উল্টো পথে ঘুরছে পৃথিবীর ‘কোর’, কমতে পারে দিনের দৈর্ঘ্য! দাবি ‘নেচার’-পত্রিকার

শুধু পৃথিবীই নয়, তার গর্ভে থাকা ‘কোর’-ও (core) বনবন ঘুরছে! কিন্তু সেই ঘূর্ণনের ছন্দে রং নয়, বদলাতে পারে পৃথিবীর বুকে দিনের দৈর্ঘ্য।

সম্প্রতি ‘নেচার’ পত্রিকায় প্রকাশিত একটি গবেষণাপত্রে দাবি করা হয়েছে, পৃথিবীর কোর ক্রমাগত ঘুরছে (spin) এবং সেই স্পিনিং-এর গতি কমছে ক্রমশ।

ফলাফল: পৃথিবীতে সার্বিক ভাবে কমতে পারে দিনের মাপ।

কোরের ঘূর্ণন কীভাবে প্রভাবিত করে দিনের দৈর্ঘ্য?

গবেষকরা বলছেন, কোরের রোটেশনের গতি যত কমে, পৃথিবীর ম্যান্টল-এর (কোর থেকে ভূ-পৃষ্ঠ পর্যন্ত অংশ) ঘূর্ণনের গতি তত বেড়ে যায়।

তাই পৃথিবীর রোটেশনের গতিও বাড়ে।

এবং এই হিসেবে কমে যায় দিনের দৈর্ঘ্য।

কতটা কমতে পারে?

গবেষকরা বলছেন, সাধারণত এমন ক্ষেত্রে প্রতি ২৪ ঘণ্টায় এক সেকেন্ডের এক হাজার ভাগ (১/১০০০) করে একটি দিনের সময় কমে।

পৃথিবীর কোর নিয়ে গবেষণার চ্যালেঞ্জ:

কোর পৃথিবীর ভূ-পৃষ্ঠ থেকে বহু নীচে (৫,১৮০ কিলোমিটার) অবস্থিত এবং প্রায় সূর্যের সমান তাপমাত্রা (৫,৪০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস)।
ফলে কোর সংক্রান্ত গবেষণায় নমুনা পাওয়া অসম্ভব।
তবে ভূমিকম্পের তরঙ্গ (সিসমিক ওয়েভ) পর্যবেক্ষণ করে গবেষকরা কোর সম্পর্কে নির্দিষ্ট কিছু সিদ্ধান্তে আসতে পেরেছেন।

‘নেচার’ পত্রিকায় প্রকাশিত গবেষণাপত্রে কী বলা হয়েছে:

কোর মূলত লোহা এবং নিকেলের তৈরি একটি বলের মতো।এই বলকে চারদিক থেকে ঘিরে রয়েছে একটি তরল পদার্থ, যা বিভিন্ন ধাতুর মিশ্রণ।এই তরল এবং পৃথিবীর চৌম্বক ক্ষেত্র (ম্যাগনেটিক ফিল্ড) কোরের উপরে বিপরীত-ধর্মী আকর্ষণ তৈরি করে।এই ‘পুশ-পুল’ তত্ত্বেই কোর ঘুরতে থাকে ক্রমাগত।এবং বদলাতে থাকে দিনের মাপ।

কোর নিয়ে গবেষণার গুরুত্ব:
কোর পৃথিবীর চৌম্বক ক্ষেত্র তৈরির জন্য দায়ী।যা আমাদেরকে ক্ষতিকর সৌর বিকিরণ থেকে রক্ষা করে।