রাজ্যপালের সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর মামলা ‘চায়ে পে চর্চায়’ শেষ হোক, বার্তা দিলো হাইকোর্ট

রাজ্যপালের সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর আইনি লড়াই বন্ধ হোক, সমস্যা মিটুক আলোচনার মাধ্যমে—এমনই বার্তা দিল কলকাতা হাইকোর্ট। বৃহস্পতিবার বিচারপতি কৃষ্ণা রাও-এর বেঞ্চে মামলার শুনানির সময় এই মন্তব্য উঠে আসে। বিচারপতির পর্যবেক্ষণ, “রাজ্যপাল আর রাজ্য আদালতে লড়াই করছে—এটা কারও জন্যই ভালো নয়। আলোচনার মাধ্যমে এই সমস্যা মেটানো উচিত।”
শুনানির সময় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আইনজীবী গোপাল মুখোপাধ্যায় আদালতকে জানান, “আদালত যদি দুই পক্ষকে আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা মেটানোর নির্দেশ দেয়, তবে আমাদের আপত্তি নেই।” তাঁর এই বক্তব্যকে সমর্থন জানিয়ে মমতার আরেক আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “একটা ‘চায়ে পে চর্চায়’ সমস্যা মিটিয়ে ফেলা যেতে পারে।”
এ প্রসঙ্গে বিচারপতি বলেন, “আজ আমি মৌখিকভাবে বলেছি, পরে নির্দেশ দেওয়া যাবে।”
রাজ্যপালের করা মামলায় হলফনামা দাখিলের জন্য আরও সময় চান রাজ্যপালের আইনজীবী ধীরজ ত্রিবেদী। বিরোধী পক্ষের আইনজীবী এর বিরোধিতা করে বলেন, “এটাই যেন শেষ সময় হয়।”
বিচারপতি শেষ পর্যন্ত বলেন, “দুই সপ্তাহ সময় দেওয়া হল। আগামী ৯ এপ্রিল মামলার শুনানি হবে। এর মধ্যেই বিষয়টি মিটিয়ে নেওয়া উচিত।”
শুনানির সময় রাজ্যপাল ও মুখ্যমন্ত্রীর আইনজীবীদের মধ্যে বাকযুদ্ধও হয়। কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বকে আরও সহনশীল হওয়া উচিত।” জবাবে রাজ্যপালের আইনজীবী ধীরজ ত্রিবেদী বলেন, “আমার মক্কেল রাজনৈতিক ব্যক্তি নন।”
এরপর কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় পাল্টা বলেন, “রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব বলেই তিনি এই পদে এসেছেন।”
বিচারপতি রাজ্যপালের উদ্দেশে বলেন, “আপনি কি এই মামলা নিয়ে সিরিয়াস? রাজ্যপালের কি আদৌ মামলা করার প্রয়োজন ছিল?”
এই মামলার সূত্রপাত হয়েছিল গত বছরের জুন মাসে, দুই বিধায়কের শপথগ্রহণ সংক্রান্ত টানাপড়েন থেকে। বিধায়ক সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং রায়াত হোসেন সরকারের শপথগ্রহণ নিয়ে বিতর্ক গড়ায় কলকাতা হাইকোর্ট পর্যন্ত। রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস এই বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ চার জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন।
শুনানির মাত্র ২৪ ঘণ্টা আগে মুখ্যমন্ত্রীর তরফের আইনজীবী পরিবর্তন করা হয়, যা নিয়ে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে রাজনৈতিক মহলে।