Email-Facebook দেখতে পারেন IT অফিসার! সংসদে নতুন বিল পেশ, কী থাকছে প্রস্তাবে?

নয়া আয়কর বিলে আয়কর আধিকারিকদের করদাতাদের সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট, ব্যক্তিগত ইমেল, ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট, অনলাইন বিনিয়োগ অ্যাকাউন্ট এবং ট্রেডিং অ্যাকাউন্টে প্রবেশাধিকার দেওয়ার প্রস্তাব রাখা হয়েছে বলে বিভিন্ন রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে। কর ফাঁকি বা লুকানো সম্পত্তি সন্দেহ হলে এই নতুন ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারবে আয়কর দফতর। এই বিল পাস হলে কর সংক্রান্ত তদন্তের ক্ষেত্র আরও বিস্তৃত হবে বলে মনে করা হচ্ছে।
বর্তমান আয়কর আইন, ১৯৬১-এর ১৩২ ধারা অনুযায়ী, আয়কর আধিকারিকরা যদি মনে করেন কোনও ব্যক্তি কর ফাঁকি দিয়ে সম্পত্তি লুকিয়ে রেখেছেন, তাহলে তাঁরা তল্লাশি চালিয়ে তা বাজেয়াপ্ত করতে পারেন। তবে এখন পর্যন্ত এটি মূলত শারীরিক সম্পত্তি বা ব্যক্তিগত নথি-র ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য ছিল।
নয়া ২০২৬ সালের আয়কর বিল অনুযায়ী, এই অধিকার ডিজিটাল ক্ষেত্রেও প্রসারিত হতে চলেছে। এর ফলে, কর ফাঁকি ও গোপন সম্পত্তি লুকানোর সন্দেহ হলে আয়কর আধিকারিকরা কম্পিউটার সিস্টেম ও অনলাইন অ্যাকাউন্টে প্রবেশ করতে পারবেন।
১৩ ফেব্রুয়ারি সংসদে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন নতুন আয়কর বিলটি পেশ করেন। এই বিল অনুযায়ী, ‘ভার্চুয়াল ডিজিটাল স্পেস’ শব্দটি প্রথমবারের মতো সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে। এর ফলে আয়কর আধিকারিকরা এখন ইমেল সার্ভার, সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট, ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট, ট্রেডিং অ্যাকাউন্ট, ক্লাউড সার্ভার ও অন্যান্য ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের ওপরও তল্লাশি চালাতে পারবেন।
যদিও এই নতুন আইন কর ফাঁকি রোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে পারে, তবে ব্যক্তিগত গোপনীয়তার অধিকার নিয়ে প্রশ্ন উঠতে পারে বলে মনে করছে একাংশ।
সুপ্রিম কোর্টের কেএস পুত্তস্বামী মামলা (২০১৭)-র রায়ে বলা হয়েছিল, ব্যক্তিগত গোপনীয়তার অধিকার একটি মৌলিক অধিকার। ফলে, এই ধরনের নজরদারি করতে হলে তা আইনসিদ্ধ, যুক্তিসঙ্গত এবং প্রয়োজনীয় হতে হবে।
এই প্রস্তাবিত বিল নিয়ে ইতিমধ্যেই আলোচনার সূত্রপাত হয়েছে। অনেকেই মনে করছেন, ডিজিটাল অ্যাকাউন্টে প্রবেশের অধিকার দেওয়া হলে গোপনীয়তা লঙ্ঘিত হতে পারে। অন্যদিকে, কেন্দ্রীয় সরকার ও আয়কর দফতর মনে করছে, কর ফাঁকি কমাতে ও বেআইনি সম্পত্তি আটকাতে এটি কার্যকরী হতে পারে।
এখন দেখার বিষয়, এই বিল নিয়ে সংসদে কী ধরনের আলোচনা হয় এবং এর চূড়ান্ত রূপ কেমন হয়।