ছাড়লো না এই প্রকল্পকেও? দুর্নীতি মানতে না পাড়ায় কাজ বন্ধ করে দিলো বাসিন্দারা

বাঁকুড়ার সোনামুখী পুরসভায় ‘গ্রিন সিটি’ প্রকল্পের বরাদ্দ অর্থে দুর্নীতি এবং অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। সাধারণ মানুষের অভিযোগের ভিত্তিতে প্রকল্পের কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। তৃণমূল পরিচালিত সোনামুখী পুরসভার বিরুদ্ধে ওঠা এই অভিযোগকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক চাপানউতোর শুরু হয়েছে।

‘গ্রিন সিটি’ প্রকল্পের অধীনে সোনামুখী শহরের ১৫টি ওয়ার্ডে পথবাতি বসানোর জন্য ২ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়। কিন্তু এই অর্থের অব্যবস্থাপনা ও দুর্নীতি নিয়ে মাস দেড়েক আগে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেন সোনামুখীর বিজেপি বিধায়ক দিবাকর ঘরামী। সেই পোস্টের জেরে পুরসভা বিধায়ককে আইনি নোটিশ পাঠানোর হুমকি দেয়। তবে প্রকল্পের কাজ শুরু হতেই প্রকাশ্যে আসে ব্যাপক দুর্নীতি ও অনিয়ম।

বিরোধী কাউন্সিলর ও স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি—পথবাতির জন্য যে লাইটপোস্ট বসানোর কথা, তার ওজন টেন্ডারে ১৩৩ কেজি ধার্য থাকলেও বাস্তবে বসানো হচ্ছে মাত্র ৭০ কেজির খুঁটি।টেন্ডারে নির্দিষ্ট গভীরতার গর্ত করে খুঁটি বসানোর কথা থাকলেও তা মানা হচ্ছে না।খুঁটির নিচে কংক্রিটের বেসমেন্ট দেওয়ার কথা বলা হলেও তা দেওয়া হয়নি।এই দুর্বল খুঁটিগুলি সামান্য ঝড়-বৃষ্টিতেই ভেঙে পড়তে পারে, ফলে বড়সড় দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে।

এই অনিয়মের প্রতিবাদে সাধারণ মানুষ ও বিরোধী কাউন্সিলররা একজোট হয়ে প্রকল্পের কাজ বন্ধ করে দেন। তাঁরা লিখিতভাবে পুরসভাকে অভিযোগ জানিয়েছেন।

বিজেপি বিধায়ক দিবাকর ঘরামীর বক্তব্য— “আমি আগেই দুর্নীতির বিষয়ে ফেসবুকে পোস্ট করেছিলাম। বলেছিলাম, এই প্রকল্পে ২৫% কাটমানি নেওয়া হচ্ছে। পুরসভার চেয়ারম্যান আমায় চিঠি পাঠিয়ে আইনি পদক্ষেপের হুমকি দিয়েছিলেন। কিন্তু আজ স্থানীয় মানুষ নিজেরাই বুঝেছেন যে নিম্নমানের কাজ হচ্ছে, তাই তাঁরা কাজ বন্ধ করেছেন।”

তৃণমূল পরিচালিত পুরসভার উপ পুরপ্রধান সোমনাথ মুখোপাধ্যায় বলেন—“অভিযোগ পেয়েছি, তদন্ত শুরু হয়েছে। যদি কেউ দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত থাকে, তাহলে রেয়াত করা হবে না। কাজের গুণমান বজায় রাখতে হবে।”

তবে বিরোধীরা অভিযোগ তুলেছেন, পুরসভার উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারাই এই দুর্নীতির সঙ্গে সরাসরি জড়িত।

এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে প্রকল্পের ভবিষ্যৎ কী হবে এবং তদন্তে কী উঠে আসে, তা এখন দেখার বিষয়।