আমেরিকায় বাংলাদেশ কনস্যুলেটে তাণ্ডব চালালো বাংলাদেশিরা, সরানো হল মুজিবের ছবি

“নিউ ইয়র্কের বাংলাদেশি কনস্যুলেটে একদল বাংলাদেশি, নিজেদেরকে ‘বিএনপি সমর্থক’ বলে পরিচয় দিয়ে, জোরপূর্বক ঢুকে পড়ে এবং সেখানে ব্যাপক জোরজুলুম চালিয়েছে। এই ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, এই ব্যক্তিরা জোর করে কনস্যুলেট থেকে শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি সরিয়ে ফেলতে বাধ্য করছে। এই সময় তাদের পরনে লাল রঙের টি-শার্ট ছিল। দূতাবাসের কর্মচারীরা যখন তাদের বাধা দিতে চেয়েছিলেন, তখনও তারা তাদের চাপে বোধ করে শেখ মুজিবের ছবি সরিয়ে দিতে বাধ্য হয়েছেন।
এই ঘটনাটি ঘিরে নিউ ইয়র্কের বাংলাদেশি কনস্যুলেটে এমন ঘটনা কীভাবে ঘটতে পারল, সে নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। অন্যদিকে, বাংলাদেশে হাসিনা সরকারের পতনের পর আমেরিকা প্রশাসন সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছে বলে স্টেট ডিপার্টমেন্টের মুখপাত্রের একটি বিবৃতিতে ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে।”
স্টেট ডিপার্টমেন্টের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার বাংলাদেশ প্রসঙ্গে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর পদ থেকে পদত্যাগ করে বাংলাদেশ ত্যাগ করার ঘোষণা করেছেন। আমরা সেই রিপোর্ট দেখেছি। আমরা সতর্কতার সাথে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি। যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের জনগণের পাশে দাঁড়িয়ে আছে। আমরা সব পক্ষকে সহিংসতা থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানাই। গত কয়েক সপ্তাহে অনেক প্রাণ হারিয়েছে। তবে আমরা ভবিষ্যতের দিনগুলিতে শান্তি ও সংযমের আহ্বান জানাই। আমরা অন্তর্বর্তী সরকারের ঘোষণাকে স্বাগত জানাই এবং বাংলাদেশের আইন অনুযায়ী যে কোনোও পরিবর্তনের আহ্বান জানাই। গত কয়েক সপ্তাহে বাংলাদেশে যে মানবাধিকার লঙ্ঘন হয়েছে, হতাহতের ঘটনা ঘটেছে, সেই সব রিপোর্টে আমরা গভীরভাবে দুঃখিত।’
ব্রিটিশ বিদেশ সচিব ডেভিড ল্যামি বাংলাদেশ নিয়ে বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষের স্বার্থে রাষ্ট্রসংঘের নেতৃত্বে স্বতন্ত্র তদন্ত হওয়া উচিত। গত কয়েক সপ্তাহ ধরে সেখানে যা হয়েছে, তার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত হওয়ার প্রয়োজন। বাংলাদেশে গত দুই সপ্তাহে নজিরবিহীন সহিংসতা এবং মর্মান্তিক প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে। সেনাবাহিনী প্রধানের তরফ থেকে এই সময়কে ক্রান্তিকাল ঘোষণা করা হয়েছে। সহিংসতা বন্ধ করতে, শান্তি পুনরুদ্ধার করতে, হিংসা কমিয়ে আনতে এবং প্রাণহানি রোধ করতে এখন সব পক্ষকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। বাংলাদেশে একটি শান্তিপূর্ণ ও গণতান্ত্রিক ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করতে পদক্ষেপ করতে চায় ব্রিটেন। ব্রিটেন এবং বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে গভীর সম্পর্ক রয়েছে এবং কমনওয়েলথ মূল্যবোধ রয়েছে।’