জ্বলছে ওপার, সংকটে এপারে সীমান্তও রুদ্ধ, থমকে গিয়েছে ব্যবসা-বাণিজ্য

বাংলাদেশে সাম্প্রতিক অস্থিরতার জেরে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে উত্তেজনা বিরাজ করছে। সোমবার, পেট্রাপোল সীমান্তে সেনা মোতায়েন করা হয়েছে, যার ফলে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য এবং যাতায়াত ব্যবস্থা ব্যাহত হয়েছে।

সোমবার সকালে কিছু পণ্যবাহী ট্রাক বাংলাদেশে প্রবেশ করলেও দুপুরের পর থেকে সব ধরনের বাণিজ্যিক কার্যকলাপ বন্ধ হয়ে যায়। স্থলবন্দর সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশে অবস্থিত গোডাউনগুলি পণ্যে ভরে উঠেছে কিন্তু অস্থিরতার কারণে ব্যবসায়ীরা সেগুলি সংগ্রহ করতে পারছেন না।

পদ্মার ইলিশের আনাগোনাও প্রভাবিত:

বর্ষাকালে পদ্মা নদীতে ইলিশ মাছ ধরা একটি গুরুত্বপূর্ণ কার্যকলাপ। কিন্তু সীমান্তে উদ্ভূত এই পরিস্থিতির ফলে ইলিশ মাছের আনাগোনাও প্রভাবিত হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

অন্যান্য সীমান্তেও একই চিত্র:

পেট্রাপোল ছাড়াও রাজ্যের অন্যান্য সীমান্তগুলিতেও একই ধরনের পরিস্থিতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। বসিরহাটের ঘোজাডাঙা সীমান্তে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে এবং সুন্দরবনের টি জংশনে ভাসমান বিওপিতে বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে।

সীমান্তবাসীদের দুর্ভোগ:

সীমান্তবাসীরা এই পরিস্থিতির জন্য বিশেষভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। অনেকেই চিকিৎসার জন্য ভারতে আসতে বা বাংলাদেশে ফিরে যেতে পারছেন না। শিলিগুড়ির কাছে ফুলবাড়ি সীমান্তে দাঁড়িয়ে বাংলাদেশের একজন বাসিন্দা বলেন, “দয়া করে আমাদের বাংলাদেশের জন্য দোয়া করুন।”

বিএসএফের সতর্কতা:

বিএসএফ সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশে সরকারি দপ্তরে দুষ্কৃতীরা আগুন লাগিয়ে দিতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এই কারণে সীমান্তে নজরদারি আরও বাড়ানো হয়েছে।

বাণিজ্যিক ক্ষতি:

সীমান্ত বন্ধ হওয়ার ফলে দুই দেশের বাণিজ্যিক কার্যকলাপ ব্যাহত হচ্ছে। পেট্রাপোল শুল্ক দপ্তরের ক্লিয়ারিং এজেন্ট সংস্থার সম্পাদক কার্তিক চক্রবর্তী বলেন, “এ দিন মাত্র ১৫৬টি গাড়ি রপ্তানি হয়েছে।”

বাংলাদেশের অস্থিরতার প্রভাব সরাসরি ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে পড়ছে। সীমান্তবাসীরা এবং দুই দেশের ব্যবসায়ীরা এই পরিস্থিতির জন্য ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। আশা করা যায়, দুই দেশের সরকার মিলে এই পরিস্থিতি সামাল দিতে সক্ষম হবে এবং সীমান্তে শান্তি ফিরিয়ে আনতে পারবে।