৩ মাস সুন্দরবনে ঘোরাঘুরি সম্পূর্ণ বন্ধ, জেনেনিন কেন এই সিদ্ধান্ত বন দফতরের?

বাংলার অন্যতম জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র, ইউনেস্কো ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট সুন্দরবনের দুয়ারে এবার তালা পড়তে চলেছে পর্যটকদের জন্য। আগামী ১৫ জুন থেকে ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এই ম্যানগ্রোভ অরণ্যে পর্যটকদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে বন দফতর। বর্ষার এই তিন মাস সুন্দরবনের মায়াবী প্রকৃতি পর্যটকদের কাছে অধরাই থাকবে। কিন্তু কেন এই আকস্মিক সিদ্ধান্ত?

বন দফতর সূত্রে জানা গেছে, এই নিষেধাজ্ঞার মূল কারণ হলো বন্যপ্রাণীর প্রজনন মরশুম। জুন থেকে আগস্ট মাস পর্যন্ত সুন্দরবনের বিভিন্ন বন্যপ্রাণীর, বিশেষ করে বাঘ, কুমির এবং হরিণের প্রজনন প্রক্রিয়া চলে। এই সময় পর্যটকদের আনাগোনা বাড়লে তাদের স্বাভাবিক জীবনচক্র ও প্রজনন প্রক্রিয়া মারাত্মকভাবে বিঘ্নিত হতে পারে। বন্যপ্রাণীদের অবাধ বিচরণের জন্য এবং তাদের প্রজনন বৃদ্ধিতে নিরাপদ পরিবেশ তৈরি করতেই এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।

রাজ্যের বনমন্ত্রী ইন্ডিয়া টুডেকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এই সিদ্ধান্তের যৌক্তিকতা ব্যাখ্যা করেছেন। তিনি বলেছেন, “বছরের এই সময়ে পশ্চিমবঙ্গ ও ভারতের সমস্ত মূল বনাঞ্চলের জন্য এটা একটা নিয়ম। পশু-পাখিদের প্রজনন বাড়াতে যাতে তাদের কেউ বিরক্ত না করে, সেই রকম পরিবেশ বজায় রাখার জন্য এই নিয়ম পালন করা হয়। সেই কারণে পর্যটকদের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।” মন্ত্রী আরও জানিয়েছেন যে, এই পরিকল্পনা ইন্টিগ্রেটেড রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট প্ল্যান (IRMP)-এর অধীনেই আসে।

সুন্দরবন বাঙালির কাছে এক বিশেষ আকর্ষণ। রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার দেখার দুর্লভ সুযোগের জন্য বহু পর্যটক সুন্দরবনের দুর্গম পথে পাড়ি জমান। তবে শুধু বাঘ নয়, বিভিন্ন প্রজাতির কুমির, হরিণ এবং হরেক রকম পাখির দেখা মেলে এই অনন্য ইকোসিস্টেমে। প্রকৃতির অপার সৌন্দর্য এবং জীববৈচিত্র্যের এই খনি সাময়িকভাবে বন্ধ থাকলেও, এটি সুন্দরবনের বন্যপ্রাণীদের সুরক্ষায় একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। বন্যপ্রাণীদের কথা মাথায় রেখেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, এবং আশা করা হচ্ছে তিন মাস পর আবারও পর্যটকদের জন্য সুন্দরবনের দ্বার খুলে দেওয়া হবে।

Related Posts

© 2025 Tech Informetix - WordPress Theme by WPEnjoy