‘থানায় মেরে পুঁতে…’- বেল্ট দিয়ে মারধর, দেওয়া হয় মোমবাতির ছ্যাঁকা, ওসির নামে অভিযোগ AIDSO-র

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাম্প্রতিক ঘটনার প্রতিবাদে রাজ্যজুড়ে ছাত্র ধর্মঘটের ডাক দিয়েছিল সিপিএমের ছাত্র সংগঠন এসএফআই। ধর্মঘটকে ঘিরে উত্তেজনা ছড়ালেও পুলিশের বিরুদ্ধে ভয়ঙ্কর নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে মেদিনীপুর মহিলা থানার বিরুদ্ধে। এসইউসিআই-এর ছাত্র সংগঠন এআইডিএসও’র সমর্থকরা এবং বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্রীরা অভিযোগ করেছেন, থানার ওসি নির্মমভাবে তাঁদের উপর অত্যাচার চালিয়েছেন।

বুধবার এক সাংবাদিক সম্মেলনে চারজন মহিলা সমর্থক জানান, তাঁদের থানায় তুলে নিয়ে যাওয়া হয় এবং সেখানে নির্মম অত্যাচার চালানো হয়। অভিযোগ অনুযায়ী—মোমবাতি দিয়ে ছ্যাঁকা দেওয়া হয় তাঁদের হাতে ও পায়ে।বেল্ট খুলে এলোপাতাড়ি মারধর করেন ওসি।থানায় পুঁতে ফেলার হুমকি দেওয়া হয়।জাত তুলে গালিগালাজ করা হয়।সিসিটিভি ক্যামেরার নজরের বাইরে নিয়ে গিয়ে অত্যাচার চালানো হয়।

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষামন্ত্রীর গাড়ির ধাক্কায় এক ছাত্র আহত হওয়ার ঘটনার প্রতিবাদে সোমবার রাজ্যের সমস্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে ধর্মঘট ডাকে এসএফআই ও এআইডিএসও। সেই ডাকে সাড়া দিয়ে বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে যাচ্ছিলেন কয়েকজন সমর্থক। কিন্তু, অভিযোগ অনুযায়ী, পুলিশ তাঁদের ক্যাম্পাসে ঢোকার আগেই আটক করে থানায় নিয়ে যায় এবং সেখানেই চলে ভয়াবহ অত্যাচার।

এআইডিএসও সমর্থক সুশ্রীতা সোরেন জানান, “আমাদের মারধর করে মাটিতে ফেলে দেওয়া হয়। ওসি নিজে বেল্ট দিয়ে আমাদের মারেন। আমাদের মুখ থুবড়ে ফেলে কিল, ঘুষি মারা হয়। সিসিটিভির বাইরে নিয়ে গিয়ে অত্যাচার চালানো হয় এবং ক্ষমা চাইতে বলা হয়।”

শান্তিপূর্ণ আন্দোলনকারীদের ওপর এই ধরনের নির্যাতনের অভিযোগে রাজ্যজুড়ে নিন্দার ঝড় উঠেছে। আন্দোলনকারীদের প্রশ্ন—শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ করা কি অপরাধ?কেন তাঁদের উপর এতো নির্মম নির্যাতন চালানো হল?সিসিটিভির বাইরে নিয়ে গিয়ে অত্যাচার চালানোর মানে কী?

এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশের কোনো প্রতিক্রিয়া এখনো পাওয়া যায়নি। তবে, রাজ্যের বিরোধী দলগুলো পুলিশের এই ভূমিকার তীব্র নিন্দা করেছে এবং অভিযুক্তদের শাস্তির দাবি জানিয়েছে।

এই ঘটনার তদন্ত এবং সত্যতা যাচাই করার জন্য নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি তুলেছেন ছাত্র ও মানবাধিকার সংগঠনগুলিও।