“আমি ফিরব, বদলা নেবোই, আল্লাহ আমায়…?”-ইউনূস সরকারকে ফের হুঁশিয়ারি দিলেন শেখ হাসিনা

বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা সম্প্রতি বিক্ষোভকারীদের হামলায় নিহত পুলিশ সদস্যদের বিধবা স্ত্রীদের সঙ্গে একটি ভার্চুয়াল মতবিনিময় সভায় অংশ নেন। এ সময় তিনি দেশে ক্রমবর্ধমান জঙ্গি কর্মকাণ্ডের তীব্র নিন্দা জানান এবং অভিযোগ করেন যে নোবেল পুরস্কার বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নীতির কারণে বাংলাদেশ একটি ‘জঙ্গি রাষ্ট্রে’ পরিণত হয়েছে।
শেখ হাসিনা বলেন, “এটি সরকার পতনের ষড়যন্ত্রের অংশ, যার অধীনে ধানমন্ডিতে বঙ্গবন্ধু স্মৃতিস্তম্ভ (জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক বাসভবন) ভেঙে ফেলা হয়েছিল।” তিনি নিহত পুলিশ সদস্যদের পরিবারগুলোর পাশে দাঁড়ানোর প্রতিশ্রুতি দেন এবং বলেন, “প্রতিটি পীড়িত পরিবারকে সাহায্য করা হবে এবং খুনিদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
“আমি ফিরে আসব এবং পুলিশ সদস্যদের মৃত্যুর প্রতিশোধ নেব”
গত ছাত্র আন্দোলনের সময় সিরাজগঞ্জে পুলিশ সদস্যদের ওপর হামলার কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, “আমি ফিরে আসব এবং আমাদের পুলিশ সদস্যদের মৃত্যুর প্রতিশোধ নেব।” তিনি আরও বলেন, “ইউনূসের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারে একজন স্বঘোষিত ছাত্রনেতা আছেন, যিনি বলেছেন যে পুলিশ সদস্যদের হত্যা ছাড়া বিপ্লব সম্ভব নয়। আমাদের এই নৈরাজ্যের অবসান ঘটাতে হবে।”
সিরাজগঞ্জের হামলায় এক ডজনেরও বেশি পুলিশ অফিসার নিহত হন এবং কয়েকজনের মৃতদেহ পুড়িয়ে ফেলা হয়। এই হিংসাত্মক ঘটনায় শেখ হাসিনা গভীর ক্ষোভ প্রকাশ করেন এবং আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার ওপর জোর দেন।
“আল্লাহ আমাকে দ্বিতীয় জীবন দিয়েছেন”
গত ৫ আগস্টের হিংসাত্মক ঘটনা থেকে রক্ষা পাওয়ার অভিজ্ঞতা শেয়ার করে শেখ হাসিনা বলেন, “আল্লাহ আমাকে দ্বিতীয় জীবন দিয়েছেন এবং আমি বিশ্বাস করি এটি একটি উদ্দেশ্যের জন্য।” তিনি আরও যোগ করেন, “যারা বাংলাদেশকে জঙ্গি রাষ্ট্রে পরিণত করেছে এবং মানবাধিকার লঙ্ঘন করছে, তারা একদিন আইনের মুখোমুখি হবে। আল্লাহ আমাদের সঙ্গে আছেন, এবং আমি ন্যায়বিচার করব।”
বর্তমান সরকারের সমালোচনা
শেখ হাসিনা বর্তমান সরকারের অর্থনৈতিক ও নিরাপত্তা নীতির তীব্র সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, “ছয় মাসেরও বেশি সময় কেটে গেছে, তবুও হিংসা অব্যাহত রয়েছে। এখন আমি শুনছি যে তিনি অপারেশন ডেভিল হান্ট শুরু করবেন। তিনি দেশ চালাতে অক্ষম। অর্থনীতি সংকটে, আইনশৃঙ্খলার অবনতি হচ্ছে এবং জননিরাপত্তা হুমকির মুখে।”
তিনি আরও বলেন, “বর্তমান সরকারের নীতির কারণে দেশে অস্থিরতা ও জঙ্গিবাদ বৃদ্ধি পেয়েছে। এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য প্রয়োজন একটি জবাবদিহিমূলক ও গণতান্ত্রিক সরকার।”
শেখ হাসিনা তার বক্তব্যে বাংলাদেশের জনগণের প্রতি সংহতি প্রকাশ করেন এবং বলেন, “আমরা আবারও একটি শান্তিপূর্ণ ও উন্নত বাংলাদেশ গড়ে তুলব।”
এই ভার্চুয়াল সভায় অংশগ্রহণকারী বিধবা পরিবারগুলোর পক্ষ থেকে শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা হয় এবং নিহত পুলিশ সদস্যদের জন্য ন্যায়বিচার দাবি করা হয়।