বিশেষ: কমার্স নিয়ে পড়লে রয়েছে ৫টি দুর্দান্ত কেরিয়ার অপশন, মোটা মাইনের চাকরি গ্যারান্টি

দ্বাদশ শ্রেণী পাস করার পর অনেক শিক্ষার্থী ক্যারিয়ার নিয়ে বিভ্রান্ত হন। তবে চিন্তার কোনো কারণ নেই। যদি আপনি বাণিজ্য (Commerce) বিভাগ থেকে দ্বাদশ শ্রেণী পাশ করে থাকেন, তাহলে আপনার সামনে রয়েছে অসংখ্য সম্ভাবনাময় ক্যারিয়ারের বিকল্প। এমন অনেক কোর্স রয়েছে, যেগুলো করে আপনি সহজেই উচ্চ বেতনের চাকরি পেতে পারেন। চলুন জেনে নেওয়া যাক কিছু জনপ্রিয় ও লাভজনক কোর্স সম্পর্কে।

১. ব্যাচেলর অফ কমার্স (B.Com)
বি.কম একটি তিন বছরের স্নাতক কোর্স, যেখানে ফিনান্স, অ্যাকাউন্টিং, ট্যাক্সেশন ও ট্রেড সংক্রান্ত বিষয় শেখানো হয়। বি.কম সম্পন্ন করার পর আপনি চার্টার্ড অ্যাকাউন্টেন্সি (CA), কোম্পানি সেক্রেটারি (CS) বা মাস্টার অফ বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (MBA) করতে পারেন। এই ডিগ্রির মাধ্যমে অ্যাকাউন্টিং, ট্যাক্সেশন, ব্যাংকিং, ফিনান্স এবং অপারেশন ম্যানেজমেন্টের মতো ক্ষেত্রে ক্যারিয়ার গড়া সম্ভব।

২. বি.কম (অনার্স)
বি.কম (অনার্স) সাধারণ বি.কম-এর তুলনায় আরও বিশেষায়িত একটি কোর্স। এখানে শিক্ষার্থীরা মার্কেটিং, ফিনান্স ম্যানেজমেন্ট, আন্তর্জাতিক বাণিজ্য, ই-কমার্স, ব্যাংকিং, হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট (HRM) ইত্যাদির উপর গভীর জ্ঞান লাভ করতে পারেন। যারা ফিনান্স ও অ্যাকাউন্টিংয়ে ক্যারিয়ার গড়তে চান, তাদের জন্য এটি উপযুক্ত।

৩. বি.কম – অ্যাকাউন্টিং ও ফিন্যান্স
এই কোর্সটি মূলত তাদের জন্য যারা অ্যাকাউন্টিং ও ফিনান্সের ক্ষেত্রে ক্যারিয়ার গড়তে চান। এটি শেষ করার পর শিক্ষার্থীরা ব্যাংক, কর্পোরেট ফার্ম ও ফিনান্সিয়াল কোম্পানিতে কাজের সুযোগ পেতে পারেন।

৪. বি.কম – ব্যাংকিং ও বিমা
যদি আপনি ব্যাংকিং ও বিমা খাতে ক্যারিয়ার গড়তে চান, তাহলে এই কোর্সটি আপনার জন্য আদর্শ। এটি তিন বছরের স্নাতক ডিগ্রি, যেখানে অর্থনীতি, ব্যাংকিং, বিমা আইন ও নীতি নিয়ে পড়ানো হয়। যারা ব্যাংকিং খাতে কাজ করতে চান, তাদের জন্য এটি একটি চমৎকার বিকল্প।

৫. চার্টার্ড অ্যাকাউন্টেন্সি (CA)
চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট হওয়া বাণিজ্য বিভাগের সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ ও চ্যালেঞ্জিং ক্যারিয়ারের মধ্যে একটি। ইনস্টিটিউট অফ চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টস অফ ইন্ডিয়া (ICAI) এই কোর্স পরিচালনা করে। সিএ হতে হলে আপনাকে তিনটি ধাপে পরীক্ষা দিতে হবে – CA ফাউন্ডেশন, CA ইন্টারমিডিয়েট ও CA ফাইনাল।

৬. কোম্পানি সেক্রেটারি (CS)
কোম্পানি সেক্রেটারি একজন আইন ও নীতি পরামর্শক, যিনি কোম্পানির কর্পোরেট ম্যানেজমেন্ট ও প্রশাসনিক দায়িত্ব সামলান। এই কোর্সটি ইনস্টিটিউট অফ কোম্পানি সেক্রেটারিজ অফ ইন্ডিয়া (ICSI) দ্বারা পরিচালিত হয় এবং এটি তিনটি ধাপে বিভক্ত – ফাউন্ডেশন, এক্সিকিউটিভ ও প্রফেশনাল।

৭. কস্ট ম্যানেজমেন্ট অ্যাকাউন্টেন্সি (CMA)
CMA একটি অত্যন্ত চাহিদাসম্পন্ন কোর্স, যা ইনস্টিটিউট অফ কস্ট অ্যাকাউন্ট্যান্টস অফ ইন্ডিয়া (ICAI) পরিচালনা করে। এটি কস্ট অ্যাকাউন্টিং, ফিনান্সিয়াল অ্যানালাইসিস ও কস্ট কন্ট্রোল বিষয়ে শিক্ষার্থীদের দক্ষ করে তোলে।

৮. ব্যাচেলর অফ বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (BBA)
BBA হলো ব্যবসায়িক ব্যবস্থাপনার একটি স্নাতক কোর্স, যেখানে মার্কেটিং, মানবসম্পদ, ফিনান্স ও আন্তর্জাতিক বাণিজ্য শেখানো হয়। এই কোর্স শেষে MBA করে কর্পোরেট জগতে আরও বড় সুযোগ পাওয়া সম্ভব।

৯. CMA (Certified Management Accountant)
CMA কোর্সটি ফিনান্স ও ম্যানেজমেন্ট অ্যাকাউন্টিংয়ের উপর ভিত্তি করে তৈরি। এটি করতে হলে শিক্ষার্থীদের প্রথমে একটি ফাউন্ডেশন কোর্স করতে হয়। এই ডিগ্রিধারীরা আন্তর্জাতিক কোম্পানিগুলোর আর্থিক পরিচালনায় বিশেষ ভূমিকা রাখতে পারেন।

বাণিজ্য বিভাগে উচ্চশিক্ষার অসংখ্য পথ খোলা রয়েছে। আপনি যদি ফিনান্স, অ্যাকাউন্টিং, ব্যাংকিং বা ম্যানেজমেন্টের কোনো ক্ষেত্র বেছে নেন, তাহলে ভবিষ্যতে আপনার ক্যারিয়ারের জন্য এটি অত্যন্ত লাভজনক হতে পারে। তাই সঠিক পরিকল্পনা করে আপনার পছন্দের ক্যারিয়ার গড়ে তুলুন।