বাণিজ্য যুদ্ধে নতুন মোড়! আরও পণ্যের ওপর শুল্ক চাপানোর ঘোষণা ট্রাম্পের

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আবারও বাণিজ্য শুল্ক সংক্রান্ত কঠোর অবস্থান নিলেন। মঙ্গলবার মায়ামিতে এক সভায় ভাষণ দেওয়ার সময় তিনি জানান, গাড়ি, সেমিকন্ডাক্টর, চিপ, মেডিক্যাল পণ্য, ওষুধ এবং কাঠের তক্তার মতো বেশ কিছু পণ্যের উপর নতুন শুল্ক আরোপ করবেন।

প্রতিশোধমূলক শুল্ক নাকি অভ্যন্তরীণ উৎপাদনকে উৎসাহ?
এই ঘোষণার মাধ্যমে আগামী মাস থেকে বা যত দ্রুত সম্ভব নতুন শুল্ক চালু করার পরিকল্পনার কথা জানান ট্রাম্প। তবে, এই শুল্ক ঠিক কী পরিমাণে ধার্য হবে, সে সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু জানাননি তিনি।

এর আগে ট্রাম্প “প্রতিশোধমূলক শুল্ক” চাপানোর কথা বলেছিলেন, বিশেষ করে ভারতের মতো দেশগুলোর বিরুদ্ধে, যেখানে আমেরিকান পণ্যের উপর উচ্চ শুল্ক আরোপ করা হয়। ট্রাম্পের দাবি, ভারতে ব্যবসা করা কঠিন হয়ে পড়েছে কারণ ভারতীয় সরকার আমেরিকান পণ্যের উপর বেশি শুল্ক আরোপ করে থাকে। তাই “যে দেশ আমেরিকার পণ্যের উপর যতটা শুল্ক ধার্য করবে, আমেরিকাও সেই দেশের উপর একই হারে শুল্ক চাপাবে”, এমনটাই ঘোষণা করেছিলেন তিনি।

নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে বৈঠকের আগেই ট্রাম্প প্রতিশোধমূলক শুল্কের পরিকল্পনার ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। মোদী আমেরিকা সফর শেষ করে ফিরতেই, নতুন শুল্ক আরোপের বিষয়ে চূড়ান্ত ঘোষণা করেন ট্রাম্প। ১৯ ফেব্রুয়ারি মায়ামির সভায় তিনি কার্যত সেই ঘোষণাকেই পুনরায় তুলে ধরেন।

১৪ ফেব্রুয়ারি ট্রাম্প বলেছিলেন, ২ এপ্রিল এই নতুন শুল্ক সংক্রান্ত বিশদ ঘোষণা করবেন। বিশেষ করে গাড়ি ও বাইকের উপর আমদানি শুল্ক বাড়ানো হবে, যাতে বিভিন্ন বহুজাতিক সংস্থাগুলো আমেরিকার মাটিতেই উৎপাদনে উৎসাহিত হয়।

এদিকে, ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ ইলন মাস্ক ভারতে টেসলার কারখানা চালু করতে পারেন বলে শোনা যাচ্ছে। এই বিষয়টি নিয়েও ট্রাম্প যে খুব একটা খুশি নন, তা তিনি প্রকাশ্যেই জানিয়েছেন।

এই পরিস্থিতিতে, ভারত কিছু মার্কিন পণ্যের উপর শুল্ক ছাড় দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে। মার্কিন বোরবন হুইস্কির উপর ১৫০% শুল্ক কমিয়ে ১০০% করা হয়েছে, যার ফলে জিম বিমের মতো জনপ্রিয় ব্র্যান্ডের দাম ভারতে কমতে পারে।

তাছাড়া, ভারতের সাম্প্রতিক বাজেটে হারলে ডেভিডসনের মোটরসাইকেলের উপর শুল্ক আরও ১০% কমানো হয়েছে। এর আগে ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে এই শুল্ক ৫০% কমানো হয়েছিল।

ট্রাম্পের নতুন শুল্ক নীতি কি শুধুমাত্র বাণিজ্য যুদ্ধের অংশ, নাকি এর লক্ষ্য মার্কিন অভ্যন্তরীণ শিল্পকে সুরক্ষা দেওয়া—এই প্রশ্ন এখন আলোচনার কেন্দ্রে। আগামী এপ্রিল মাসে ট্রাম্পের বিস্তারিত ঘোষণার পরেই বোঝা যাবে, এই নীতি ভারতের মতো উন্নয়নশীল অর্থনীতির উপর কী প্রভাব ফেলবে।