হেডিংলি টেস্ট, ইংল্যান্ডের দাপুটে ব্যাটিং, ভারত হারের শঙ্কায়; বৃষ্টির ভরসায় টিম ইন্ডিয়া

হেডিংলি টেস্টের পঞ্চম দিনে ভারত বনাম ইংল্যান্ডের ম্যাচে টান টান উত্তেজনা। ২৫৪ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে প্রথম সেশন শেষে ইংল্যান্ড কোনো উইকেট না হারিয়ে ১১৭ রান সংগ্রহ করেছে। বেন ডাকেট ও জাক ক্রলির অনবদ্য ব্যাটিং ভারতীয় শিবিরকে হারের মুখে ঠেলে দিয়েছে।

২৫৪ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ইংল্যান্ডের দুই ওপেনার বেন ডাকেট (৬৪*) এবং জাক ক্রলি (৪২*) পঞ্চম দিনের প্রথম সেশনে ভারতীয় বোলারদের উপর সম্পূর্ণ দাপট দেখিয়েছেন। ৮৯ বলে ৬৪ রান করে ডাকেট দ্বিতীয় ইনিংসেও অর্ধশতরান পূর্ণ করেছেন। অন্যদিকে, ৯৩ বলে ৪২ রান করে ক্রলিও অবিচল রয়েছেন। ভারতের কোনো বোলারই এখনও পর্যন্ত জুটি ভাঙতে পারেননি বা ব্যাটসম্যানদের উপর চাপ সৃষ্টি করতে পারেননি। যশপ্রীত বুমরা-সহ অন্যান্য পেসাররা (মহম্মদ সিরাজ, প্রসিদ্ধ কৃষ্ণ, শার্দুল ঠাকুর) প্রথম ইনিংসের মতো দ্বিতীয় ইনিংসেও ব্যর্থ।

ভারতীয় অধিনায়ক শুভমান গিল আশা করেছিলেন পঞ্চম দিনে বোলাররা ঘুরে দাঁড়াবেন, কিন্তু সেই আশার প্রতিফলন দেখা যায়নি। উইকেটের অভাবে রানের গতি কমানো যাচ্ছে না, যা ভারতীয় দলের হারের আশঙ্কাকে আরও বাড়িয়ে তুলেছে। বুমরার মতো বোলার যদি দ্রুত উইকেট তুলে নিতে না পারেন, তাহলে ইংল্যান্ডের জয় সময়ের অপেক্ষা বলেই মনে হচ্ছে।

আবহাওয়ার পূর্বাভাস অনুযায়ী, লিডসে স্থানীয় সময় সকালে এবং দুপুরে বৃষ্টি হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু এখনও পর্যন্ত বৃষ্টির কারণে খেলায় কোনো বিঘ্ন ঘটেনি। ভারতীয় দল এখন বৃষ্টির দিকেই তাকিয়ে, কারণ বৃষ্টি হলে ইংল্যান্ডের ওপেনারদের ছন্দ নষ্ট হতে পারে এবং মেঘলা পরিবেশে ভারতীয় পেসাররা সুবিধা পেতে পারেন।

এই মুহূর্তে ম্যাচের রাশ সম্পূর্ণভাবে ইংল্যান্ডের হাতে। ভারতের বোলারদের দ্রুত উইকেট তুলে নেওয়া ছাড়া আর কোনো বিকল্প নেই। অন্যথায়, এই টেস্টে ভারতের পরাজয় প্রায় নিশ্চিত।

বিশ্লেষণমূলক ক্রীড়া সংবাদ প্রতিবেদন (আরও গভীর এবং মতামতভিত্তিক)

হেডিংলিতে হতাশাজনক চিত্র: টিম ইন্ডিয়ার বোলিং ব্যর্থতা ও হারের দ্বারপ্রান্তে, ভাগ্যের খেলা বৃষ্টি কি ত্রাতা হবে?

হেডিংলি টেস্টের পঞ্চম দিনে ভারত বনাম ইংল্যান্ডের ম্যাচ একতরফা হওয়ার পথে। ২৫৪ রানের আপাত সহজ লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ইংল্যান্ড হাতে দশ উইকেট রেখে মাত্র দুই সেশনে ২৫৪ রান তোলার কাছাকাছি। বেন ডাকেট ও জাক ক্রলির পার্টনারশিপ ভারতীয় বোলিং আক্রমণের দুর্বলতা স্পষ্ট করে দিয়েছে, যা টিম ইন্ডিয়াকে এক গভীর সংকটের মুখে ঠেলে দিয়েছে।

ক্রিকেটকে অনিশ্চয়তার খেলা বলা হলেও, হেডিংলির পঞ্চম দিনের প্রথম সেশন দেখে মনে হচ্ছে, ম্যাচের ফলাফল প্রায় নিশ্চিত। ইংল্যান্ডের দুই ওপেনার, বেন ডাকেট এবং জাক ক্রলি, ভারতীয় বোলারদের বিরুদ্ধে সম্পূর্ণ ছড়ি ঘুরিয়েছেন। ডাকেট দ্বিতীয় ইনিংসেও তার অর্ধশতরানের ফর্ম ধরে রেখেছেন, যা ভারতীয় বোলারদের মানসিকতা নড়বড়ে করে দিয়েছে।

ভারতের মূল সমস্যা তাদের বোলিং আক্রমণের গভীরতা এবং ধার। জসপ্রীত বুমরা ছাড়া মহম্মদ সিরাজ, প্রসিদ্ধ কৃষ্ণ এবং শার্দুল ঠাকুর প্রথম ইনিংসের মতোই নিষ্প্রভ। অধিনায়ক শুভমান গিলের আশা ছিল, পঞ্চম দিনের সকালে বোলাররা নতুন উদ্যমে ঝাঁপাবেন, কিন্তু বাস্তবে দেখা গেল তার সম্পূর্ণ বিপরীত চিত্র। ক্রমাগত রান দিয়ে যাওয়া এবং উইকেট না পাওয়ার ফলে ইংল্যান্ডের ব্যাটসম্যানদের উপর কোনো চাপই তৈরি হচ্ছে না।

এই পরিস্থিতিতে ভারতীয় দলের জন্য একমাত্র ভরসা এখন লিডসের আবহাওয়া। বৃষ্টির পূর্বাভাস ছিল, কিন্তু এখনো পর্যন্ত সেই পূর্বাভাস কাজে আসেনি। যদি বৃষ্টি আসে এবং দীর্ঘক্ষণ খেলা বন্ধ থাকে, তাহলে ইংল্যান্ডের ব্যাটিংয়ের ছন্দ নষ্ট হতে পারে। মেঘলা পরিবেশে পেসাররা কিছুটা সুবিধা পেলেও পেতে পারেন। তবে, এটা স্রেফ এক ক্ষীণ আশা। ক্রিকেটে “যদি” এবং “কিন্তু” প্রায়শই কাজ করে না।

ম্যাচের টার্নিং পয়েন্ট ও কৌশলগত ব্যর্থতা:
ভারতের জন্য এই ম্যাচটি এক গভীর পর্যালোচনার জন্ম দেবে। প্রথম ইনিংসে বড় রান তোলার পরও কেন বোলাররা তা রক্ষা করতে পারলেন না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠবে। দ্বিতীয় ইনিংসে ২৫৪ রানের লক্ষ্য সেট করার পরও কেন দলের মধ্যে আত্মবিশ্বাস ফিরল না, সেটাও ভাবনার বিষয়। বোলারদের সঠিক ব্যবহার এবং বিকল্প পরিকল্পনার অভাবও স্পষ্ট। শুধু বুমরার উপর নির্ভর করে একটি টেস্ট ম্যাচ জেতা অসম্ভব, যখন বাকি বোলাররা নিজেদের সেরা ছন্দে নেই।

হেডিংলিতে ভারতের পরাজয় এখন প্রায় সময়ের ব্যাপার। এই হার কেবল একটি ম্যাচের পরাজয় নয়, এটি ভারতীয় বোলিং আক্রমণের গভীর দুর্বলতা এবং সামগ্রিক পরিকল্পনার অভাবকে তুলে ধরেছে। বৃষ্টির অলৌকিক হস্তক্ষেপ না হলে, ইংল্যান্ড এই ম্যাচ সহজেই জিতে নেবে, এবং ভারতীয় শিবিরকে হারের তিক্ত স্বাদ নিয়ে মাঠ ছাড়তে হবে।

Related Posts

© 2025 Tech Informetix - WordPress Theme by WPEnjoy