বিশেষ: ধনী হতে চাইলে আজই বাদ দিন ১৪টি অভ্যাস, জেনেনিন কী কী? (১ম পর্ব )

আপনি কি ধনী হতে চান? – ধনী হতে চাইলে এই লেখার প্রতিটি পয়েন্ট খুব মন দিয়ে পড়ুন। না – আমরা সরাসরি আপনাকে ধনী হওয়ার উপায় বলব না। কিন্তু ধনী হওয়ার যাত্রা শুরু করতে প্রথমেই এই বিষয়গুলোর প্রতি নজর দেয়া জরুরী।
ভালো অভ্যাস করার আগে যেমন আগের খারাপ অভ্যাসগুলো বাদ দেয়া জরুরী, তেমনি ধনী হতে চাইলে – যেসব অভ্যাস আপনাকে ধনী হতে দেবে না, সেগুলো বাদ দেয়া জরুরী।
আজ আপনাকে যে অভ্যাসগুলোর কথা বলব, সেগুলো আসলে ধনী না হওয়ার চিহ্ন। এগুলো প্রায় সব সাধারণ মানুষের মাঝে দেখা যায়। সবগুলো না হলেও এসব অভ্যাসের কিছু না কিছু সব সাধারণ মানুষের মধ্যেই আছে। এবং এর কিছু এতই সাধারণ যে, না বলে দিলে বোঝাও যায় না এগুলো আপনার ধনী হওয়ার ইচ্ছাকে গোপনে গলা টিপে মারছে।
কাজেই, আপনি যদি ধনী হতে চান, তবে খুব মন দিয়ে প্রতিটি পয়েন্ট পড়ুন এবং ভালো করে ভাবুন যে, এগুলোর কোনওটা আপনার মধ্যে আছে কিনা। যদি থাকে – তবে আজ থেকেই সেগুলো দূর করার কাজে নেমে পড়ুন। আজ থেকেই আপনার জীবন বদলাতে শুরু করবে। গতকাল যদি আপনার ধনী হওয়ার সম্ভাবনা হয় ১০, তাহলে আজই সেই সম্ভাবনা হয়ে যেতে পারে ৫০ এরও বেশি। চলুন তাহলে, আর দেরি না করে জেনে নিই ধনী হতে চাইলে কি কি অভ্যাস আপনাকে বাদ দিতে হবে।
ধনী হতে চাইলে যে ১৪টি অভ্যাস বাদ দিতে হবে:
মূল পয়েন্টগুলো বর্ণনা করার আগে আপনাকে ছোট্ট একটা সারাংশ দিয়ে রাখি, তাহলে ব্যাপারগুলো ভালোভাবে অনুধাবন করতে আপনার সুবিধা হবে:
ধনী হওয়ার জন্য আপনাকে কয়েকটি জিনিস নিজের ভেতরে এক করতে হবে: বুদ্ধি, যোগাযোগ দক্ষতা, শৃঙ্খলা ও আত্ম নিয়ন্ত্রণ, মনোযোগ, এ্যানালাইসিস, এবং ভবিষ্যতের কথা ভেবে বর্তমানে ত্যাগ স্বীকার করার মানসিকতা।
মূল পয়েন্টগুলো পড়তে পড়তে এই বিষয়গুলোর সাথে ধনী হওয়ার সম্পর্ক নিয়ে ভাবতে থাকুন। পড়া শেষ হলে আপনি নিজেই অনেক কিছু বুঝতে পারবেন।
এখন জেনে নেয়া যাক সেই ১৪টি ধনী না হওয়ার চিহ্ন:
০১. আপনি হিসাব করতে পছন্দ করেন না
আপনি যদি সত্যিকার ধনী হতে চান, তবে আপনাকে অবশ্যই হিসেবী হতে হবে। এখানে হিসেবী হওয়া মানে শুধু হিসেব করে টাকা খরচ করার কথা বলছি না। আপনাকে প্রতিটি টাকা কোথায় যাচ্ছে, এবং কোন খাতে কত টাকা খরচ হচ্ছে, কত টাকা আয় হচ্ছে, কোন খাতে ব্যয় করাটা লাভজনক হবে – এসব বিষয় খুব ভালো করে হিসেব করতে হবে। আর এই হিসাব মনে মনে না – একদম খাতা কলম ও ক্যালকুলেটর নিয়ে বসে করতে হবে।
অনেকেই আছেন, হিসাব করতে পছন্দ করেন না। আপনি হয়তো এমন অনেক বড়লোক দেখেছেন, যাঁরা অনেক টাকা থাকার পরও খরচ করার আগে অনেক ভাবেন, অনেক কিছু হিসাব করে তারপর খরচ করেন। কারণ ধনী হওয়ার আগে থেকেই তাঁদের মাঝে এই অভ্যাসটি ছিল। অনেকে এটা পছন্দ না করলেও, আসলে তাঁদের ধনী হওয়ার পেছনে এই অভ্যাসটির অনেক বড় অবদান।
প্রতিটি টাকা খরচ করার আগে তাঁরা ভেবে নেন যে, টাকাটি যোগ্য স্থানে খরচ করা হচ্ছে কিনা।
খরচের হিসাবের বাইরেও আপনাকে অর্থনৈতিক পরিকল্পনা সাজাতে হবে। এর জন্যও আপনাকে হিসাবে দক্ষ হতে হবে।
আপনার হাতে যদি ১০ হাজার টাকা থাকে, তবে কিভাবে সেই টাকা কাজে লাগিয়ে আপনি আরও টাকা আয় করতে পারবেন – সেটা অবশ্যই আপনাকে হিসাব করে পরিকল্পনা করতে হবে।
একটু খেয়াল করলেই দেখবেন – যেসব ধনী লোক একদমই অশিক্ষিত – তাঁরাও হিসাবে পাকা হন। এমন অনেক ধনী ব্যক্তি আছেন, যাঁরা এক অক্ষর ইংরেজী পড়তে পারেন না – কিন্তু হিসাবে আপনি তাঁদের ঠকাতে পারবেন না।
ধনী হতে চাইলে হিসাবকে কখনওই না বলতে পারবেন না। নিজের চেষ্টায় ধনী হতে হলে আপনাকে অবশ্যই মোট আয়ের থেকে লাভ ক্ষতির হিসাব করা, খরচের হিসাব করা, ট্যাক্স হিসাব করা, বাজেট করা – ইত্যাদি বিষয়ে দক্ষ হতে হবে।
এটা খুব কঠিন কিছুও নয়। ফিজিক্স বা ক্যালকুলাসের জটিল অংক আপনাকে জানতে হবে না। সাধারণ যোগ, বিয়োগ, গুণ, ভাগ, শতকরা নির্ণয় – এগুলোই করতে হবে। মূল কথা হিসাবকে ভালোবাসতে হবে। চর্চা করা শুরু করলে এক সময়ে ভালো না লাগতে লাগতেই আপনি এতে দক্ষ হয়ে উঠবেন।
০২. আপনি টাকা জমানোতে অতিরিক্ত আগ্রহী
ধনী হওয়ার জন্য হিসেব করে খরচ করা ও টাকা জমানো অবশ্যই প্রয়োজন। কিন্তু কিছু মানুষ আছেন যাঁরা শুধু টাকা জমিয়েই যান। সব বাড়তি টাকাই যারা জমায়, তারা আসলে সত্যিকার অর্থে ধনী হতে পারে না।
আপনি হয়তো চাকরি করে প্রতি মাসে ১০ হাজার টাকা জমান। এবং চাকরি জীবনের শেষে হয়তো তা ৫০ লাখ বা ১ কোটিতে গিয়ে ঠেকবে। কিন্তু ২০-৩০ বছর ধরে ১ কোটি টাকা জমিয়ে জীবনের শেষে সেই টাকা দিয়ে আপনি আসলে তেমন কিছু করতে পারবেন না। আর ওটাকে সত্যিকার ধনী হওয়াও বলা যায় না।
এটা আসলে ধনী হওয়ার চেষ্টা নয়, এটা গরিব না হওয়ার চেষ্টা। মূলত ঝুঁকি নিতে ভয় পাওয়ার কারণেই মানুষ এটা করে।
এই বিষয়ে ৬ নম্বর পয়েন্টে আরও বিস্তারিত আলোচনা করা হবে।
০৩. আপনি আয়ের চেয়ে বেশি খরচ করেন, অথবা বাজে খরচ করেন
ইদানিং “লাইফস্টাইল মেইনটেন” কথাটা খুব জোরেশোরে শোনা যাচ্ছে। দামী মোবাইল থাকা, উইকএন্ডে দামী রেস্টুরেন্টে খাওয়া, বিদেশে ট্যুর দেয়া – এইসব না করলে আজকাল ‘প্রেস্টিজ’ রাখাটাই সমস্যা হয়ে গেছে। বিশেষ করে কর্পোরেট চাকরিজীবিদের মধ্যে এই প্রবণতা মহামারী আকার ধারণ করেছে।
এসব আপনি অবশ্যই করতে পারেন, কিন্তু সেটা হতে হবে এক্সট্রা টাকা দিয়ে। আপনার যখন টাকা উপচে পড়ছে, তখন আপনি এগুলো করতে পারেন – কিন্তু শুধুমাত্র প্রেস্টিজ রাখার জন্য নিজের বেতনের টাকা খরচ করে, বা এমনকি ক্রেডিট কার্ড এর ধার করা টাকা দিয়ে এগুলো করলে আপনার ভবিষ্যৎ অন্ধকার।
এই অভ্যাস বজায়ে থাকলে কর্মজীবন শেষে আপনি দারুন বিপদে পড়তে যাচ্ছেন।
এই বড়লোকি দেখাতে গিয়ে সত্যিকার বড়লোক হওয়ার পথ বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। লাখ টাকার ওপরে বেতন পেয়েও অনেকে মাসের শেষে ক্রেডিট কার্ড ভাঙিয়ে চলছে। অথচ তারা ইচ্ছা করলেই ৫০-৬০ হাজার টাকায় চলতে পারে, এবং বাকি টাকাটা বিনিয়োগ করে এক সময়ে নিজেই একটি ভালো ব্যবসার মালিক হতে পারে।
আপনার মাঝেও যদি এই ধরনের অভ্যাস থাকে, তবে আজই বাদ দিন। কোনওকিছু কিনতে না পারাটা কোনও লজ্জার বিষয় নয়। আপনার কলিগ বা বন্ধু লাখ টাকার আইফোন চালায় বলে আপনি হাজার টাকার এ্যান্ড্রয়েড চালাতে পারবেন না – এটা বোকার মত কথা। একটু বুদ্ধি খাটান আর হিসাব করুন, একটি আইফোন না কিনে আপনি ভবিষ্যতে কয়টা আইফোনের টাকা আয় করতে পারবেন?
যে জিনিসটা প্রয়োজন, এবং যা আপনি আপনার সাধ্যের মাঝে কিনতে পারবেন – শুধু সেটাই কিনুন। পকেটে ২ হাজার টাকা থাকলে ১৫০০ টাকার জামার বদলে ৫০০ টাকার জামা কিনুন। পারলে আরও কমে কেনার চেষ্টা করুন। এটাই ভবিষ্যতে সত্যিকার ধনী হওয়ার লক্ষণ।
দামী জিনিস কিনতে চাওয়া দোষের কিছু নয়। কিন্তু সাধ্যের বাইরে কেনাটা বোকামী। বরং টার্গেট সেট করুন যে, এই জিনিস আপনি যথেষ্ঠ টাকা হওয়ার পর কিনবেন। দেখবেন এই টার্গেটই আপনাকে নিজের আর্থিক অবস্থা পরিবর্তন করার জন্য কাজ করতে অনুপ্রেরণা দিচ্ছে।
০৪. আপনি ব্যাকগ্রাউন্ড নিয়ে চিন্তা না করেই মানুষের কথা শোনেন
আমরা অনেক সময়েই আশপাশের মানুষের পরামর্শ নিয়ে থাকি। আমাদের সমাজে একটা বিষয় প্রচলিত আছে – বয়সে বড় মানেই তার কথামত চলতে হবে। আপনি অবশ্যই বড়দের সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণ করবেন না – কিন্তু তার মানে এই নয় যে বয়সে বড় হলেই একজন সব বিষয়ে ভালো জানবেন।
ধরুন আপনি অনলাইনে ব্যবসা করতে চাইছেন। এখন এমন একজন ‘গুরুজন’ এসে যদি আপনাকে পরামর্শ দেয় – যার কিনা কম্পিউটার ধরতেই হাত কাঁপে – এবং আপনি তার কথামত চলেন – তবে আপনার ব্যর্থ হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি।
আপনি ধনী হতে চাইলে এমন মানুষের কথা মেনে চলুন, যারা নিজেরা ধনী হয়েছেন, অথবা ধনী হওয়ার পথে আছেন। পরামর্শ শুধু তাদের কাছ থেকেই নিন যাঁরা সেই বিষয়ে অভিজ্ঞ। আমাদের আশপাশে এমন অনেক লোকই আছে যারা জীবনে বড় হওয়ার উপদেশ দেয়, কিন্তু নিজেরা আসলে জীবনে কিছুই করতে পারেনি।
কথাগুলো শুনতে হয়তো অনেক কর্কশ লাগছে – কিন্তু বাস্তবতা এটাই।
যখন কারও কাছ থেকে উপদেশ নেবেন – তখন তার ব্যাকগ্রাউন্ডের কথা ভাববেন। এই লোক এখন যে অবস্থানে আছেন, আপনি কি সেই অবস্থানে যেতে চান? তিনি যা অর্জন করেছেন, আপনি কি তা অর্জন করতে চান? – যদি উত্তর হয়, ‘না’ – তবে তার পরামর্শ সম্ভবত আপনার কোনও উপকারে আসবে না।
এমন মানুষের পরামর্শ নিন, আপনি নিজে যাদের মত হতে পারলে খুশি হতেন। এমন মানুষ যারা আপনি যা অর্জন করতে চান – তা অর্জন করেছেন। শুধু ধনী হওয়া নয় – সব ক্ষেত্রেই এটা গুরুত্বপূর্ণ। আপনি যা-ই হতে চান না কেন, সেই ক্ষেত্রের সফল ও আশাবাদী মানুষদের সাথে সম্পর্ক করুন।
এমন মানুষের সাথে বন্ধুত্ব করুন ও সময় কাটান যারা সফল অথবা সফল হতে চায়। এরা আপনাকে সামনে চলতে উৎসাহ দেবে। এবং প্রয়োজনের সময়ে সঠিক নির্দেশনা দেবে।
০৫. আপনার মাঝে শৃঙ্খলার অভাব আছে, এবং আপনি নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন না
যদি নিজের চেষ্টায় ধনী হতে চান, তবে আপনাকে কষ্ট করতেই হবে। আর সেইসাথে নিজেকে কঠোর শৃঙ্খলার মাঝে আটকে ফেলতে হবে। রাতারাতি বড়লোক বলতে পৃথিবীতে কিছু নেই।
আপনি কি জানেন, ১০% এরও কম লটারী বিজয়ী তাঁদের টাকা ধরে রাখতে পারেন? হঠাৎ করে সাফল্য আসলে তা কোনওদিনই স্থায়ী হয় না। সত্যিকার ধনী হতে চাইলে আপনাকে দিনের পর দিন, গভীর মনোযোগ দিয়ে কঠোর পরিশ্রম করতে হবে। এর কোনও বিকল্প নেই।
আপনার সব কাজ সময়মত করতে হবে। কাজের সময়ে ঘুমানো, কাজের সময়ে বিনোদন – এইসব ভুলে যেতে হবে।
আপনি যদি ব্যবসা করে ধনী হতে চান, তবে প্রথমে আপনাকে আপনার পরিশ্রম আর মনোযোগের ওপরই সবচেয়ে বেশি নির্ভর করতে হবে। তারপর ধীরে ধীরে একটু একটু করে নিজের সাম্রাজ্য গড়ে তুলতে হবে।
জ্যাক মা, ইলন মাস্ক, বা জেফ বেজোস এর মত বিশ্বের সেরা ধনীরা এভাবেই কাজ করেছেন।
শৃঙ্খলা মেনে চলা মানুষ কাজের সময়ে কাজ করেন, ইচ্ছা অনিচ্ছার ধার ধারেন না। মুডকে পাত্তা দেন না। সেল্ফ ডেভেলপমেন্ট কোচ ও লেখক ব্রায়ান ট্রেসি তাঁর “দি পাওয়ার অব সেল্ফ ডিসিপ্লিন” বইতে বলেছেন, সাধারণ মানুষের পারফরমেন্স তাদের মুডের ওপর নির্ভর করে, আর অসাধারণ সফল মানুষরা যে মুডেই থাকেন না কেন, তাঁরা তাঁদের সেরা পারফরমেন্স দেয়ার চেষ্টা করেন।
মুড নিয়ন্ত্রণ করে কাজ করে যাওয়ার কারণেই তাঁরা সাধারণ মানুষের চেয়ে অনেক বেশি কাজ করতে পারেন, যা এক সময়ে তাঁদের আর্থিক দিক থেকেও অন্যদের চেয়ে ওপরে নিয়ে যায়।
আপনি যদি নিজেকেই নিয়ন্ত্রণ করতে না পারেন, তবে নিজের আর্থিক অবস্থাকে কিভাবে নিয়ন্ত্রণ করবেন?
০৬. আপনি সত্যিকার বিনিয়োগ করেন না
২ নম্বর পয়েন্টে আমরা অতিরিক্ত টাকা জমানোর অভ্যাস নিয়ে কথা বলেছিলাম। টাকা জমিয়ে জমিয়ে হয়তো আপনি উচ্চ মধ্যবিত্ত হতে পারবেন – কিন্তু সত্যিকার ধনী হতে পারবেন না। সত্যিকার ধনী হওয়ার জন্য প্রয়োজন বিনিয়োগ করা। যে ১ লক্ষ টাকা ব্যাংকে জমিয়ে রাখলে বছর শেষে কয়েক হাজার টাকা দেয়, সেই টাকাই বিনিয়োগ করলে প্রতি মাসে তা থেকে কয়েক হাজার টাকা আসতে পারে।
আপনার হাতে কিছু টাকা জমলে হিসাব করে বের করতে হবে যে কোন খাতে বিনিয়োগ করলে এই টাকা থেকে সবচেয়ে বেশি লাভ করা যাবে। এবং সেই খাতেই টাকাটি বিনিয়োগ করতে হবে।
প্রথমে ছোট ছোট বিনিয়োগ করে বিনিয়োগের অভ্যাস করুন। প্রথমেই বড় ঝুঁকি নেয়ার দরকার নেই। সমবায় ব্যবসা, কয়েকজন মিলে জমি কেনা – এই ধরনের ছোট ছোট বিনিয়োগ করতে থাকুন। তারপর ধীরে ধীরে বিনিয়োগের পরিমান বাড়াতে থাকুন। বিনিয়োগের পরিমান বাড়ার সাথে সাথে আপনার ব্যবসায়িক মেধা ও আয়ের পরিমানও বাড়তে থাকবে।
বিনিয়োগ মূলত দুই প্রকার। active এবং passive investment; – বা প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ বিনিয়োগ। প্রত্যক্ষ বিনিয়োগে আপনি সরাসরি কাজ করবেন। আপনার টাকার সাথে এর পেছনে সময়ও দিতে হবে। যেমন নিজের দোকান, ওয়েবসাইট – ইত্যাদি। পরোক্ষ বিনিয়োগে আপনাকে সাধারণত সময় দিতে হবে না। বাড়ি বা ফ্ল্যাট ভাড়া দেয়া পরোক্ষ বিনিয়োগের উদাহরণ, অথবা এরচেয়েও কম টাকা বিনিয়োগ করে আপনি লাভবান হতে পারেন। বিশ্বস্ত কারও ব্যবসায়ে টাকা খাটিয়ে লাভ পেতে পারেন।
এটা করার বদলে আপনার অভ্যাস যদি হয় শুধুই টাকা জমিয়ে রাখা, তবে সুদূর ভবিষ্যতেও আপনার সত্যিকার ধনী হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম।
রিচ ড্যাড পুওর ড্যাড বই অথবা জিরো টু ওয়ান ঘরানার আপনাকে এই ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করতে পারে।
মনে রাখবেন, টাকা জমিয়ে কেউ ওয়ারেন বাফেট বা স্যাম ওয়ালটন হতে পারেনি। ধনী হতে চাইলে বিনিয়োগের অভ্যাস করুন।
০৭. আপনার কোনও আর্থিক লক্ষ্য নেই
এটা খুবই ভয়ঙ্কর একটা বিষয়। বেশিরভাগ সময়েই, কোনওকিছু অর্জন করতে হলে তার জন্য নির্দিষ্ট লক্ষ্য ঠিক করতে হয়। আপনার যদি টার্গেট না থাকে, তবে আপনি পরিকল্পনাও করতে পারবেন না। আর পরিকল্পনা না করলে সফল হওয়া খুবই কঠিন।
ডাক্তার হতে গেলে যেমন সেই লক্ষ্যে পড়াশুনা করতে হয়, বড় খেলোয়াড় হতে গেলে যেমন প্রাকটিস করতে হয় – ধনী হতে হলেও আপনাকে বিশেষ কিছু কাজ করতে হবে।
ডাক্তার হওয়ার লক্ষ্য না থাকলে যেমন আপনি সেইরকম পড়াশুনা করবেন না, ধনী হওয়ার জন্য লক্ষ্য ঠিক না করলেও ধনী হতে পারবেন না।
শুধু ‘আমি ধনী হব’ – এই লক্ষ্য থাকলেই হবে না। আপনি কত টাকার মালিক হতে চান, কবে হতে চান – এসবও ঠিক করে রাখতে হবে। তাহলে নিজেই আপনি সেই পথে চলতে শুরু করবেন। যেদিন যত টাকার মালিক হওয়ার লক্ষ্য ঠিক করবেন, সেদিনই তত টাকা আপনার হবে – ব্যাপারটা সেরকম নয়। কিন্তু আপনি যদি লক্ষ্য ঠিক না করেন – তবে কাজ শুরু করাই হবে না। লক্ষ্য আসলে গন্তব্য আর পরিকল্পনা হল ম্যাপ। সব প্ল্যান যে কাজ করবে তা নয়। মাঝে মাঝে আপনি ভুল পথেও যেতে পারেন, কিন্তু লক্ষ্য ঠিক রাখলে সঠিক পথ অবশ্যই খুঁজে পাবেন।
বিঃদ্রঃ বাকি আরও ৭ টি অভ্যাসের বিবরণ থাকবে আগামীকাল ২ যা পর্বে, জানতে ফল করুন আমাদের পেজ