হিদমার খোঁজে ১২৫টি গ্রামে টেকনিক্যাল ম্যাপিং সেনা বাহিনীর, আজই নিকেশ ৩০ নকশাল

নকশালবাদ ভারতের জন্য একটি গুরুতর সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই সমস্যা নির্মূল করতে কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকার বিভিন্ন কৌশল গ্রহণ করছে। এরই অংশ হিসেবে ছত্তিশগড়ের বিজাপুর ও কাঙ্কের জেলায় নিরাপত্তা বাহিনী বড়সড় অভিযান চালিয়ে ৩০ জন নকশালকে হত্যা করেছে। এই অভিযানে নিহত নকশালদের কাছ থেকে প্রচুর পরিমাণে অস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধার করা হয়েছে। তবে এই সাফল্যের মাঝেও একটি দুঃখজনক খবর এসেছে—অভিযানে নিরাপত্তা বাহিনীর একজন জওয়ান শহিদ হয়েছেন।

হিদমার খোঁজে তৎপর নিরাপত্তা বাহিনী

সরকারি সূত্রে জানা গেছে, আগামী দিনে নকশালদের বিরুদ্ধে আরও বড় অভিযান চালানোর পরিকল্পনা রয়েছে। বিশেষ করে নকশাল কমান্ডার হিদমাকে ধরতে নিরাপত্তা বাহিনী তৎপর। হিদমার সম্ভাব্য গতিবিধি জানতে ছত্তিশগড়, ওড়িশা এবং অন্ধ্রপ্রদেশের সীমান্তবর্তী প্রায় ১২৫টি গ্রামের টেকনিক্যাল ম্যাপিং করা হচ্ছে। এই এলাকাগুলিতে থার্মাল ইমেজিংয়ের মাধ্যমে নজরদারি চলছে। ন্যাশনাল টেকনিক্যাল রিসার্চ অর্গানাইজেশন (NTRO)-এর সহায়তায় এই অঞ্চলগুলির মানচিত্র তৈরি করা হচ্ছে, যাতে ভবিষ্যতে অভিযানের সময় রুট ও পরিস্থিতি সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা পাওয়া যায়। এটি নকশালদের বিরুদ্ধে সমন্বিত ও কার্যকর অভিযানে সহায়তা করবে।

চলতি বছরে ৭৭ নকশাল নিহত

নিরাপত্তা বাহিনীর তথ্য অনুযায়ী, ২০২৫ সালে এখনও পর্যন্ত ৭৭ জন নকশালকে হত্যা করা হয়েছে। ছত্তিশগড়ের এই অঞ্চলগুলি নকশালদের দ্বারা অধ্যুষিত এবং এখানে তাদের একাধিক ঘাঁটি রয়েছে। সন্দেহ করা হচ্ছে, হিদমা এই অঞ্চলেই কোথাও লুকিয়ে রয়েছে। নিরাপত্তা বাহিনী এই ঘাঁটিগুলি ধ্বংস করতে এবং হিদমাকে ধরতে কঠোর পরিশ্রম করছে।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর আশ্বাস

কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এই অভিযানের পর দেশবাসীকে আশ্বস্ত করে বলেছেন, আগামী বছরের ৩১ মার্চের মধ্যে ভারতকে নকশালমুক্ত করা হবে। তিনি সামাজিক মাধ্যম X-এ লিখেছেন, “আজ আমাদের নিরাপত্তা বাহিনী ‘নকশাল-মুক্ত ভারত অভিযান’-এর দিকে আরেকটি বড় পদক্ষেপ নিয়েছে। ছত্তিশগড়ের বিজাপুর ও কাঙ্কেরে দুটি পৃথক অভিযানে নকশালরা নিহত হয়েছে। মোদী সরকার নকশালদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিয়ে এগিয়ে চলেছে।” তিনি আরও জানিয়েছেন, আত্মসমর্পণের সুযোগ থাকা সত্ত্বেও যারা এই পথ বেছে নিচ্ছে না, তাদের বিরুদ্ধে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি অবলম্বন করা হয়েছে।

কঠিন পথে সাফল্যের আশা

নকশালবাদের বিরুদ্ধে এই লড়াই দীর্ঘদিন ধরে চলছে। সরকারের এই কঠোর অবস্থান এবং নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযান দেশের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা মজবুত করার দিকে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। তবে এই পথে শহিদ জওয়ানদের আত্মত্যাগও দেশবাসীকে মনে করিয়ে দিচ্ছে যে এই সাফল্যের মূল্য অনেক। সরকার ও নিরাপত্তা বাহিনী আশা করছে, আগামী বছরের মধ্যে নকশালবাদের এই অধ্যায় সম্পূর্ণভাবে শেষ হবে।