
বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গণহত্যার অপরাধে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দোষী সাব্যস্ত করেছে। একই সঙ্গে, তাঁর পাশাপাশি প্রাক্তন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান এবং প্রাক্তন পুলিশ কর্তা চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুনকেও দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে। এই তিনজনের মধ্যে একমাত্র মামুনই বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন। এই রায়কে কেন্দ্র করে বাংলাদেশে তীব্র উত্তেজনা বিরাজ করছে।
আদালতে বোমা হামলা ও সরাসরি সম্প্রচার:
শুনানি শুরুর আগে আদালত প্রাঙ্গণে তিনটি বোমা ছোড়ার অভিযোগ উঠেছে, যার মধ্যে দুটি বিস্ফোরিত হয়। এই ঘটনাটি আজকের শুনানির উত্তেজনা আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। পিটিআই জানিয়েছে, সকাল সাড়ে ৯টায় শুনানি শুরু হওয়ার কথা ছিল। তার কিছুক্ষণ আগে অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিরা আদালত চত্বরে প্রবেশপথ লক্ষ্য করে তিনটি বোমা ছোড়ে। তৃতীয় বোমাটি ফাটেনি। কারা এই হামলার পেছনে রয়েছে, তা জানতে পুলিশ সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখছে। বোমা বিস্ফোরণের জেরে নির্ধারিত সময়ের কিছুটা দেরিতে শুনানি শুরু হয়।
এদিনের শুনানি ঘিরে আরও দুটি উল্লেখযোগ্য ঘটনা ঘটেছে। প্রথমত, বাংলাদেশের বিচার ব্যবস্থার ইতিহাসে এই প্রথম কোনো শুনানি সরাসরি সম্প্রচার করা হলো। এই পদক্ষেপ স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে নেওয়া হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।
অভিযোগ ও রায়ের প্রেক্ষাপট:
২০২৪ সালের জুন-জুলাই মাসে বাংলাদেশে ‘বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন’ শুরু হয়েছিল, যা দ্রুত গণঅভ্যুত্থানের রূপ নেয়। অভিযোগ ওঠে, তৎকালীন হাসিনা সরকার আন্দোলন দমনে একাধিক মানবতাবিরোধী পদক্ষেপ নিয়েছিল। সেই সূত্রেই গণহত্যাসহ আরও একাধিক ঘটনায় হাসিনা ও তার সরকারের অন্যান্য কর্মকর্তারা অভিযুক্ত হয়েছিলেন। আজ তাঁদের দোষী সাব্যস্ত করল আদালত। দেশ ছাড়ার প্রায় ১০ মাস পর এই প্রথম কোনো মামলায় শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে দোষ প্রমাণিত হলো।
এই রায় বাংলাদেশের রাজনীতিতে এক নতুন মোড় আনল এবং এর প্রতিক্রিয়া দেশের অভ্যন্তরে ও আন্তর্জাতিক মহলে কী হয়, তা এখন দেখার বিষয়।
Sources