‘বন্ধুর বাড়ি যাচ্ছি’ বলে আর আসেনি ছেলে, আদালতে কাতর আর্তি নিঃস্ব বাবার

২০১৯ সালের জুলাই মাসে নিখোঁজ হন কাঞ্চন নামে এক যুবক। তখন থেকে আজ পাঁচ বছর পেরিয়ে গেলেও কাঞ্চনের কোনো খোঁজ নেই।
অসহায় বাবা কার্তিকচন্দ্র সরকার হায়কোর্ট, থানা, সর্বত্র ঘুরে বেড়াচ্ছেন ছেলের খোঁজে।
মুক্তিপণের দাবিতে ২০ লক্ষ টাকা চাওয়ার পর থেকে শুরু হয় কাঞ্চনের খোঁজের জার্নি।
হায়কোর্টের নির্দেশে পুলিশ তদন্ত শুরু করে। একজনকে গ্রেপ্তারও করা হয়। কিন্তু আসল অপরাধী এখনও ধরাছোঁয়া
এই দীর্ঘ সময়ে কার্তিকবাবুর উপর নেমে এসেছে অর্থনৈতিক বিপর্যয়।
কিছু দালাল আইনজীবী কাঞ্চনকে খুঁজে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে কার্তিকবাবুর কাছ থেকে ৬ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।
পুলিশের বিরুদ্ধেও অভিযোগ উঠেছে অসহায় বাবার কাছ থেকে টাকা হাতানোর।
শুধু তাই নয়, কাঞ্চনের খোঁজ পাওয়ার খবর দিয়ে তাঁর কাছ থেকে টাকা নিয়েছে কেউ।
কার্তিকবাবুর আর্থিক অবস্থা এতটাই নাজুক হয়ে গেছে যে ছেলেকে খুঁজে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে গরিবদের কম্বল বিতরণের জন্যও তাঁর কাছ থেকে হাজার দশেক টাকা নিয়েছেন তথাকথিত সমাজসেবীরা।
পুলিশের কাছে কার্তিকবাবুর অভিযোগ, তাঁর ছেলে পাগল। কিন্তু কার্তিকবাবুর যুক্তি, ছেলে যদি পাগলই হবে, সে চাকরির পরীক্ষার কোচিং নেবে কেমন করে?
মঙ্গলবার হাইকোর্টে কার্তিকবাবু এসেছিলেন ছেলেকে খুঁজে পাওয়ার মামলার যাতে দ্রুত শুনানি হয়, তার আবেদন করতে।
তবে এই মামলার যিনি বিচার করবেন, সেই বিচারপতি না থাকায় বছর সত্তরের কার্তিকবাবু অসুস্থ বোধ করায় বসে পড়েন আদালতের মেঝেয়।
জোড়হাতে আইনজীবীদের কাছে আর্জি জানিয়েছেন, “আমার ছেলেকে ফিরিয়ে দিন। কত লোক, কত টাকা ছেলেকে ফেরানোর জন্য আমার কাছ থেকে হাতিয়ে নিয়েছে, সে হিসেব আর রাখি না। আর তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করব, সেই ক্ষমতাও আমার নেই। আমার ছেলেটা শুধু ফিরে আসুক।”
এই ঘটনা তুলে ধরে মানবাধিকার কর্মীরা বলছেন, অসহায় মানুষদের উপর এভাবে অত্যাচার করা উচিত নয়।