
ভারতীয় ক্রিকেটের এক অবিসংবাদী নাম সচিন তেন্ডুলকর। আজ, ২৪শে এপ্রিল, ৫২ বছরে পা দিলেন ‘মাস্টার ব্লাস্টার’। এই নামটির সঙ্গে জড়িয়ে আছে অজস্র রেকর্ড, যার অনেকগুলো আজও অক্ষত এবং হয়তো ভবিষ্যতেও তেমনই থাকবে। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সেঞ্চুরির সেঞ্চুরি, ২০০ টেস্ট ম্যাচ খেলার মতো মাইলফলকগুলি তাঁর দীর্ঘ ২৪ বছরের বর্ণাঢ্য কেরিয়ারের উজ্জ্বলতম অধ্যায়। মাত্র ১৬ বছর বয়সে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে তাঁর অভিষেকই বুঝিয়ে দিয়েছিল, তিনি এসেছেন লম্বা দৌড়ের জন্য।
সমস্ত ফর্ম্যাটেই নিজের জাত চিনিয়েছেন সচিন তেন্ডুলকর। এখন যখন সারা দেশ আইপিএলের উন্মাদনায় মত্ত, তারই মাঝে সচিনের জন্মদিন। চলুন জেনে নিই, আইপিএলেও কেমন ছাপ রেখেছিলেন ‘মাস্টার’। ২০০৮ সালে যখন আইপিএল শুরু হয়েছিল, তখন অনেকেই হয়তো ভাবেননি যে টেস্ট এবং ওয়ানডে ক্রিকেটের এই কিংবদন্তী টি-টোয়েন্টি ফর্ম্যাটেও এমন দুর্দান্ত পারফর্ম করবেন। কিন্তু মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের হয়ে ২০১৩ সাল পর্যন্ত খেলা ছয়টি মরশুমে তিনি প্রমাণ করে দেন ‘ক্লাস ইজ পারমানেন্ট’। এই সময়ে ৭৮ ম্যাচ খেলে প্রায় ৩৫ গড়ে ২৩৩৪ রান সংগ্রহ করেন তিনি। বিশেষ করে ২০১০ সালের আইপিএলে ১৫ ম্যাচে ৬১৮ রান করে অরেঞ্জ ক্যাপ জয় তাঁর টি-টোয়েন্টি দক্ষতারই পরিচয়।
সচিনের আইপিএল সেঞ্চুরিটি এসেছিল ২০১১ সালে ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে কোচি টাস্কার্সের বিরুদ্ধে, মাত্র ৬৬ বলে। সেই সেঞ্চুরিটি ছিল তাঁর জন্মদিনের ঠিক কয়েক দিন আগে, ১৫ই এপ্রিল। এই সেঞ্চুরির সঙ্গেই তিনি আইপিএলে সবচেয়ে বেশি বয়সে সেঞ্চুরি করা ক্রিকেটারদের তালিকায় নাম লেখান। যখন তিনি এই মাইলফলক স্পর্শ করেন, তখন তাঁর বয়স ছিল ৩৭ বছর ৩৫৬ দিন। এই তালিকায় তাঁর উপরে রয়েছেন শুধু অ্যাডাম গিলক্রিস্ট, সনথ জয়সূর্য এবং ক্রিস গেইল।
আজকের দিনে (২৪শে এপ্রিল, ২০২৫) রোহিত শর্মার বয়স ৩৭ বছর ৩৫৯ দিন এবং বিরাট কোহলির বয়স ৩৬ বছর ১৭০ দিন। মজার বিষয় হলো, রোহিত শর্মা যদি এই চলতি আইপিএল মরশুমেই আর একটি সেঞ্চুরি করতে পারেন, তাহলে তিনি সচিনের ৩৭ বছর ৩৫৬ দিনের রেকর্ড ভেঙে আইপিএলে সবচেয়ে বেশি বয়সে সেঞ্চুরি করার কৃতিত্ব অর্জন করবেন। অন্যদিকে, বিরাট কোহলিকে এই রেকর্ড ভাঙার জন্য অপেক্ষা করতে হবে আগামী বছর পর্যন্ত। উল্লেখ্য, রোহিত শর্মা আইপিএলে তাঁর সর্বশেষ সেঞ্চুরিটি করেছিলেন গত বছর চেন্নাই সুপার কিংসের বিরুদ্ধে, তখন তাঁর বয়স ছিল ৩৬ বছর ৩৫০ দিন।
২০১০ সালে নিজের জন্মদিনে ডেকান চার্জার্সের বিরুদ্ধে ৪২ বলে ৫১ রানের একটি মূল্যবান ইনিংস খেলেছিলেন সচিন। আন্তর্জাতিক এবং আইপিএল থেকে অবসর নিলেও মাস্টার্স লিগে তাঁর ব্যাটিং আজও মুগ্ধ করে ক্রিকেটপ্রেমীদের। স্যার আচরেকরের প্রিয় ছাত্র হিসেবে তিনি চিরকাল শ্রদ্ধার পাত্র হয়ে থাকবেন। যতদিন ব্যাটে-বলের আওয়াজে ক্রিকেট ভক্তদের রক্ত গরম হবে, ততদিন সচিন তেন্ডুলকরের নাম উজ্জ্বল হয়ে থাকবে ভারতীয় এবং বিশ্ব ক্রিকেটের ইতিহাসে।