যেন তীব্র ভূমিকম্প হয়েছে!-ফের ধসের আতঙ্ক খনি অঞ্চলে, এলাকা ছাড়ছেন বাসিন্দারা

পশ্চিম বর্ধমানের অন্ডালের খাস কাজোড়া কোলিয়ারি এলাকায় ফের ধসের আতঙ্ক ছড়িয়েছে। মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা নাগাদ পিটি কাজোড়া এলাকায় ধস নামার ঘটনায় স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে চরম উৎকণ্ঠা দেখা দিয়েছে। ধসের তীব্রতা এতটাই বেশি যে, এলাকার মানুষ বাড়ি ছাড়তে বাধ্য হচ্ছেন। একটি বেসরকারি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলও এই ধসের কবলে পড়েছে, যা পরিস্থিতির গুরুত্ব আরও বাড়িয়ে তুলেছে।

ধসের কারণে স্কুলটির দেওয়ালে ফাটল ধরেছে এবং ছাদের অবস্থাও শোচনীয়। স্থানীয়দের আশঙ্কা, যে কোনও দিন স্কুলটি পুরোপুরি ভেঙে পড়তে পারে। দিনের বেলায় স্কুল চলাকালীন এমন ঘটনা ঘটলে বড়সড় বিপর্যয় ঘটার সম্ভাবনা ছিল। এছাড়া, ধসের জেরে জনবসতি এলাকায় একটি বাড়ির ছাদ ভেঙে পড়ে একটি চারচাকা গাড়ি ও একটি বাইক চাপা পড়েছে।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, খনি থেকে কয়লা উত্তোলনের পর শূন্যস্থান পূরণে পূর্বে বালি ব্যবহার করা হতো। কিন্তু বর্তমানে ইস্টার্ন কোলফিল্ডস লিমিটেড (ইসিএল) বালির বদলে এক ধরনের ডাস্ট ব্যবহার করছে, যা সঠিকভাবে শূন্যস্থান পূরণ করতে পারছে না। এর ফলেই খনি এলাকায় বারবার ধসের ঘটনা ঘটছে বলে অভিযোগ তাঁদের।

এলাকার বাসিন্দারা ইসিএল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে উদাসীনতার অভিযোগ তুলেছেন। তাঁদের দাবি, ধসপ্রবণ এলাকা হিসেবে চিহ্নিত হলে আগাম নোটিশ দেওয়া উচিত ছিল। স্থানীয় বাসিন্দা আনন্দ বার্নওয়াল বলেন, “যেভাবে ধস হয়েছে, তাতে আতঙ্ক ছড়ানো স্বাভাবিক। মঙ্গলবার রাতে ঘটনার পর ইসিএল আধিকারিকরা আমাদের এলাকা ছেড়ে চলে যেতে বলেছেন। কিন্তু আমরা যাব কোথায়? পরিবার নিয়ে কি গাছতলায় থাকতে হবে?”

ধসে ক্ষতিগ্রস্ত স্কুলটিতে মঙ্গলবার বেলা বারোটা পর্যন্ত ক্লাস চলেছে। এলাকাবাসীর আশঙ্কা, ধসের প্রবণতা ধীরে ধীরে বাড়ছে এবং ভবিষ্যতে আরও বড় ধসের ঘটনা ঘটতে পারে। বুধবার সকালেও এলাকার মানুষের চোখে-মুখে আতঙ্কের ছাপ স্পষ্ট। তাঁরা জানান, জীবনের ঝুঁকি নিয়ে রাত কাটাতে হচ্ছে।

ইসিএলের তরফে এখনও কোনও কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয়রা দাবি করছেন, কর্তৃপক্ষের গাফিলতির কারণেই এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। ঘটনার পর এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন এলাকাবাসী।