মাত্র ১৫ মিনিটের এক বিধ্বংসী ঝড়ে একেবারে লন্ডভন্ড হয়ে গেছে বাঁকুড়ার রানীবাঁধ ব্লকের বিস্তীর্ণ এলাকা। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আচমকাই শুরু হওয়া এই ঝড়ের পর প্রায় ১৭ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও, শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত জেলার একাধিক জায়গায় বিদ্যুৎ ও ইন্টারনেট পরিষেবা এখনও স্বাভাবিক হয়নি, যার ফলে ব্যাহত হচ্ছে জনজীবন।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বাঁকুড়া জেলার রানীবাঁধ ব্লকের আকাশে মেঘ জমতে শুরু করে এবং হঠাৎই ব্যাপক ঝড় শুরু হয়। মাত্র ১৫ মিনিটের এই ঝড়টি ছিল অত্যন্ত তীব্র এবং এর সঙ্গে ছিল শিলাবৃষ্টিও। ঝড়ের দাপটে রানীবাঁধ ব্লকের ভুঁইয়াসাই, চিলাগাড়া, ভুড়কুড়া, রাজাকাটা, কামারকুলি-সহ বিভিন্ন গ্রামে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। জেলার একাধিক জায়গায় রাস্তার উপর বড় বড় গাছ ভেঙে পড়ে। বিদ্যুতের খুঁটি উপড়ে পড়ে বিভিন্ন প্রান্তে বিচ্ছিন্ন হয় পরিষেবা। এর পাশাপাশি অনেকের বাড়িও ক্ষতিগ্রস্থ হয়।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, ব্যাপক ঝড়ের পাশাপাশি শিলাবৃষ্টি হওয়ায় গ্রামগুলোতে বহু বাড়ির ক্ষতি হয়েছে। ঝড়ে বহু বাড়ির টিনের চাল উড়ে যায়। বাঁকুড়া-ঝিলিমিলি রাজ্য সড়ক-সহ ব্লকের বেশ কয়েকটি গ্রামীণ সড়কেও ভেঙে পড়ে গাছের ডাল, ফলে সাময়িক ভাবে ওই রাস্তাগুলিতে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পরে স্থানীয় মানুষ ও প্রশাসনের লোকজন দ্রুত রাস্তা থেকে গাছের ডাল সরালে ফের যান চলাচল শুরু হয়।
ঝড়ে বিদ্যুতের খুঁটি ও তার ছিঁড়ে পড়ায় রানীবাঁধ ব্লকের বিভিন্ন প্রান্তে তাৎক্ষণিক ভাবে বিদ্যুৎ পরিষেবা বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। একইভাবে তার ছিঁড়ে ব্যাহত হয় ইন্টারনেট সংযোগও। ঝড়ে ক্ষয়ক্ষতি এতটাই বেশি ছিল যে, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর থেকে শুরু করে শুক্রবার সকাল পর্যন্তও পরিষেবা স্বাভাবিক করা সম্ভব হয়নি। শুক্রবার সকাল পর্যন্ত বিদ্যুৎ ও ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন থাকায় ব্যাহত হয় বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি অফিসের কাজ এবং সাধারণ মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা।
শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত প্রাপ্ত খবর অনুযায়ী, রানীবাঁধ ব্লকের বিভিন্ন প্রান্তে এখনও পরিষেবা পুরোপুরি স্বাভাবিক হয়নি। তবে সব জায়গায় যাতে দ্রুত বিদ্যুৎ পরিষেবা মেলে তার জন্য যুদ্ধকালীন তৎপরতায় কাজ চলছে বলে বিদ্যুৎ দফতর সূত্রে খবর। ইন্টারনেট পরিষেবাও ধীরে ধীরে স্বাভাবিক করার চেষ্টা চলছে।
১৫ মিনিটের ছোট্ট ঝড়টি রানীবাঁধ এলাকার পরিকাঠামো ও জনজীবনে দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব ফেলেছে। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় দ্রুত পরিষেবা স্বাভাবিক করার জন্য প্রশাসন ও বিদ্যুৎ দফতরের কর্মীরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
