মামলার কেস ডায়েরি হাপিশ! পুলিশের বিরুদ্ধে তদন্তে নামলো সিবিআই

২০১৩ সালে কোচবিহার জেলার কোতোয়ালি থানায় মাদক পাচার আইনে রমেশ আগরওয়াল ও পবন আগরওয়াল নামে দু’জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হয়। আদালত একাধিকবার দু’জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করলেও তা কার্যকর করা যায়নি। এর মধ্যে বেমালুম হাপিশ হয়ে যায় মূল মামলার কেস ডায়েরি।
কেস ডায়েরি হারিয়ে যাওয়ার ঘটনায় কলকাতা হাইকোর্টের জলপাইগুড়ি সার্কিট বেঞ্চের নির্দেশে এফআইআর দায়ের করে তদন্তে নেমেছে সিবিআই। এই ঘটনায় অজ্ঞাতপরিচয় পুলিশ আধিকারিকদের বিরুদ্ধে তথ্যপ্রমাণ লোপাট, অভিযুক্তকে আশ্রয় দান, অভিযুক্তের কাছ থেকে উৎকোচের বিনিময়ে তথ্যপ্রমাণ গোপনের পাশাপাশি অপরাধমূলক ষড়যন্ত্রের ধারায় মামলা রুজু করেছেন তদন্তকারীরা।
গত বছর জুনে মামলাটি জলপাইগুড়ি সার্কিট বেঞ্চে ওঠে। আদালত কোচবিহারের পুলিশ সুপারকে নির্দেশ দেয় গ্রেপ্তারির নির্দেশ কার্যকর করে রিপোর্ট দেওয়ার জন্য। মামলার তদন্তকারী অফিসার যেহেতু মূল কেস ডায়েরি জমা দিতে পারেননি, এ ক্ষেত্রে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, তারও রিপোর্ট চাওয়া হয়।
এসপি আদালতে রিপোর্ট দেন, মামলার তদন্তকারী অফিসার উত্তম শর্মা এবং কনস্টেবল দীপঙ্কর দাসকে শো-কজ় করা হয়েছে এবং অভিযুক্তদের খোঁজে তল্লাশিও হয়েছে। কিন্তু তাঁদের খুঁজে পাওয়া যায়নি।
আদালতের পর্যবেক্ষণ, এই আবেদনেই পরিষ্কার, অভিযুক্তরা কোচবিহার, দার্জিলিং ও শিলিগুড়ির মধ্যে স্বাধীনভাবে বিচরণ করছেন এবং পুলিশ অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করার বদলে তাদের আশ্রয় দিচ্ছে। মামলার তদন্তকারী অফিসার ও এই তদন্তের সঙ্গে যুক্ত অন্য পুলিশ আধিকারিকদের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তোলে আদালত।
এই ঘটনায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেওয়ার কারণ ব্যাখ্যা করে আদালত বলেছে, কেস ডায়েরি হারিয়ে যাওয়ার ঘটনাটি অত্যন্ত গুরুতর। কেস ডায়েরি একটি মামলার মূল নথি। এই নথিতে মামলার সমস্ত তথ্য থাকে। কেস ডায়েরি হারিয়ে গেলে মামলার তদন্ত ব্যাহত হতে পারে। এছাড়াও, কেস ডায়েরি হারিয়ে যাওয়ার ঘটনাটি পুলিশের গাফিলতিরও পরিচায়ক।
এই মামলায় সিবিআই তদন্তের মাধ্যমে কেস ডায়েরি হারিয়ে যাওয়ার রহস্য উদঘাটন করা হবে বলে আশা করা হচ্ছে। এছাড়াও, এই ঘটনায় জড়িত পুলিশ আধিকারিকদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও মনে করা হচ্ছে।