দ্য সিম্পসন্স: যে কার্টুনের সঙ্গে ‘ভবিষ্যৎ মিলে যায়’, জেনেনিন কেন বলা হচ্ছে এমন?

‘দ্য সিম্পসন্স’। আমেরিকার এই জনপ্রিয় কার্টুন শুরু হয়েছিল ১৯৮৯ সালে। বিপুল জনপ্রিয়তাও পেয়েছিল। এখনো সমান জনপ্রিয়। ‘দ্য সিম্পসন্স’-এর নির্মাতা ছিলেন ম্যাট গ্রোইনিং। আমেরিকার টেলিভিশন সংস্থা ‘ফক্স ব্রডকাস্টিং কোম্পানি’র জন্য তৈরি করা হয়েছিল সেই কার্টুন।
তবে শুধু ‘সিম্পসন্স’ পরিবারের হাসির কাণ্ডকারখানা নিয়ে নয়, কয়েক দশকের মধ্যে অন্য এক কারণেও জনপ্রিয়তা অর্জন করতে শুরু করে এই কার্টুন শো। ‘দ্য সিম্পসন্স’ কার্টুনে এমন অনেক ঘটনা দেখানো হয়েছে, যা পরবর্তীকালে সত্যি বলে প্রমাণিত হয়েছে।

সেই কারণে বার বার এমন তত্ত্বও উঠে এসেছিল যে, সিম্পসনের নির্মাতা ম্যাটের কাছে এমন এক যন্ত্র রয়েছে, যা চড়ে তিনি ভবিষ্যৎ দেখে এসেছেন এবং সেই মতো তৈরি করেছেন ‘দ্য সিম্পসন্স’-এর বিভিন্ন পর্ব। এমন মনে করার আরও এক কারণ হল— ‘ফিউচারামা’ নামে ম্যাটের তৈরি অন্য একটি শো। সেই কার্টুনের চরিত্রগুলিকে ‘টাইম ট্র্যাভেল’ করতে দেখা গিয়েছিল।

ম্যাটের সেই সময়যান নিয়ে আগ্রহের কারণেও দুইয়ে দুইয়ে চার করে নিয়েছেন অনেকে। অনেকের মতে, ম্যাটের কাছেই ছিল বিশেষ সময়যান। অথবা, তিনি ভবিষ্যৎ দেখতে পেতেন। তবে সেই দাবির কোনো সত্যতা কখনো প্রমাণিত হয়নি। ম্যাট নিজেও সে কথা কখনও স্বীকার করেননি।

কেমন ছিল ‘সিম্পসন’ শো-এর ‘ভবিষ্যদ্বাণী’? ২৪ বছর আগে একটি পর্বে দেখানো হয়েছিল যে, ডোনাল্ড ট্রাম্প একদিন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট হবেন। এর অনেক পরে প্রেসিডেন্ট হন ট্রাম্প। ২০০৬ সালের একটি পর্বে দেখানো হয়েছিল, টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষ খুঁজতে গিয়ে বিপদের মুখে পড়েছে সিম্পসন পরিবার। গত বছরের জুনে একই রকমের এক ঘটনা ঘটে।

২০২৩ সালের জুনে ডুবোজাহাজে চেপে টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষ খুঁজতে গিয়ে ব্রিটেনের কোটিপতি ব্যবসায়ী হামিশ হার্ডিং, পাকিস্তানের ব্যবসায়ী শাহজাদা দাউদ এবং তার পুত্র সুলেমান, ওশানগেট সংস্থার মুখ্য আধিকারিক স্টকটন রাশ এবং ফরাসি নাবিক পল হেনরি নারজিওলেট আটলান্টিকের গভীরে তলিয়ে যান।

‘সিম্পসন’ শো-এর ভক্তদের দাবি, করোনা মহামারি যে আসবে, তা-ও নাকি আগেই দেখানো হয়েছিল। তাদের দাবি, আমেরিকার ‘টুইন টাওয়ার’ বিপর্যয়ের ভবিষ্যদ্বাণীও করেছিল ‘সিম্পসন’ শো। ১৯৯৭ সালের একটি পর্বে শো-এর একটি চরিত্রকে একটি সংবাদপত্র পড়তে দেখা যায়। সেই সংবাদপত্রের প্রথম পাতায় ৯ ডলার লেখা ছিল। পিছনেই ছিল টুইন টাওয়ারের ছবি। এর চার বছর পরেই আমেরিকার ৯/১১ হামলা হয়।

‘সিম্পসন’-এর একটি পর্বে লন্ডনের ‘ব্রিজ টাওয়ার’-এর মতো দেখতে একটি ভবন দেখানো হয়েছিল। যে জায়গায় ওই ভবন দেখানো হয়েছিল, ২০০৯ সালে সেখানেই লন্ডনের ‘ব্রিজ টাওয়ার’ বা ‘দ্য শ্রাড’ তৈরি শুরু হয়। ভিডিও কল, স্মার্টওয়াচ বা ইলন মাস্কের ‘টেসলা’ সংস্থার তৈরি সাইবার ট্রাকের ধারণাও আবিষ্কারের অনেক আগেই ‘সিম্পসন’-এর বিভিন্ন পর্বে দেখানো হয়েছে বলে দাবি।

এছাড়াও কার্টুনে বহু গায়ক-গায়িকাকে নিয়ে দেখানো বিভিন্ন বিষয় ভবিষ্যতে সত্যি হতে দেখা গিয়েছে। তবে এ সব কিছুকে কাকতালীয় বলেই মনে করেন অনেকে। তেমনটাই মনে করেন ম্যাট নিজেও।