
রাজস্থানের জয়পুরে ২২ গোডাউনের কাছে অবস্থিত হলিডে ইন হোটেলে ঘটে যাওয়া এক চাঞ্চল্যকর ঘটনা বর্তমানে দেশজুড়ে আলোচনার ঝড় তুলেছে। হোটেলের একটি বিলাসবহুল কক্ষে এক যুগলের অন্তরঙ্গ মুহূর্তের দৃশ্য কাচের জানালার পর্দা খোলা থাকার কারণে রাস্তায় পথচারীদের চোখে পড়ে যায়। এই ঘটনা কেবল নৈতিক বিতর্কের জন্ম দেয়নি, বরং ব্যক্তিগত গোপনীয়তা, ডিজিটাল যুগের নৈতিকতা এবং আইনের প্রয়োগ নিয়েও গুরুতর প্রশ্ন তুলেছে।
ঘটনার সূত্রপাত হয় যখন হোটেলের ওই কক্ষের মধ্যে যুগলের উদ্দাম যৌন কার্যকলাপ বাইরের রাস্তা থেকে স্পষ্ট দেখা যাচ্ছিল। পর্দা টানতে ভুলে যাওয়ায় এই দৃশ্য নজরে আসতেই পথচারীদের মধ্যে চাঞ্চল্য ছড়ায়। ক্রমশ সেই কক্ষে যুগলের ‘কীর্তি’ দেখতে রাস্তার পাশে ভিড় জমতে শুরু করে। অতি উৎসাহী কিছু ব্যক্তি গোটা ঘটনাটি তাঁদের মোবাইল ফোনে ক্যামেরাবন্দি করে নেয়, যা দ্রুত সমাজমাধ্যমে ভাইরাল হয়ে যায়।
এই অনাকাঙ্ক্ষিত দৃশ্য ধারণ এবং তা ছড়িয়ে পড়ার জেরে ব্যাপক বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়। হোটেলের সামনের উড়ালপুলে যানজট তৈরি হয়, যা শহরের স্বাভাবিক জনজীবনকে ব্যাহত করে।
নেটপাড়ায় নিন্দার ঝড়: দায় কার?
ভাইরাল হওয়া ভিডিওটি দেখে নেটপাড়ায় তীব্র নিন্দার ঝড় উঠেছে। নেটাগরিকদের অনেকেই এই ঘটনার দায়ভার হোটেল কর্তৃপক্ষের উপর চাপিয়েছেন। তাঁদের প্রশ্ন, এমন বিলাসবহুল হোটেলে কেন এমন জানালার ব্যবস্থা থাকবে যেখানে বাইরে থেকে ভেতরের দৃশ্য স্পষ্ট দেখা যায়, অথবা কেন পর্দার মান এমন হবে?
একই সাথে, রাস্তায় ভিড় জমানো এবং অন্তরঙ্গ মুহূর্ত ক্যামেরাবন্দি করা জনগণের নৈতিকতা নিয়েও সরব হয়েছেন অনেকে। তাঁদের দাবি, এটি চরম অনৈতিক এবং আইনি অপরাধ। একজন নেটনাগরিক মন্তব্য করেছেন, “এভাবে কোনও মানুষের গোপন মুহূর্ত ক্যামেরাবন্দি করা অপরাধ। ওই যুগলের জীবন নষ্ট হয়ে যেতে পারে। যাঁরা ভিডিও ক্যামেরাবন্দি করেছেন তাঁদের শনাক্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হোক।”
অন্য একজন বিস্তারিতভাবে লিখেছেন, “জয়পুরের হলিডে ইন হোটেলের রাস্তা থেকে রেকর্ড করা এক দম্পতির ব্যক্তিগত মুহূর্তের একটি ভিডিও ভাইরাল হয়ে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। এটি গোপনীয়তার লঙ্ঘন, যা ভারতীয় আইন অনুসারে অবৈধ হতে পারে (যেমন আইপিসি ধারা ৩৫৪সি)। কেউ কেউ বিশ্বাস করেন যে দম্পতির সতর্ক থাকা উচিত ছিল, কিন্তু রেকর্ডিং এবং শেয়ার করা অনৈতিক। হোটেলের দায়িত্বও প্রশ্নের মুখে, যেমন পর্দার ব্যবস্থা। এই ঘটনা ডিজিটাল যুগে গোপনীয়তাকে চ্যালেঞ্জ জানিয়েছে।”
এই ঘটনাটি একদিকে যেমন যুগলের অসাবধানতাকে তুলে ধরেছে, তেমনি অন্যদিকে ব্যক্তিগত গোপনীয়তা লঙ্ঘনের মতো গুরুতর বিষয়টিকে জনসমক্ষে এনেছে। সোশ্যাল মিডিয়ার যুগে মানুষের ব্যক্তিগত জীবন কতটা সুরক্ষিত, এবং নৈতিকতার সীমারেখা কোথায়, এই ঘটনা আবারও সেই প্রশ্নগুলিকে সামনে নিয়ে এসেছে। প্রশাসন এই বিষয়ে কী পদক্ষেপ নেয়, এখন সেটাই দেখার।