অনলাইনে কেনাকাটায় মাঝেমধ্যেই লোভনীয় ‘অফার’ দেয় বিভিন্ন সংস্থা। সেটি খাবারের সামগ্রী, পোশাক, প্রসাধনী বা ইলেকট্রনিক্স গ্যাজেটই হোক, বিভিন্ন সংস্থা নানা রকমভাবে গ্রাহকদের জন্য অফারগুলো দেয়। সেই ‘অফার’ লুফে নিতে অনেকেই অনলাইনে কেনাকাটা করে থাকেন।
শুধু তাই-ই নয়, দিনে দিনে অনলাইনে কেনাকাটার সংখ্যাটাও বাড়ছে। একই সঙ্গে প্রতারণার ঘটনাও প্রতিনিয়ত বাড়ছে। তেমনই একটি ঘটনা সম্প্রতি প্রকাশ্যে এসেছে।

অনলাইনে সস্তায় ডিম কিনতে গিয়ে এখন পস্তাতে হচ্ছে ভারতীয় এক তরুণীকে। স্থানীয় পুলিশ জানিয়েছে, ব্যাঙ্গালুরুর এক তরুণী অনলাইনে সস্তার ‘অফারে’ ডিম কেনার চেষ্টা করেন। কিন্তু সেই ডিমের কারণে যে হাজার হাজার টাকা খোয়াতে হবে, তা কল্পনাও করতে পারেননি তিনি। খবর টাইমস অব ইন্ডিয়ার।

গত ১৭ ফেব্রুয়ারি ব্যাঙ্গালুরুর বসন্তনগরের এক তরুণী অনলাইনে বিভিন্ন সামগ্রীর দরদাম দেখছিলেন। কোন সংস্থা কি ছাড় দিচ্ছে সেসব দেখতে দেখতে একটি বিজ্ঞাপনের উপর নজর পড়ে তার। লোভনীয় ‘অফারে’ ডিম দেওয়া হচ্ছে বলে সেই বিজ্ঞাপনে দাবি করা হয়েছিল।

প্রতারণার শিকার হওয়া নারীর দাবি, ‘বিজ্ঞাপনে লেখা ছিল, চার ডজন ডিম কেনা যাবে মাত্র ৪৯ টাকায়! যেখানে এক একটি ডিমের দাম সাড়ে ছয় থেকে সাত টাকা, সেই হিসাবে ৪৮টি ডিমের দাম ৩০০ টাকার বেশি হয়। কিন্তু সেই ডিম যদি ৪৯ টাকায় পাওয়া যায়, তা হলে তো অনেকটাই লাভ! কিন্তু লাভের গুড় যে পিঁপড়েয় খাওয়ার জন্য ওত পেতে আছে, আর ঐ বিজ্ঞাপনই যে একটি টোপ, সেটি ধরতে পারেননি মহিলা।’

তার দাবি, একটি নামী সংস্থা ওই নামমাত্র দামে ডিম কেনার ‘অফার’ দিয়েছিল। ডিম কেনার জন্য একটি লিঙ্কও দেওয়া ছিল ওই বিজ্ঞাপনের পাতায়। তিনি বলেন, “সেই লিঙ্কে ক্লিক করতেই আমাকে নতুন একটি পাতায় নিয়ে যায়। সেখানে মুরগি পালন, ডিম কী ভাবে সংগ্রহ করতে হয় এবং বিক্রি সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য ছিল। ওই পাতার নীচের দিকে নামতেই দেখি সেখানে বলা রয়েছে ৯৯ টাকায় আট ডজন ডিম পাওয়া যাচ্ছে। তার সঙ্গে আরও কয়েকটি ‘অফার’ও ছিল। আমি ৪৯ টাকায় চার ডজন ডিমের ‘অফার’টিতেই ক্লিক করেছিলাম।”

তিনি আরো বলেন, ‘ঐ পাতায় ক্লিক করতেই তাকে আরো একটি নতুন পাতায় নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে ডিম সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য দেওয়া ছিল। সেখানে তার ব্যাংক কার্ডের তথ্য চাওয়া হয়।’

ব্যাঙ্গালুরুর ঐ নারীর কথায়, ‘আমি ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ডের তথ্য নির্ধারিত জায়গায় দিই। তার পর অর্ডারের জন্য ক্লিক করি। তার পর সেটি নতুন একটি পাতায় নিয়ে যায়। সেখানে পেমেন্ট সংক্রান্ত ক্রেডিট কার্ডের তথ্য, সিভিভি নম্বর দিই। টাকার পরিমাণ লিখে ক্লিক করতেই একটি ওটিপি আসে। সেই ওটিপি দেওয়ার আগেই অ্যাকাউন্ট থেকে ৪৮,১৯৯ টাকা মুহূর্তেই অ্যাকাউন্ট থেকে গায়েব হয়ে যায়।’

এরপরেই ব্যাংক থেকে তার কাছে ফোন আসে। তাকে জানানো হয়, এই টাকা তিনি নিজে ব্যবহার করেছেন কি না। তখন তিনি ব্যাংকে গোটা বিষয়টি জানান। তারা সঙ্গে সঙ্গেই অ্যাকাউন্টটি ব্লক করে দেয়। কিন্তু তত ক্ষণে মহিলা ৪৮ হাজার টাকা খুইয়ে ফেলেছিলেন। এরপরেই তিনি পুলিশের দ্বারস্থ হন। একটি অভিযোগও দায়ের করেন।