে মানুষ ভয়াবহ পরিবেশে বসবাস করছে—একদিকে ভাগাড়ের দুর্গন্ধ, আরেকদিকে মাটির নীচে ফাঁপা জমি। যদি প্রশাসন আগে থেকেই ব্যবস্থা নিত, তাহলে আজ এই বিপর্যয় ঘটত না।”

বাসিন্দাদের দুর্ভোগ ও আতঙ্ক

বেলগাছিয়ায় ধস কবলিত এলাকা পরিদর্শন করে বিকাশ ভট্টাচার্য স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলেন। বাসিন্দাদের অভিযোগ, বেশ কিছুদিন ধরেই জমি দেবে যাওয়ার সংকেত মিলছিল, কিন্তু প্রশাসন কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। এক বাসিন্দা জানান, “আমরা জানতাম এই বিপর্যয় আসবে, কিন্তু কেউ আমাদের সাহায্য করেনি। আমাদের বাড়ি যে কোনো মুহূর্তে ভেঙে পড়তে পারে।”

মুখ্যমন্ত্রীকে আক্রমণ

এছাড়া, তিনি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের লন্ডন সফর নিয়েও প্রশ্ন তোলেন। “গণমানুষ বিপর্যয়ের মধ্যে পড়ে রয়েছে, আর মুখ্যমন্ত্রী লন্ডনে গিয়ে আনন্দ করছেন! এটাই কি সরকারের দায়বদ্ধতা?”—এমন মন্তব্য করেন তিনি।

দ্রুত পদক্ষেপের দাবি

বিকাশ ভট্টাচার্য প্রশাসনের দ্রুত পদক্ষেপের দাবি জানিয়েছেন। তিনি বলেন, “অবিলম্বে ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসন করা উচিত এবং ভাগাড় সংলগ্ন এলাকায় মাটির পরীক্ষার কাজ শুরু করা উচিত।” যদি প্রশাসন দ্রুত ব্যবস্থা না নেয়, তাহলে বৃহত্তর আন্দোলনের হুমকি দেন সিপিএম নেতা। তিনি আরও বলেন, “সাধারণ মানুষের জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলতে দেওয়া হবে না।”

রাজ্য সরকারের প্রতিক্রিয়া

বিকাশ ভট্টাচার্য এর পর বলেছিলেন, “রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে এখনও কোনো প্রতিক্রিয়া মেলেনি।” তবে, রাজ্য সরকারের তরফ থেকে এখনও কোনো মন্তব্য আসেনি।

এই ঘটনা রাজনীতির অঙ্গনে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, এই ধরনের ঘটনা প্রশাসনিক অব্যবস্থার দিকে ইঙ্গিত করছে এবং যদি দ্রুত ব্যবস্থা না নেওয়া হয়, তবে সাধারণ মানুষের মধ্যে সরকারের প্রতি ক্ষোভ আরও বেড়ে যেতে পারে।