
বৃহস্পতিবার সকালে ওড়িশার গজপতি জেলায় হোমগার্ডের চাকরির জন্য ফিজিক্যাল টেস্ট দেওয়ার সময় এক প্রার্থীর মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। এই ঘটনায় আরও সাতজন প্রার্থী অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এই হৃদয়বিদারক ঘটনাটি রাজ্যজুড়ে শোকের ছায়া ফেলেছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, রানিপীঠ থেকে হোমগার্ডের জেলা সদর অফিস পদ্মপুর পর্যন্ত ২ কিলোমিটার রাস্তায় দৌড়ানোর পরীক্ষা চলছিল। আর এই দৌড়ানোর সময়েই এক প্রার্থীর মৃত্যু ঘটে। মৃত প্রার্থীর নাম সুলন্ত মিশাল (Parishal), গজপতি জেলার পারিশাল গ্রামের বাসিন্দা তিনি।
মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়লেন ৩০ সেকেন্ড আগে
সূত্র অনুসারে জানা যায়, ২ কিলোমিটার দূরত্বের এই দৌড় শেষ করার মাত্র ৩০ সেকেন্ড আগেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন সুলন্ত মিশাল। তাকে সঙ্গে সঙ্গে নিকটবর্তী জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়, কিন্তু সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
সাতজন প্রার্থী হাসপাতালে ভর্তি
একই দৌড়ের সময় আরও সাতজন প্রার্থী অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাদের বর্তমানে গজপতি জেলা সদর হাসপাতালেই চিকিৎসা চলছে। তাদের শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল বলে জানা গেছে।
মুখ্যমন্ত্রীর শোকপ্রকাশ ও আর্থিক সহায়তা ঘোষণা
ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী মোহন চরণ মাঝি এই ঘটনায় গভীর শোকপ্রকাশ করেছেন। তিনি মৃত তরুণের পরিবারের জন্য ৪ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ ঘোষণা করেছেন। ওড়িশার CMO তার এক্স হ্যান্ডলে একটি পোস্টে লিখেছেন, “গজপতি জেলায় হোমগার্ডের চাকরির জন্য ফিজিক্যাল টেস্ট দেওয়ার সময় মারা গিয়েছেন সুলন্ত মিশাল। এই ঘটনায় মুখ্যমন্ত্রী মোহন চরণ মাঝি গভীর শোকপ্রকাশ করেছেন এবং মুখ্যমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল থেকে ৪ লক্ষ টাকা মৃত তরুণের পরিবারের জন্য দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন।”
ওড়িশায় হোমগার্ড নিয়োগের নিয়মাবলী
ওড়িশায় হোমগার্ড নিয়োগের জন্য কিছু নির্দিষ্ট নিয়মাবলী রয়েছে:
ন্যূনতম পঞ্চম শ্রেণি উত্তীর্ণ হতে হবে।
বয়স ২০ বছর থেকে ৬০ বছরের মধ্যে হতে হবে।
প্রার্থীকে ওড়িয়া ভাষা বলতে, লিখতে ও বুঝতে পারতে হবে।
গাড়ি চালানো, কল সারানো, ইলেকট্রিশিয়ানের কাজ, রান্না কিংবা কাঠের কাজ জানা থাকলে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়।
প্রার্থী নির্বাচন প্রক্রিয়া
হোমগার্ড প্রার্থী নির্বাচন সাধারণত একটি লিখিত পরীক্ষার মাধ্যমে হয়ে থাকে। তবে কখনও কখনও এর বদলে শুধুই ফিজিক্যাল টেস্ট নেওয়া হয়। এই ফিজিক্যাল টেস্টে উচ্চতা, ওজন ও বুকের ছাতির মাপ দেখা হয়। লং জাম্প, হাই জাম্প, এবং দৌড়ানোও এই টেস্টের অংশ। ছেলেদের ক্ষেত্রে ১০ মিনিটের মধ্যে ২ কিলোমিটার দৌড়ানোর ক্ষমতা থাকতে হয় এবং মহিলাদের ক্ষেত্রে ১২ মিনিটে ১.৬ কিলোমিটার দৌড়ানোর ক্ষমতা থাকতে হয়। এই দৌড় চলাকালীনই সুলন্ত মিশালের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়, যা এই ধরনের শারীরিক পরীক্ষার নিরাপত্তা এবং প্রার্থীদের শারীরিক প্রস্তুতি নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন তুলেছে।