মধ্যপ্রাচ্যের দেশ ইয়েমেনের বিদ্রোহী গোষ্ঠী হুথিদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র যুদ্ধে জড়াতে চায় না বলে জানিয়েছেন হোয়াইট হাউজের জাতীয় নিরাপত্তা মুখপাত্র জন কিরবি।
মঙ্গলবার (১৬ জানুয়ারি) এক সংবাদসম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি।
কিরবি বলেছেন, আমরা সংঘাত প্রসারিত করতে চাইছি না। হুথিদের এমন ইচ্ছা আছে, তবে তাদের কাছে এখনো সঠিক পথ বেছে নেয়ার সময় রয়েছে। আর তা হচ্ছে বেপরোয়া হামলা বন্ধ করা।
গত বছরের ৭ অক্টোবর থেকে হামাসের হামলার প্রতিবাদে ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েল। এরপর হামাসকে সমর্থন জানিয়ে নভেম্বর থেকে লোহিত সাগরে ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্কিত জাহাজগুলোতে হামলা চালিয়ে আসছে ইরান-সমর্থিত ইয়েমেনের বিদ্রোহী গোষ্ঠী হুথি। সবশেষ মঙ্গলবার (১৬ জানুয়ারি) ইসরাইলগামী মাল্টার পতাকাবাহী একটি জাহাজে হামলা চালিয়েছে তারা। এতে কেউ হতাহত না হলেও জাহাজটির বেশ ক্ষতি হয়।
এছাড়া হুথিদের লক্ষ্য করে মঙ্গলবার ফের হামলা চালিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। নাম গোপন রাখার শর্তে মার্কিন কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, হামলায় চারটি জাহাজ-বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করা হয়েছে।
এর আগে বৃহস্পতিবার (১১ জানুয়ারি) ও শুক্রবার (১২ জানুয়ারি) রাজধানী সানাসহ ইয়েমেনের বিভিন্ন জায়গায় যৌথ হামলা চালায় যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য। তবে হুথি জানিয়েছে, যতদিন গাজায় ইসরায়েলের হামলা চলবে ততদিন তারাও হামলা চালিয়ে যাবে।
এদিকে, বাণিজ্যিক জাহাজ লক্ষ্য করে হুথিদের এসব হামলার কারণে আন্তর্জাতিক বাজারে এর অনেক প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। লোহিত সাগর থেকে মিশরের সুয়েজ খাল হয়ে যেসব জাহাজ ইউরোপে যেত, সেগুলো এখন আফ্রিকা ঘুরে যেতে হচ্ছে। এতে করে আগের তুলনায় জাহাজগুলোকে আরো ১০দিন বেশি চলতে হচ্ছে। এমনকি, এশিয়া থেকে ইউরোপ যেতে ৯ লাখ ১০ হাজার ডলারের অতিরিক্ত জ্বালানিও লাগছে। ফলে জিনিসপত্রের দামও বৃদ্ধি পাচ্ছে।
হুথিরা মূলত ইয়েমেনের শিয়া মুসলিম সংখ্যালঘু জাইদি নামের উপ-সম্প্রদায়ের সশস্ত্র গোষ্ঠী। বেশিরভাগ ইয়েমেনি হুথিদের নিয়ন্ত্রণাধীন এলাকায় বসবাস করে। পাশাপাশি সানা এবং ইয়েমেনের উত্তরে হুথিরা লোহিত সাগরের উপকূলরেখাও নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। ইসরায়েল-হামাস সংঘাতের মধ্যেই হুথিদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা জোটের হামলা-পাল্টা হামলার ঘটনায় বিশ্বজুড়ে উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে।
সূত্র: রয়টার্স