
ট্র্যাফিক নিয়ম ভাঙার ছবি তোলার ‘অপরাধে’ এক সিভিক ভলান্টিয়ারকে রাস্তায় ফেলে বেধড়ক মারধর করার অভিযোগ উঠল এক স্কুলশিক্ষকের বিরুদ্ধে। শুক্রবার বীরভূমের সিউড়ি বাসস্ট্যান্ডে জনবহুল এলাকায় ঘটনাটি ঘটে। প্রকাশ্যে এমন কাণ্ডকে ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়ায়। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকেই অভিযুক্ত শিক্ষককে গ্রেপ্তার করেছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, অভিযুক্ত শিক্ষক হেমন্ত মণ্ডল কড়িধ্যা বিদ্যানিকেতনের ইতিহাসের শিক্ষক। তিনি বাইকে করেই স্কুলে যাতায়াত করেন। অভিযোগ, দু’দিন আগে তিনি হেলমেট ছাড়াই বাইক চালাচ্ছিলেন। সেই সময় কর্তব্যরত ওই সিভিক ভলান্টিয়ার ট্র্যাফিক আইন ভাঙার ছবি হিসেবে মোবাইল ফোনে তাঁর একটি ছবি তুলে রেখেছিলেন। মনে করা হচ্ছে, সেই ঘটনার রাগই পুষে রেখেছিলেন শিক্ষক।
এদিন ওই সিভিক ভলান্টিয়ারের সিউড়ি বাসস্ট্যান্ডে ডিউটি ছিল। স্কুলে যাওয়ার পথে সিভিক ভলান্টিয়ারকে দেখে হেমন্ত মণ্ডল বাইক থামিয়ে দেন। তিনি নিজেও হেলমেট পরেই ছিলেন এদিন। সিভিক ভলান্টিয়ারকে দেখেই তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন এবং গালিগালাজ শুরু করেন। আঙুল উঁচিয়ে আগের দিন ছবি তোলার কারণ জানতে চান। দু’জনের মধ্যে বচসা শুরু হয়।
বচসা চলাকালীনই বাসস্ট্যান্ডের মতো জনবহুল এলাকায় লোকজন জড়ো হয়ে যায়। অভিযোগ, আচমকাই শিক্ষক হেমন্ত মণ্ডল ওই সিভিক ভলান্টিয়ারের উপর ঝাঁপিয়ে পড়েন। ভলান্টিয়ারের চুলের মুঠি ধরে তাঁকে রাস্তায় ফেলে বেধড়ক মারধর করতে শুরু করেন তিনি।
বাসস্ট্যান্ডে উপস্থিত অন্যান্য লোকজন পুলিশে খবর দেন। খবর পেয়েই পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছয় এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। কর্তব্যরত অবস্থায় এক সিভিক ভলান্টিয়ারকে মারধরের অভিযোগে শিক্ষক হেমন্ত মণ্ডলকে ঘটনাস্থল থেকেই গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সিউড়ির ডিএসপি-ট্র্যাফিক কুণাল মুখোপাধ্যায়।
স্থানীয়দের দাবি, অভিযুক্ত শিক্ষক হেমন্ত মণ্ডলের বিরুদ্ধে এর আগেও বিভিন্ন অভিযোগ উঠেছে। কড়িধ্যা বিদ্যানিকেতনের প্রধান শিক্ষিকা সুজাতা সাহা হেমন্তবাবুর এমন আচরণে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, “স্কুলেও একবার শিক্ষক-শিক্ষিকাদের মারধর করতে গিয়েছিলেন। মাঝেমধ্যেই কামাই করেন, কিন্তু হাজিরা খাতায় জোর করে সই করেন।” যদিও এই অভিযোগ নিয়ে অন্য কোনও শিক্ষকের কোনও প্রতিক্রিয়া জানা যায়নি।
এই ঘটনা প্রসঙ্গে বীরভূম জেলা পুলিশ সুপার আমনদীপ বলেন, “ধৃতের বিরুদ্ধে আইনত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” একজন শিক্ষকের বিরুদ্ধে ট্র্যাফিক আইন প্রয়োগকারী এক কর্মীকে মারধরের অভিযোগ এবং তাঁর পূর্বের রেকর্ড নিয়ে ওঠা দাবিগুলি শিক্ষার পরিবেশ ও সমাজে শৃঙ্খলার প্রশ্ন তুলে দিয়েছে।