“চোখে আঙুল গুঁজে দিয়ে মার!”- গণপিটুনিতে যুবকের মৃত্যু, দমদমে মারাত্মক ঘটনা

দক্ষিণ দমদমে একটি ভয়ঙ্কর ঘটনা ঘটে গেল বুধবার সকালে। দুই ব্যক্তির মধ্যে মারামারির জেরে একজনের চোখ উপড়ে নেওয়ার চেষ্টা এবং পরে গণপিটুনিতে অপরজনের মৃত্যু—এই ঘটনায় স্তম্ভিত এলাকাবাসী। ঘটনাটি ঘটেছে দক্ষিণ দমদম পুরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের প্রমোদনগরে। মৃত যুবকের নাম গোকুল মণ্ডল (৪৩)। অপরদিকে, চোখে গুরুতর আঘাতপ্রাপ্ত প্রদীপ সরকার নামে এক যুবক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
বুধবার সকালে মত্ত অবস্থায় প্রদীপ সরকার রাস্তা দিয়ে হাঁটছিলেন। ভারসাম্য হারিয়ে তিনি গোকুল মণ্ডলের বাড়ির দরজার সামনে পড়ে যান। এ সময় গোকুল বাইরে এসে প্রদীপের সঙ্গে বচসায় জড়িয়ে পড়েন। কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে দুজনের মধ্যে হাতাহাতি শুরু হয়। রাগের মাথায় গোকুল প্রদীপের বুকের ওপর বসে তাঁর দুই চোখে আঙুল ঢুকিয়ে উপড়ে ফেলার চেষ্টা করেন। এতে প্রদীপের চোখ দুটি প্রায় ঠিকরে বেরিয়ে আসার উপক্রম হয়। গভীর ক্ষতের ফলে তাঁর চোখ থেকে গলগল করে রক্ত পড়তে থাকে। অভিযোগ, এরপর গোকুল তাঁকে ঘরের ভেতরে ঢুকিয়ে আরও মারধর করেন।
প্রদীপের চিৎকার শুনে এলাকার লোকজন ছুটে আসেন। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে তাঁরা প্রদীপকে বাঁচাতে এগিয়ে যান। এরপরই উত্তেজিত জনতা গোকুলকে ধরে মারধর শুরু করে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় পুলিশ। আশঙ্কাজনক অবস্থায় গোকুলকে প্রথমে দমদম পুর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তাঁর অবস্থার অবনতি হলে আরজি কর হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। অন্যদিকে, প্রদীপকে মধ্যমগ্রামের একটি বেসরকারি চোখের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাঁর অবস্থাও আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে।
পুলিশ জানিয়েছে, এ ঘটনায় অনিচ্ছাকৃত খুনের মামলা রুজু করা হয়েছে। গোকুলের মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার পর তাঁর মৃত্যুর সঠিক কারণ নিশ্চিত হওয়া যাবে। তদন্তে নেমে পুলিশ ঘটনার বিস্তারিত খতিয়ে দেখছে।
এলাকার বাসিন্দারা জানান, গোকুল একাই থাকতেন। তাঁর ব্যবহার নিয়ে এলাকায় অভিযোগ ছিল। বাচ্চারা তাঁর বাড়ির কাছে খেললে তিনি গরম জল ছুড়ে দিতেন। এমনকি, অতীতে কয়েকজনকে কামড়ে দেওয়ার মতো ঘটনাও ঘটিয়েছিলেন বলে দাবি করেছেন অনেকে। এই ঘটনার পর এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়েছে। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে তৎপর রয়েছে।