ISRLvsHAM: ইসরায়েলে একের পর এক রকেট নিক্ষেপ, হামাসের রকেট হামলায় তেল আবিবে উত্তেজনা

ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘাতের নতুন অধ্যায়ে উত্তপ্ত পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। বৃহস্পতিবার তেল আবিবে রকেট হামলা চালিয়েছে ফিলিস্তিনি গোষ্ঠী হামাস। গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের সাম্প্রতিক হামলায় বেসামরিক নাগরিকদের প্রাণহানির প্রতিশোধ নেওয়ার দাবি করেছে হামাস। এর আগে, ইসরায়েলি বাহিনী গাজা উপত্যকার উত্তর ও দক্ষিণের প্রধান সড়ক বন্ধ করে দিয়ে স্থল ও আকাশপথে হামলা তীব্রতর করেছে।
হামাসের সশস্ত্র শাখা ইজেদিন আল-কাসাম ব্রিগেডস জানিয়েছে, ইসরায়েলের “গণহত্যার” জবাবে তারা তেল আবিবে রকেট হামলা চালিয়েছে। ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী দাবি করেছে, গাজা থেকে ছোড়া একটি প্রোজেক্টাইল তাদের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা দ্বারা আটকানো হয়েছে। এছাড়া আরও দুটি প্রোজেক্টাইল জনবসতিহীন এলাকায় আঘাত হেনেছে। তবে এই হামলায় কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি বলে ইসরায়েলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
গাজার বেসামরিক প্রতিরক্ষা সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, ইসরায়েলের সাম্প্রতিক হামলায় গাজায় দুদিনে ১৯০ জনেরও বেশি শিশুসহ ৯৭৪ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার সকালের হামলায় আরও প্রায় ১০০ ফিলিস্তিনির প্রাণহানি ঘটেছে বলে জানা গেছে। গাজার বাসিন্দারা ইসরায়েলের এই হামলাকে “গণহত্যা” বলে অভিহিত করে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
গাজার বাসিন্দা মোহাম্মদ হুসেইন এএফপিকে বলেন, “আমরা যুদ্ধবিরতি চাই। গাজায় ইসরায়েলি গণহত্যা বন্ধে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। আমরা প্রতিরক্ষাহীন ফিলিস্তিনি।”
ইসরায়েলি বাহিনী গাজা উপত্যকার উত্তর ও দক্ষিণের মধ্যে চলাচল সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করে দিয়েছে। এএফপির প্রতিবেদন অনুযায়ী, গাজার নুসাইরাত শরণার্থী শিবিরের কাছে সালাহেদ্দিন রোড ধরে দক্ষিণ দিকে ফিলিস্তিনিদের পালিয়ে যেতে দেখা গেছে।
গত ১৯ জানুয়ারি ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতি চুক্তি স্বাক্ষরিত হওয়ার পর গাজায় কিছুটা শান্তি ফিরে আসে। তবে সাম্প্রতিক weeks ধরে উভয়পক্ষের মধ্যে টানাপোড়েন বাড়তে থাকে। মঙ্গলবার ভোররাতে ইসরায়েল গাজা উপত্যকায় নতুন করে বিমান হামলা শুরু করে, যা বর্তমান সংঘাতের সূত্রপাত।
মুসলিম বিশ্ব ইসরায়েলের এই হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে। রমজান মাসে নির্বিচার হামলার কারণে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে এখন চাপ বাড়ছে যুদ্ধবিরতি পুনরুদ্ধার এবং সংঘাত বন্ধের জন্য।
এই সংঘাতের ফলে গাজার সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রা মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। হাজার হাজার পরিবার বাস্তুচ্যুত হয়েছে এবং মানবিক সংকট তীব্রতর হচ্ছে। আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো গাজায় জরুরি সাহায্য পাঠানোর আহ্বান জানালেও, ইসরায়েলের নিষেধাজ্ঞার কারণে তা পৌঁছানো কঠিন হয়ে পড়েছে।
এই পরিস্থিতিতে বিশ্ব সম্প্রদায়ের কাছে এখন বড় প্রশ্ন হলো, কীভাবে এই সংঘাতের অবসান ঘটানো যায় এবং গাজার বেসামরিক জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যায়।