
ভারত মহাসাগরে চীনের ক্রমবর্ধমান প্রভাব ভারতের জন্য একটি বড় উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে ড্রাগনের এই আধিপত্য কমাতে এবার বড়সড় পদক্ষেপ নিতে চলেছে ভারত। জানা গিয়েছে, ২০২৬ সালে অন্ধ্র প্রদেশে একটি অত্যাধুনিক পারমাণবিক সাবমেরিন ঘাঁটি তৈরি করতে চলেছে নয়াদিল্লি। এটি একটি কৌশলগত নৌঘাঁটি হবে যা ভারতীয় নৌবাহিনীর শক্তিকে বহুগুণ বাড়িয়ে দেবে। এছাড়াও, কর্ণাটকের কারওয়ার নৌঘাঁটিও উন্নত করা হচ্ছে।
প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, এই নতুন পারমাণবিক সাবমেরিন ঘাঁটিটি বিশাখাপত্তনমের ইস্টার্ন নেভাল কমান্ডের সদর দপ্তর থেকে প্রায় ৫০ কিলোমিটার দূরে রামবিলিতে স্থাপন করা হবে। সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, ‘বর্ষা’ প্রকল্পের অধীনে নির্মিত এই ঘাঁটির প্রথম পর্যায়ের কাজ প্রায় শেষের দিকে। ধারণা করা হচ্ছে, আগামী এক বছরের মধ্যেই এই নৌঘাঁটিটি সম্পূর্ণরূপে চালু করা সম্ভব হবে, এবং পরবর্তীতে এটিকে আরও উন্নত করা হবে।
এই কৌশলগত ঘাঁটির দুটি প্রধান সুবিধা:
স্যাটেলাইটের মাধ্যমে চিহ্নিত হওয়ার ঝুঁকি ছাড়াই বঙ্গোপসাগরে সাবমেরিন মোতায়েন করা যাবে।
এই কৌশলগত ঘাঁটিটি মালাক্কা প্রণালীতে নিয়মিত টহল দেওয়ার ক্ষমতা প্রদান করবে, যা ভারতের সামুদ্রিক নিরাপত্তা জোরদার করবে।
চীনের কার্যকলাপের উপর নজরদারি:
এই ঘাঁটি থেকে ভারত তার পারমাণবিক সাবমেরিন মোতায়েন করে ভারত মহাসাগরে চীনের নৌ-কর্মকাণ্ডের উপর সার্বক্ষণিক নজরদারি চালাতে পারবে। প্রয়োজনে দ্রুত প্রতিক্রিয়া জানানোর ক্ষমতাও বৃদ্ধি পাবে। বিশেষ করে, এই ঘাঁটিটি মালাক্কা প্রণালীর খুব কাছে অবস্থিত হওয়ায়, ভারতে প্রবেশকারী চীনা জাহাজগুলির গতিবিধি ট্র্যাক করা আরও সহজ হবে।
শীঘ্রই আসছে তৃতীয় পারমাণবিক সাবমেরিন:
ভারত এই বছরই নৌবাহিনীতে তার তৃতীয় পারমাণবিক সাবমেরিন এবং আইএনএস অরিদমনের (INS Aridhaman) মতো নিউক্লিয়ার-টিপড ব্যালিস্টিক মিসাইল (SSBN) অন্তর্ভুক্ত করতে চলেছে। নিউক্লিয়ার ব্যালিস্টিক মিসাইল (SSBN)-এর পাশাপাশি আইএনএস অরিদমনের অন্তর্ভুক্তি ভারতীয় নৌবাহিনীর শক্তিকে আরও একধাপ এগিয়ে নিয়ে যাবে। উল্লেখ্য, গত বছরের অক্টোবর মাসেই ভারত সরকার ৪০ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে ৯,৮০০ টন ওজনের দুটি নিউক্লিয়ার পাওয়ারড অ্যাটাক সাবমেরিন (SSN) নির্মাণের অনুমোদন দিয়েছে।
ভারত মহাসাগরে চীনের ক্রমবর্ধমান প্রভাব মোকাবিলায় এই নতুন পারমাণবিক সাবমেরিন ঘাঁটি স্থাপন এবং নৌবাহিনীর আধুনিকীকরণ ভারতের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। এর মাধ্যমে ভারত কেবল তার সমুদ্রসীমান্ত রক্ষা করবে না, বরং এই অঞ্চলে একটি শক্তিশালী শক্তি হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হবে।