বাংলাদেশ এখনও অশান্ত, ভাঙচুর একাধিক সিমেনা হল! উদ্বেগে পরিচালক- প্রযোজকরা

বাংলাদেশের বর্তমান অস্থিরতা দেশটির সামাজিক, রাজনৈতিক এবং সাংস্কৃতিক জীবনের প্রতিটি স্তরে ছায়া ফেলেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগের পর দেশটিতে যে অস্থিরতা দেখা দিয়েছে, তা দিন দিন ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে।
সংস্কৃতির কেন্দ্রে হামলা:
বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘর এবং জনপ্রিয় লোকসঙ্গীত ব্যান্ড “জলের গান”-এর সদস্য রাহুল আনন্দের বাড়িতে হামলার ঘটনা বাংলাদেশের সংস্কৃতির কেন্দ্রকে লক্ষ্য করে চালানো হামলার একটি ভয়াবহ উদাহরণ। রাহুল আনন্দের বাড়িতে লাগানো আগুনে তাঁর অসংখ্য বাদ্যযন্ত্র নষ্ট হয়ে গেছে।
শিল্পীদের প্রতিক্রিয়া:
বাংলাদেশের জনপ্রিয় শিল্পীরা এই ঘটনায় গভীরভাবে আহত এবং উদ্বিগ্ন। আজমেরি হক বাঁধন, শাকিব খান, নুসরত ইমরোজ তিসা, জিয়াউল ফারুক অপূর্ব, আফরান নিশোর মতো শিল্পীরা সোশ্যাল মিডিয়ায় দেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
প্রেক্ষাগৃহে ভাঙচুর:
এরপর প্রেক্ষাগৃহে ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। মোস্তাফা সারওয়ার ফারুকী এবং অনন্য মামুনের মতো চলচ্চিত্র নির্মাতারা এই ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
কেন এই হামলা?
এই ধরনের হামলার মূল কারণ হিসেবে বিশেষজ্ঞরা রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং সাম্প্রদায়িক উত্তেজনাকে দায়ী করছেন। এই হামলাগুলি শুধুমাত্র বাংলাদেশের সংস্কৃতির উপরই আঘাত করেছে তা নয়, দেশটির গণতান্ত্রিক মূল্যবোধকেও চ্যালেঞ্জ করেছে।
সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রেক্ষাগৃহ ভাঙচুরের ছবি শেয়ার করে পরিচালক- প্রযোজক অনন্য মামুন লেখেন, “আমার দেশের চলচ্চিত্র যখন ঘুরে দাড়াতে শুরু করেছে, ঠিক তখন এত বড় আঘাত। আজ সিনেপ্লেক্স আছে বলে চলচ্চিত্র দেখার জন্য নতুন দর্শক আসতে শুরু করেছে। আমরা বড় বাজেটের চলচ্চিত্র বানানোর স্বপ্ন দেখি। রাজশাহী হাইটেক পার্কে ৫ আগস্ট সারা রাত লুটপাট হয়েছে, সিনেপ্লেক্স ভেঙ্গে চুরমার! ওয়াশরুমের কমোড , পানির ট্যাপটাকেও ছাড়েনি। শুনেছি সিরাজগঞ্জের রুটস্ সিনেপ্লেক্স ও লুটপাট করা হয়েছে। সবাইকে অনুরোধ করবো চলচ্চিত্র বাঁচাতে হলে সিনেপ্লেক্স বাঁচাতে হবে।”
পরিচালক মোস্তাফা সারওয়ার ফারুকী লেখেন, “আমি মনে করি, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর প্রথম কাজ হবে ৩২ নম্বরের বাড়ির পুনর্বাসনের কাজ শুরু করা। এই বাড়িকে আগের চেহারায় ফিরিয়ে নিয়ে আসা এবং এ বাড়ি সম্পর্কিত বিভিন্ন ছবি, স্মৃতিস্মারক যা যা পাওয়া যায় তা দিয়ে যাদুঘর আবার চালু করা। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান প্রফেসর ইউনূসের উচিত হবে নিজেই বাড়িটা ভিজিট করা। তিনি এই বাড়ি ভিজিট করলে একটা সিগনিফিকেন্স তৈরি হবে, একটা বার্তা দেবে। এছাড়া দেশের বিভিন্ন জায়গায় বীরশ্রেষ্ঠদের ভাস্কর্য ভাঙচুর করা হয়েছে। এগুলো সব ঠিকঠাক করে আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে হবে। বাংলাদেশের মন্দির থাকবে, মসজিদ থাকবে, প্যাগোডা থাকবে, গির্জা থাকবে, বোরকা থাকবে, জিনস থাকবে। সবকিছুই থাকবে বহুজনের এই সমাজে।”