RUSHvsUKR: ইউক্রেনের বিশাল হামলা, দাউ দাউ করে জ্বলে উঠল রাশিয়ার বিমানঘাঁটি, উত্তেজনা চরমে

ইউক্রেনের ড্রোন হামলায় রাশিয়ার একটি কৌশলগত বিমানঘাঁটিতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২০ মার্চ) রাতে সংঘটিত এই হামলায় বিমানঘাঁটিতে আগুন ধরে যায় এবং আশপাশের এলাকায় ব্যাপক বিস্ফোরণ ঘটে। এই বিমানঘাঁটি যুদ্ধের সম্মুখভাগ থেকে প্রায় ৭০০ কিলোমিটার দূরে সারাতোভ অঞ্চলের এঙ্গেলসে অবস্থিত, যেখানে রাশিয়ার পারমাণবিক ক্ষমতাসম্পন্ন টিইউ-১৬০ ভারী বোমারু বিমান মোতায়েন রয়েছে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা গেছে, বিমানঘাঁটিতে বিশাল বিস্ফোরণের পর আগুন ছড়িয়ে পড়ছে এবং আশপাশের কটেজগুলি ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। রাশিয়ার সারাতোভ অঞ্চলের গভর্নর রোমান বুসারগিন হামলার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, বিমানঘাঁটিতে আগুন লাগার পর আশপাশের বাসিন্দাদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। তিনি বিমানঘাঁটির নাম উল্লেখ না করলেও, এঙ্গেলস এলাকায় এটি সবচেয়ে বড় এবং গুরুত্বপূর্ণ বিমানঘাঁটি।
ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা হামলার দায় স্বীকার করেছেন। তাদের দাবি, এই বিমানঘাঁটি ব্যবহার করে রাশিয়া ইউক্রেনে হামলা চালাচ্ছিল। ইউক্রেনের নিরাপত্তা বাহিনীর একটি সূত্র জানিয়েছে, তাদের ড্রোন বিমানঘাঁটির একটি গোলাবারুদ গুদামে হামলা চালিয়েছে, যেখানে গাইডেড বোমা এবং মিসাইল রাখা ছিল। হামলার পর গুদামে বিস্ফোরণ ঘটে এবং আগুন ছড়িয়ে পড়ে।
এই হামলার আগে ২০২২ সালের ডিসেম্বরে ইউক্রেন এঙ্গেলস বিমানঘাঁটিতে হামলা চালিয়েছিল। এছাড়া গত জানুয়ারিতে একটি তেল ডিপোতেও হামলা চালায় তারা, যেখান থেকে এঙ্গেলস বিমানঘাঁটিতে তেল সরবরাহ করা হতো। ওই হামলার পর তেল ডিপোতে ভয়াবহ আগুন লাগে, যা নিয়ন্ত্রণে আনতে ফায়ার সার্ভিসের পাঁচ দিন সময় লেগেছিল।
রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় দাবি করেছে, তারা ইউক্রেনের ১৩২টি ড্রোন ধ্বংস করেছে। তবে ইউক্রেনের এই হামলা রাশিয়ার জন্য বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে। বিশেষ করে, এঙ্গেলস বিমানঘাঁটি রাশিয়ার পারমাণবিক ক্ষমতাসম্পন্ন বোমারু বিমানের একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘাঁটি, যা যুদ্ধে কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
এই হামলার পর রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের উত্তেজনা আরও বেড়েছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এই ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে এবং যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়েছে। তবে উভয় পক্ষই যুদ্ধে জয়লাভের জন্য কৌশলগত লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালিয়ে যাচ্ছে, যা সংঘাতের সমাধানকে আরও জটিল করে তুলছে।
এই হামলা রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের একটি নতুন মাত্রা যোগ করেছে এবং ভবিষ্যতে আরও বড় ধরনের সংঘাতের আশঙ্কা তৈরি করেছে। আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন, এই সংঘাতের অবসান ঘটাতে শান্তি আলোচনা এবং কূটনৈতিক প্রচেষ্টা জোরদার করা জরুরি।